ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির লালকেল্লার কাছে গাড়ি বিস্ফোরণের তিন দিন পর তদন্তকারীরা বলছেন, এ ঘটনার সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযানে গ্রেপ্তার সাত ব্যক্তির কোনো যোগসাজশ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।
তদন্তকারীরা বিবিসিকে বলেছেন, সম্প্রতি দিল্লির উপকণ্ঠে ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরকের সঙ্গেও এ বিস্ফোরণের কোনো সংযোগ রয়েছে কি না, গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

গত বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক প্রস্তাবে দিল্লির ঘটনাটিকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির হাতে সংঘটিত একটি নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথম থেকেই এ ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, চক্রান্তকারীদের কেউ রেহাই পাবেন না, সবাইকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। একই সুর শোনা গেছে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কণ্ঠে।

অমিত শাহ বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেক অপরাধীকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে’ তিনি সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ বলেছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বেআইনি কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ আইন, বিস্ফোরক আইন ও ফৌজদারি আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা হয়েছে। তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) হাতে।

এনআইএ বা দিল্লি পুলিশ—কেউই এখনো বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করেনি কিংবা বিবৃতি দেয়নি। এরই মধ্যে গণমাধ্যমে সূত্রের বরাতে বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, যেগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করা যায়নি। ঘটনাটি নানা প্রশ্নও উঠছে।

তবে তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিস্ফোরণের সঙ্গে কাশ্মীর পুলিশের সাম্প্রতিক গ্রেপ্তার অভিযান এবং ফরিদাবাদে অস্ত্র-বিস্ফোরক উদ্ধারের কোনো যোগসূত্র আছে কি না, সেটাই এখন মূল প্রশ্ন।

গত সোমবার সন্ধ্যায় গাড়ি বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে কাশ্মীর পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, কাশ্মীর, উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানা থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন চিকিৎসকও রয়েছেন।

পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুটি স্বয়ংক্রিয় রাইফেলসহ বিপুল অস্ত্র ও ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরক তৈরির উপাদান।

পুলিশ এ ঘটনাকে ‘হোয়াইট কলার টেরর নেটওয়ার্ক’-এর অংশ হিসেবে উল্লেখ করে তদন্তের ধারাবাহিকতায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে।
এনআইএ বিবিসিকে বলেছে, তারা সবে দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণের নথি গ্রহণ করেছে। ‘বিপুল পরিমাণ নথিপত্র’ পরীক্ষা করা হচ্ছে। এখনই খুব বেশি কিছু জানানো সম্ভব নয়।

আরও পড়ুনদিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে অতীতের মতো কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে কেন দায়ী করছে না মোদি সরকার১১ নভেম্বর ২০২৫

কাশ্মীর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সঙ্গে বিস্ফোরিত গাড়ির সম্ভাব্য চালকের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা ভালোভাবে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সাদা রঙের গাড়িটি বিস্ফোরিত হওয়ার আগে কয়েক ঘণ্টা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে এবং ঘটনাস্থলের কাছে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিল। তবে পুলিশ বা এনআইএ এখনো এটি নিশ্চিত করেনি।

সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে সংঘটিত এ বিস্ফোরণে একাধিক গাড়িতে আগুন ধরে যায়। পরে সাতটি অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করে।

আরও পড়ুনদিল্লিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় গাড়ির মূল মালিককে আটক করেছে পুলিশ১১ নভেম্বর ২০২৫

তবে গাড়িটি কার নামে নিবন্ধিত ছিল, কীভাবে বিস্ফোরক ভরা হলো—এ সম্পর্কে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি।

বিস্ফোরণের পর থেকে লালকেল্লা বন্ধ রাখা হয়েছে। তদন্তের কারণে আরও কিছুদিন এ ঐতিহাসিক স্থাপনাটি বন্ধ থাকতে পারে।

আরও পড়ুনদিল্লিতে গাড়িতে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩১১ নভেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব স ফ রক এ ঘটন তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণে কাশ্মীরে গ্রেপ্তারকৃতদের যোগসাজশ খতিয়ে দেখছে পুলিশ

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির লালকেল্লার কাছে গাড়ি বিস্ফোরণের তিন দিন পর তদন্তকারীরা বলছেন, এ ঘটনার সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সাম্প্রতিক অভিযানে গ্রেপ্তার সাত ব্যক্তির কোনো যোগসাজশ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।
তদন্তকারীরা বিবিসিকে বলেছেন, সম্প্রতি দিল্লির উপকণ্ঠে ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরকের সঙ্গেও এ বিস্ফোরণের কোনো সংযোগ রয়েছে কি না, গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

গত বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক প্রস্তাবে দিল্লির ঘটনাটিকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির হাতে সংঘটিত একটি নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথম থেকেই এ ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, চক্রান্তকারীদের কেউ রেহাই পাবেন না, সবাইকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। একই সুর শোনা গেছে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কণ্ঠে।

অমিত শাহ বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেক অপরাধীকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে’ তিনি সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ বলেছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বেআইনি কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ আইন, বিস্ফোরক আইন ও ফৌজদারি আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা হয়েছে। তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) হাতে।

এনআইএ বা দিল্লি পুলিশ—কেউই এখনো বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করেনি কিংবা বিবৃতি দেয়নি। এরই মধ্যে গণমাধ্যমে সূত্রের বরাতে বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, যেগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করা যায়নি। ঘটনাটি নানা প্রশ্নও উঠছে।

তবে তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিস্ফোরণের সঙ্গে কাশ্মীর পুলিশের সাম্প্রতিক গ্রেপ্তার অভিযান এবং ফরিদাবাদে অস্ত্র-বিস্ফোরক উদ্ধারের কোনো যোগসূত্র আছে কি না, সেটাই এখন মূল প্রশ্ন।

গত সোমবার সন্ধ্যায় গাড়ি বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে কাশ্মীর পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, কাশ্মীর, উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানা থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন চিকিৎসকও রয়েছেন।

পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুটি স্বয়ংক্রিয় রাইফেলসহ বিপুল অস্ত্র ও ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরক তৈরির উপাদান।

পুলিশ এ ঘটনাকে ‘হোয়াইট কলার টেরর নেটওয়ার্ক’-এর অংশ হিসেবে উল্লেখ করে তদন্তের ধারাবাহিকতায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে।
এনআইএ বিবিসিকে বলেছে, তারা সবে দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণের নথি গ্রহণ করেছে। ‘বিপুল পরিমাণ নথিপত্র’ পরীক্ষা করা হচ্ছে। এখনই খুব বেশি কিছু জানানো সম্ভব নয়।

আরও পড়ুনদিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে অতীতের মতো কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে কেন দায়ী করছে না মোদি সরকার১১ নভেম্বর ২০২৫

কাশ্মীর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সঙ্গে বিস্ফোরিত গাড়ির সম্ভাব্য চালকের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা ভালোভাবে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সাদা রঙের গাড়িটি বিস্ফোরিত হওয়ার আগে কয়েক ঘণ্টা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে এবং ঘটনাস্থলের কাছে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিল। তবে পুলিশ বা এনআইএ এখনো এটি নিশ্চিত করেনি।

সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে সংঘটিত এ বিস্ফোরণে একাধিক গাড়িতে আগুন ধরে যায়। পরে সাতটি অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করে।

আরও পড়ুনদিল্লিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় গাড়ির মূল মালিককে আটক করেছে পুলিশ১১ নভেম্বর ২০২৫

তবে গাড়িটি কার নামে নিবন্ধিত ছিল, কীভাবে বিস্ফোরক ভরা হলো—এ সম্পর্কে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি।

বিস্ফোরণের পর থেকে লালকেল্লা বন্ধ রাখা হয়েছে। তদন্তের কারণে আরও কিছুদিন এ ঐতিহাসিক স্থাপনাটি বন্ধ থাকতে পারে।

আরও পড়ুনদিল্লিতে গাড়িতে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩১১ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ