বাসে অগ্নিসংযোগের সময় ধাওয়া খেয়ে তুরাগে ডুবে যুবকের মৃত্যু
Published: 14th, November 2025 GMT
রাজধানীতে বাসে অগ্নিসংযোগের সময় জনতার ধাওয়া খেয়ে তুরাগ নদীতে ডুবে মারা গেছেন এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় একজন পালিয়ে গেছে। তবে অপর একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) গভীর রাতে ডিএমপি গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর শাহআলী থানার উত্তর নবাবেরবাগ সোহেল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের পশ্চিম পার্শ্বে পাকা রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি ফাঁকা বাসে কয়েকজন যুবক প্লাস্টিকের বোতলে করে কেরোসিন ছিটিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। সেই ঘটনা তারা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখছিলো।
বিষয়টি আশপাশের লোকজনের নজরে এলে তারা দুষ্কৃতকারীদের ধাওয়া করে একজনকে হাতেনাতে আটক করে। এসময় তাদের একজন প্রাণভয়ে নিকটবর্তী তুরাগ নদীতে ঝাঁপ দেয় এবং অন্য একজন দৌড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। সাঁতার না জানায় নদীতে ঝাঁপ দেওয়া দুষ্কৃতকারী পানিতে ডুবে যায়।
পরবর্তীতে উপস্থিত লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকনতাকে মৃত ঘোষণা করেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে স্থানীয় লোকজন আটক দুষ্কৃতকারীকে পুলিশে সোপর্দ করে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বাসে অগ্নিসংযোগের এই ঘটনায় জনতার হাতে ধাওয়া খেয়ে পানিতে ডুবে নিহত দুষ্কৃতকারীর নাম সাইয়াফ (১৮) এবং গ্রেপ্তারকৃত অপরজন রুদ্র মোহাম্মদ নাহিয়ান আমির সানি (১৮)।
নাশকতামূলক এই ঘটনায় জড়িত পলাতক অপর দুষ্কৃতকারীকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকা/এমআর/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের বিজয়ের এক বছরের মধ্যেই সবখানে প্রতিরোধ
এক পার্কিং এলাকায় মুখোশ পরা আইসিই সদস্যদের গালাগাল করছেন যোগব্যায়ামের পোশাক পরা একজন শ্বেতাঙ্গ নারী। একজন পোপ বারবার অভিবাসীদের পক্ষে কথা বলছেন। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন, অঙ্গরাজ্য, নগর ও নাগরিকদের করা মামলার ঝড় উঠেছে। কঠোর ভর্ৎসনা করে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে একের পর এক রায় দিচ্ছেন বিচারকেরা। একজন সিনেটর টানা ২৫ ঘণ্টা ধরে অবিরাম কথা বলছেন। আরেকজন তাঁর অপহৃত সংবিধানের কী হয়েছে, তা জানার জন্য এল সালভাদরে উড়ে যাচ্ছেন।
১৮ অক্টোবর ডেমোক্র্যাটদের বড় বড় নীল শহরের পাশাপাশি রিপাবলিকানদের ছোট ছোট লাল শহরেও সব মিলিয়ে ৭০ লাখের মতো মানুষ ‘রাজা চাই না’ আন্দোলনে শরিক হন। রচিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিক্ষোভের সবচেয়ে বড় দিন।
চলতি বছরে টেসলার শোরুমগুলোর সামনে হওয়া বিক্ষোভ ব্র্যান্ডটির এমন ক্ষতি করে যে এর বৈশ্বিক বিক্রি কমে যায় এবং সিইও ইলন মাস্ক তাঁর সরকারি কর্মদক্ষতা বিভাগ (ডিইওজি) থেকে নেওয়া চাকরিচ্যুতির কঠোর প্রকল্প থেকে পিছু হটেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীরা কখনো কখনো কেবল আইন, সত্য ও তথ্য মেনে চলার মাধ্যমেই প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। কখনো তাঁরা হুইসেলব্লোয়ার হিসেবে সত্য ফাঁস করছেন, কখনো প্রতিবাদে মুখর হচ্ছেন। যেমন গত আগস্টে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) কর্মীরা ওয়াকআউট করে জ্যেষ্ঠ কর্মীদের বিক্ষোভে সংহতি জানান। ওই জ্যেষ্ঠ কর্মীরা স্বাস্থ্য ও মানবসেবামন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের টিকাবিরোধী নীতির প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছিলেন।
অভিবাসী, শরণার্থী এবং চেহারার কারণে রাস্তায়, শিকাগোর পাড়া-মহল্লায়, হোম ডিপো পার্কিং লটে, স্কুলের আশপাশে ও আদালতে হেনস্তার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে তাঁদেরই জন্য অসাধারণ সংহতি গড়ে উঠছে।
ডেমোক্রেটিক পার্টির রাজ্য অ্যাটর্নিরা স্বতন্ত্র ও যৌথভাবে একের পর এক মামলা করছেন। ইলিনয় ও ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নররা লাগাতার সমালোচনায় ট্রাম্পকে ঝাঁজরা করে দিচ্ছেন। কংগ্রেসে বিল আটকে যাওয়ায় সৃষ্ট অচলাবস্থা নিয়ে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েমের দলীয় প্রচারণামূলক ভিডিও চালাতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে বিমানবন্দরগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের সাতটি প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাসংক্রান্ত স্বাধীনতায় ছাড় দেওয়ার শর্তে অর্থনৈতিক প্রণোদনা পাওয়ার চুক্তি করতে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে।
গত ২০ জানুয়ারি থেকে আমরা ট্রাম্প প্রশাসন এবং এর নীতির বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধ দেখছি, এগুলো তারই অংশ। এসব নিয়ে নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে জরিপ হওয়া প্রয়োজন।
যখন কেউ আমাকে বলেন ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধই নেই, আমি ভাবি তারা কি এক ধাক্কায় সরকার ফেলে দেওয়ার মতো গেরিলা বিপ্লবের আশা করছে, নাকি পরিস্থিতির দিকে যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছে না। কারণ, বাস্তবে নানা ধরনের ব্যাপক প্রতিরোধ ও বিরোধিতা রয়েছে, এগুলো বড় ধরনের প্রভাবও ফেলেছে। কখন এটি যথেষ্ট হবে, সেটি একটি প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর তখনই দেওয়া যাবে, যখন এসবের ইতি হবে, যদি আদৌ তা হয়। এরপর কী ঘটে, সেটাও দেখতে হবে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রত্যাশা থেকেও বোধ হয় নিরাশা জন্মেছে। মানুষ ভেবেছে, স্বভাবতই একটা বদলের সূচনা হবে। কিন্তু ইতিহাসের মোড়বদল আর গতি যে কখনো অনুমান করা যায় না, সেই বাস্তবতার কথা মানুষ মাথায় রাখেনি।
প্রতিরোধ গড়ে উঠছে সর্বত্র, সব এলাকায় এবং সব ধরনের ভোটারদের মধ্যে। আছে নাগরিক সমাজ ও সরকারি কর্মচারীরা। রয়েছে মানবাধিকার, জলবায়ু ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা গোষ্ঠীগুলো, যারা নির্বাচনের আগেই আটঘাট বেঁধে রেখেছিল আর নতুন প্রশাসন আসার পরই মাঠে নেমে পড়ে। আরও আছে ধর্মীয় নেতা ও প্রতিষ্ঠান, সব স্তরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সামরিক কর্মকর্তা, আইনজীবী ও বিচারক। আরও আছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, গ্রন্থাগারিক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, সম্পাদক, প্রকাশক, শিল্প-সংস্কৃতির জগতের মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গত ১৮ অক্টোবরের বিক্ষোভের একটি চিত্র। ছবিটি নিউইয়র্ক থেকে তোলা