ময়মনসিংহে মামলা করায় নারী যাত্রাশিল্পীকে মারধর, চুল কেটে নির্যাতন
Published: 14th, November 2025 GMT
ময়মনসিংহ নগরে এক নারী যাত্রাশিল্পীকে মারধর ও চুল কেটে মুখে কালি মাখিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার শাহ আলম (৪০) চরকালীবাড়ি এলাকার মো. রাশেদের ছেলে। তিনি মামলার ৩ নম্বর আসামি। গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁকে জুবিলী ঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার যাত্রা নৃত্যশিল্পীর নাম মোছা.
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মাসুদ জামেলী বলেন, ওই নারীকে বেঁধে চুল কেটে মারধর করা হয়েছে, মুখে কালি মেখে দেওয়া হয়েছে। দুটি পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই মামলা চলছিল। অপহরণ মামলার আসামিরা জামিনে ছিলেন। আদালতের আরেকটি ভাঙচুরের মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ গত বুধবার দুপুরে ফিরে আসে। তখন প্রতিপক্ষ রাস্তায় রুপাকে আটকে নির্যাতন চালায়।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, বড় কালীবাড়ি লোকনাথ মন্দির-সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের একটি বস্তিতে বাস্তুহারা সমবায় সমিতির কাছ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে ৩ লাখ টাকায় একটি জমি কেনেন রুপা। গত বছর সেখানে আধা পাকা ঘর করতে গেলে সমবায় সমিতির সদস্য শাহ আলম চাঁদা দাবি করেন। ১ লাখ টাকা দেওয়ার পরও আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। টাকা না পেয়ে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর রুপার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় রুপা আদালতে মামলা করেন। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল রুপার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে মো. রনি সুলতানকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় রুপা ৯ এপ্রিল মামলা করলে আসামি শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। রুপার করা ভাঙচুর মামলার তদন্ত করতে পুলিশ বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ চলে যাওয়ার পর প্রতিপক্ষ রাস্তায় রুপাকে ধরে নিয়ে বেঁধে মারধর করে, চুল কেটে ও মুখে কালি মেখে হেনস্তা করে। এ সময় তাঁর সামনে মাদক ও টাকা রেখে ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে রুপার স্বামী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।
রুপা বলেন, ‘পুলিশ চলে যাওয়ার পরই আমাকে রাস্তায় ধরে নিয়ে গিয়ে বেঁধে চুল কেটে মুখে কালি মেখে দেয়। আমি বিচার চাই।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম বলেন, মামলা তদন্ত করে পুলিশ ফিরে আসার পর ওই নারীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা নেওয়া হয়েছে এবং একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর এ ঘটন য় ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
বাবার কাছে উচ্ছৃঙ্খল আচরণের নালিশ করায় প্রতিবেশীকে হত্যা
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় এক তরুণের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের বিষয়ে তাঁর বাবার কাছে নালিশ দেওয়ার দুই দিন পর অভিযোগকারী প্রতিবেশীকে মাথায় আঘাত করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় দুজনকে আসামি করে আজ বৃহস্পতিবার ফুলবাড়িয়া থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। তবে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
নিহত যুবকের নাম কবির হোসেন (৩০)। তিনি ফুলবাড়িয়া উপজেলার ১২ নম্বর আছিম পাটুলী ইউনিয়নের জঙ্গলবাড়ি চকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। বাড়ির কাছে একটি মাছের খামারে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি।
পুলিশ জানায়, একই গ্রামের খোকা মিয়ার ছেলে মো. আরিফ (২০) গাছ কাটার কাজ করেন। সম্প্রতি এলাকায় আরিফ উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছেন, এমন অভিযোগ এনে সতর্ক করতে গত সোমবার খোকা মিয়ার কাছে নালিশ দেন কবির হোসেন। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন আরিফ। বুধবার সন্ধ্যায় কবির হোসেন মাছের খামারে বাতি জ্বালাতে গেলে বাঁশের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন আরিফ। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়ে যান। ঘটনাটি স্থানীয় একজন দেখতে পেয়ে সেখানে আসার আগেই পালিয়ে যান অভিযুক্ত আরিফ। পরে স্থানীয় লোকজন আহত ওই যুবককে উদ্ধার করে প্রথমে ফুলবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। জ্ঞান না ফেরায় রাত দুইটার দিকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা আয়েশা আক্তার আজ বৃহস্পতিবার থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় আরিফ ও তাঁর বাবা খোকা মিয়াকে আসামি করা হয়েছে।
ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান বলেন, অভিযুক্ত তরুণের বিরুদ্ধে তাঁর বাবার কাছে মাদক গ্রহণ ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণের অভিযোগ করেছিলেন নিহত যুবক। এ কারণেই মাথায় আঘাত করে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।