উখিয়ার খালে মিলল নারীর বস্তাবন্দী লাশ, স্বামী আত্মগোপনে
Published: 14th, November 2025 GMT
কক্সবাজারের উখিয়ার হলদিয়া ইউনিয়নের তচ্ছাখালী সেতু এলাকায় খাল থেকে এক নারীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
নিহত নারীর নাম রহিমা আক্তার (৩০)। তিনি উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আমির হোসেনের মেয়ে এবং পাশের হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জসিম উদ্দিনের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় তচ্ছাখালী সেতু এলাকায় দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে এলাকাবাসী খালে ভাসমান একটি বস্তা দেখতে পান। পরে বস্তাটির ভেতরে নারীর গলিত লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর রাত ৯টার দিকে পরিবারের সদস্যরা ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করেন।
জানতে চাইলে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, লাশে পচন ধরার কারণে শরীরে আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহ থেকে রহিমা আক্তারকে খুন করা হয়েছে। ঘটনার পর তাঁর স্বামী আত্মগোপনে রয়েছেন।
ওসি জিয়াউল হক বলেন, শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। নিহত নারীর স্বামীকে খুঁজে পেতে পুলিশ কাজ করছে।
নিহত রহিমার বাবা আমির হোসেন বলেন, রহিমা তাঁর বাড়িতে ছিলেন। ৬ নভেম্বর স্বামী জসিম উদ্দিনের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বের হন। এর পর থেকে রহিমার খোঁজ মিলছিল না। জসিমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহে মামলা করায় নারী যাত্রাশিল্পীকে মারধর, চুল কেটে নির্যাতন
ময়মনসিংহ নগরে এক নারী যাত্রাশিল্পীকে মারধর ও চুল কেটে মুখে কালি মাখিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার শাহ আলম (৪০) চরকালীবাড়ি এলাকার মো. রাশেদের ছেলে। তিনি মামলার ৩ নম্বর আসামি। গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁকে জুবিলী ঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার যাত্রা নৃত্যশিল্পীর নাম মোছা. রুপা। তিনি নগরের বড় কালীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলামের স্ত্রী। তবে তাঁরা নগরের পাটগুদাম ব্রিজ মোড় এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মাসুদ জামেলী বলেন, ওই নারীকে বেঁধে চুল কেটে মারধর করা হয়েছে, মুখে কালি মেখে দেওয়া হয়েছে। দুটি পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই মামলা চলছিল। অপহরণ মামলার আসামিরা জামিনে ছিলেন। আদালতের আরেকটি ভাঙচুরের মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ গত বুধবার দুপুরে ফিরে আসে। তখন প্রতিপক্ষ রাস্তায় রুপাকে আটকে নির্যাতন চালায়।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, বড় কালীবাড়ি লোকনাথ মন্দির-সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের একটি বস্তিতে বাস্তুহারা সমবায় সমিতির কাছ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে ৩ লাখ টাকায় একটি জমি কেনেন রুপা। গত বছর সেখানে আধা পাকা ঘর করতে গেলে সমবায় সমিতির সদস্য শাহ আলম চাঁদা দাবি করেন। ১ লাখ টাকা দেওয়ার পরও আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। টাকা না পেয়ে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর রুপার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় রুপা আদালতে মামলা করেন। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল রুপার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে মো. রনি সুলতানকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় রুপা ৯ এপ্রিল মামলা করলে আসামি শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। রুপার করা ভাঙচুর মামলার তদন্ত করতে পুলিশ বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ চলে যাওয়ার পর প্রতিপক্ষ রাস্তায় রুপাকে ধরে নিয়ে বেঁধে মারধর করে, চুল কেটে ও মুখে কালি মেখে হেনস্তা করে। এ সময় তাঁর সামনে মাদক ও টাকা রেখে ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে রুপার স্বামী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।
রুপা বলেন, ‘পুলিশ চলে যাওয়ার পরই আমাকে রাস্তায় ধরে নিয়ে গিয়ে বেঁধে চুল কেটে মুখে কালি মেখে দেয়। আমি বিচার চাই।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম বলেন, মামলা তদন্ত করে পুলিশ ফিরে আসার পর ওই নারীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা নেওয়া হয়েছে এবং একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।