ঠিকায় কাজ করা পোশাক কারখানাও প্রণোদনা পাবে
Published: 14th, November 2025 GMT
ঠিকায় কাজ করা বা সাব–কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে উৎপাদিত ও রপ্তানি করা তৈরি পোশাক ও বস্ত্রজাত পণ্যের বিপরীতে রপ্তানিতে নগদ সহায়তা পাবে সংশ্লিষ্ট কারখানা। তবে উৎপাদনে জড়িত নয় এমন ট্রেডার বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এই সুবিধা পাবে না। শুধু নিজস্ব কারখানা আছে এমন প্রতিষ্ঠান এই সুবিধা পাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত বুধবার জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সরকারের সিদ্ধান্তের আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাব-কন্ট্রাক্টিং প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ‘তৈরি পোশাক শিল্পে সাব-কন্ট্রাক্টিং গাইডলাইন-২০১৯’ এবং ‘সরাসরি রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠান (ওয়্যারহাউস পদ্ধতির আওতায় সাময়িক আমদানি, ওয়্যারহাউস পরিচালনা ও কার্যপদ্ধতি) বিধিমালা, ২০২৪’ অনুসরণ করতে হবে।
রপ্তানিকারকেরা জানিয়েছেন, সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্তে ‘ফাস্ট সেলস ফ্রেমওয়ার্ক’–এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি সহজ করবে। এই প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কম শুল্কে পোশাক রপ্তানি হবে।
নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, কোনো কারখানা মালিক বেশি ক্রয়াদেশ পেলে অন্য কারখানা থেকে ঠিকায় পোশাক তৈরি করে। এটা নিয়মিত চর্চা। আগে এসব ক্ষেত্রে প্রণোদনা মিলত না। এখন থেকে মিলবে। আমাদের রপ্তানির ২-৩ শতাংশ এমন চুক্তিতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করলে শুল্কছাড়ও পাওয়া যাবে।
জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের কারণে সাব-কন্ট্রাক্ট কারখানার প্রণোদনার বিষয়টি গতি পায়। তবে প্রক্রিয়াটি শুরু হয় গত বছরের অক্টোবরে। একটি মূল কোম্পানির অধীন ভিন্ন ভিন্ন কারখানায় বা কোম্পানিতে সাব-কন্ট্রাক্টিং প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত ও রপ্তানি করা তৈরি পোশাক বা বস্ত্রসামগ্রী রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনা করতে ট্যারিফ কমিশনকে সমীক্ষা করতে বলা হয়।
গত মে মাসে ট্যারিফ কমিশন সমীক্ষা প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। সেখানে বলা হয়, সাব-কন্ট্রাক্টিং প্রক্রিয়া একই মালিকানাধীন ভিন্ন কোম্পানিতে যেমন হতে পারে, তেমনি ভিন্ন ভিন্ন মালিকানাধীন কোম্পানির মাধ্যমেও হতে পারে। তাই এই প্রক্রিয়ায় নগদ সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে একই মালিকানাধীন ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির পরিবর্তে ভিন্ন মালিকানার মধ্যেও যেন সাব-কন্ট্রাক্টিং হয়, সে সুযোগ রেখে নগদ সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখলে তা সর্বজনীন ও বস্তুনিষ্ঠ হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ফাস্ট সেল ব্যবস্থায় ক্রয়াদেশ দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এ ব্যবস্থায় আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকের বাইরে তৃতীয় পক্ষ উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত থাকে। ফাস্ট সেল ব্যবস্থা অনুযায়ী, প্রথম বিক্রেতার মাধ্যমে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে মার্কিন ক্রেতার মূল শর্ত হচ্ছে, ক্রয়াদেশ গ্রহণকারী কখনোই উৎপাদনকারী হতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে ক্রেতার মনোনীত কারখানা থেকে ক্রয়াদেশ গ্রহণকারীর পণ্য নিতে হবে। অর্থাৎ উৎপাদনকারী ও ক্রয়াদেশ গ্রহণকারী রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান পৃথক হতে হবে।
ফাস্ট সেলের ক্ষেত্রে পণ্য আমদানিকারক দেশ (মূলত যুক্তরাষ্ট্র) প্রথম বিক্রীত মূল্যের ওপর শুল্ক প্রদান করে। এতে আমদানিকারক দেশে শুল্ককরের ভার কমে যায়। উদাহরণস্বরূপ, কোনো ক্রেতা একটি নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য একটি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে (রপ্তানিকারক) ১০০ ডলারের ক্রয়াদেশ দিয়েছে। সেই প্রতিষ্ঠান পণ্য উৎপাদনের জন্য ক্রেতার মনোনীত কোনো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে সাব-কন্ট্রাক্ট দেয়। প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ইন্টার বন্ড ট্রান্সফারের মাধ্যমে সরবরাহ করে। এ ক্ষেত্রে পণ্যের উৎপাদন ব্যয় দাঁড়ায় ৯২ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যটি আমদানি করার সময় ফাস্ট সেল ভিত্তিতে পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য ধরা হয় ৯২ ডলার। এর ফলে ৮ ডলারের মূল্যের ওপর কোনো শুল্ক পরিশোধ করতে হয় না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র প রক র য় য় ব যবস থ আমদ ন উৎপ দ
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়ায় আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড, শিক্ষার্থীদের করতে হবে নিবন্ধন
আগামী ২৩ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাশিয়ার সিরিয়াস ফেডারেল টেরিটরিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২২তম আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড (আইজেএসও) ২০২৫। এ আয়োজনে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে রাশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এই অলিম্পিয়াড আয়োজন করছে রাশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ট্যালেন্ট অ্যান্ড সাকসেস এডুকেশনাল ফাউন্ডেশন এবং মস্কো ইনস্টিটিউট অব ফিজিকস অ্যান্ড টেকনোলজি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রেরিত আমন্ত্রণপত্রটি বাংলাদেশে পৌঁছেছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা, আবাসন ও পূর্ণ সহায়তার নিশ্চয়তা
আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সিরিয়াস ফেডারেল টেরিটরিতে শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রয়েছে, যেখানে নিয়মিত শিক্ষামূলক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চলছে।
অলিম্পিয়াড চলাকালীন (২৩ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর) আয়োজকেরা অংশগ্রহণকারী দলগুলোর জন্য আবাসন, খাবার, স্থানীয় পরিবহন ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচিসহ পূর্ণাঙ্গ সহায়তা দেবে। তবে ভ্রমণ ও ভিসা–সংক্রান্ত ব্যয় অংশগ্রহণকারী দেশকেই বহন করতে হবে।
আরও পড়ুনঅনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ের১৬ ঘণ্টা আগেঅংশগ্রহণের শর্ত ও ফি
প্রতিটি দলে সর্বাধিক ছয়জন শিক্ষার্থী থাকবে। শিক্ষার্থীদের বয়স ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৫ বছর হতে হবে।
অলিম্পিয়াডে তিনটি পর্ব থাকবে
১. প্রায়োগিক (Experimental)
২. তাত্ত্বিক (Theoretical)
৩. বহুনির্বাচনী (Multiple-choice) প্রশ্নোত্তর পর্ব।
অংশগ্রহণের জন্য প্রতিটি দলের সাংগঠনিক ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার মার্কিন ডলার। পর্যবেক্ষক হিসেবে যোগ দিতে হলে দিতে হবে ১ লাখ ৫০ হাজার রুবল। দলনেতা বা পর্যবেক্ষক একক কক্ষের আবাসন চাইলে অতিরিক্ত ৬১ হাজার ২০০ রুবল দিতে হবে।
আরও পড়ুনমানবিক বিভাগ থেকে পড়েও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, শাহীন আক্তারের গল্প যেন অনুপ্রেরণার ১১ নভেম্বর ২০২৫নিবন্ধন ও আয়োজনের স্থান
নিবন্ধন করতে হবে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে: https://ijso.siriusolymp.ru/](https://ijso.siriusolymp.ru/
প্রতিযোগিতার সব পর্ব অনুষ্ঠিত হবে Sirius Arena-তে, আর অংশগ্রহণকারীদের আবাসন থাকবে Sirius Educational Center-এর ক্যাম্পাসে।
রাশিয়ার আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, নিবন্ধনের শেষ তারিখ পরবর্তী সময়ে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।
আরও পড়ুনস্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম স্কলারশিপ, ইউরোপে বিনা খরচে উচ্চশিক্ষা১২ নভেম্বর ২০২৫