Prothomalo:
2025-11-14@08:37:31 GMT

পত্রিকা পড়ে বেড়ে ওঠা

Published: 14th, November 2025 GMT

‘প্রথম আলো পড়ি ছোটবেলা থেকে। গোল্লাছুট দিয়ে শুরু, আর এখন সম্পাদকীয়—মাঝখানের সময়টাকে বলে বড় হয়ে যাওয়া।’

কদিন আগে বলছিলেন এক পাঠক। সত্যিই তো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পত্রিকায় আমাদের পছন্দের পাতাও বদলায়। ছেলেবেলায় হয়তো ভালো লাগত কার্টুন, কমিকস, শিশুদের পাতা। এরপর একটু একটু করে আগ্রহ জন্মায় খেলা-বিনোদন কিংবা অন্যান্য সংবাদের প্রতি। সব বয়সীদের কথা মাথায় রেখেই পত্রিকা ও অনলাইন সাজানোর চেষ্টা করে প্রথম আলো। তবে শিশু-কিশোর-তরুণদের দিকে থাকে বাড়তি মনোযোগ।

কেবল শিশুদের জন্যই প্রথম আলো প্রকাশ করে ‘গোল্লাছুট’। ছাপা হয় প্রতি শনিবার। স্কুলপড়ুয়া শিশুরা তো বটেই, ২-৫ বছর বয়সী যেসব শিশু এখনো পড়তে শেখেনি, ছবি দেখাতেই যাদের আনন্দ—গোল্লাছুট মাথায় রাখে তাদের কথাও। এ কারণেই শিশুদের এই ক্রোড়পত্র সাজানো হয় আকর্ষণীয় সব ছবি দিয়ে।

একালের শিশু, যাদের আমরা বলি জেন-আলফা; তারা ভীষণ ‘স্মার্ট’। এই শিশুরা শুধু জানতে নয়, নিজের ভাবনাটা জানাতেও চায়। সেই প্ল্যাটফর্মই তৈরি করে দেয় গোল্লাছুট। গোল্লাছুটের পাতাজুড়ে ছাপা হয় প্রথম আলোর খুদে পাঠকদের লেখা-আঁকা।

গত এক বছরে বেশ কিছু বিশেষ সংখ্যা করেছে গোল্লাছুট। যেমন একটি আয়োজনের নাম ছিল—‘প্রিয়জনকে চিঠি’। দাদা, দাদি, নানা, নানি থেকে শুরু করে বন্ধুর উদ্দেশেও লিখেছে শিশুরা। হাতে লেখা সেসব চিঠি কোনো শিল্পকর্মের চেয়ে কম নয়! গোল্লাছুটের সেই পাতায় একবার চোখ বোলালেই মন ভালো হয়ে যেতে বাধ্য।

স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, পয়লা বৈশাখ, ঈদ, পূজা—বিশেষ দিনগুলো উপলক্ষে ছিল গোল্লাছুটের বিশেষ আয়োজন। এ ছাড়া চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, সংগীতশিল্পী সন্‌জীদা খাতুন, লেখক রকিব হাসানকে নিয়ে বিশেষ সংখ্যা করা হয়েছে, যেন শিশুরা এই গুণীজনদের সম্পর্কে জানতে পারে।

স্বপ্ন নিয়ে

শৈশব থেকে কৈশোরে পা রাখতে রাখতেই খুদে পাঠকদের প্রিয় হয়ে ওঠে ‘স্বপ্ন নিয়ে’, প্রথম আলোর রোববারের ক্রোড়পত্র। এই পাতা মূলত কিশোর-তরুণদের জন্য। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক খবর, তরুণদের অর্জন, সফল ও অনুপ্রেরণাদায়ী ব্যক্তির কথা, শিক্ষা, পেশাজীবনের পরামর্শসহ নানা কিছু প্রকাশিত হয় দুই পৃষ্ঠার স্বপ্ন নিয়েতে।

২০২৪ সালের গণ-অভ‍্যুত্থান ও এর পরবর্তী সময়ে একটা ভীষণ অস্থিরতার মধ‍্য দিয়ে গেছেন এ দেশের শিক্ষার্থী ও তরুণেরা। কেউ বন্ধুকে হারিয়েছেন, কেউ আহত হয়েছেন। দীর্ঘদিন পড়ালেখা থেকে দূরে ছিলেন কেউ কেউ। এসবের মধ‍্য থেকেই মানবিক, অনুপ্রেরণাদায়ী গল্পগুলো তুলে এনেছে স্বপ্ন নিয়ে। অভ‍্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে যাঁরা ‘পুলিশহীন’ শহরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করেছেন, ছাপা হয়েছিল তাঁদের অভিজ্ঞতাও। এ ছাড়া বন‍্যায় যে শিক্ষার্থীরা রোবট নিয়ে উদ্ধারকাজে নেমেছেন, বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে যে শিক্ষার্থী অ‍্যাপ তৈরি করেছেন, এমন আরও নানা উদ‍্যমী তরুণের কথা উঠে এসেছে তরুণদের এই পাতায়।

এখন চারদিকে শুধু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) আলাপ। শিক্ষার্থীদের মনে নানা দ্বিধা, শঙ্কা। কোন কোন চাকরি হারিয়ে যাবে? কোন বিষয়েই–বা পড়ব? কীভাবে প্রস্তুতি নেব ভবিষ‍্যতের জন‍্য? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে এআই নিয়ে পাতাজুড়ে বিশেষ সংখ‍্যা করেছিল স্বপ্ন নিয়ে। এ ছাড়া স্নাতকোত্তরের পড়ালেখা, বিদেশে উচ্চশিক্ষা, ফার্মাসি, বিবিএ, মেডিকেল শিক্ষা, এইচএসসি-পরবর্তী দিকনির্দেশনাসহ নানা কিছু নিয়ে বিশেষ আয়োজন ছিল গত এক বছরে।

ছুটির দিনে

প্রথম আলোর ‘ছুটির দিনে’ও তরুণ পাঠকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। দেশ-বিদেশে বেড়ানো, শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের নানা গল্প ছাপা হয় শনিবারের এই ক্রোড়পত্রে। এভারেস্টজয়ী বাবর আলীসহ আরও অনেক অভিযাত্রীই ছুটির দিনের নিয়মিত লেখক। 

মা দিবস, বাবা দিবস, বন্ধু দিবসের মতো বিশেষ দিনগুলোয় বিশেষ সংখ‍্যা প্রকাশ করেছে ছুটির দিনে ও স্বপ্ন নিয়ে। ছাপা হয়েছিল পাঠকদের একগুচ্ছ লেখা। শিশুরা যেমন গোল্লাছুটে লিখে-এঁকে আনন্দ পায়, বড়দের জন‍্যও নিশ্চয়ই নিজের লেখা-ছবি পত্রিকায় দেখতে পাওয়ার আনন্দটা কম নয়।

এসব ছাড়াও কিশোর-তরুণদের জন‍্যই প্রতিদিনের প্রথম আলোর ‘একটু থামুন’ অংশে থাকে সুডোকু, কুইজ। খেলায় খেলায় পাঠক বুদ্ধি ঝালাই করতে পারেন।

রাজনীতি, অর্থনীতি, কূটনীতি—সবই তো তরুণদের আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছে। সেই আগ্রহের কথা মাথায় রেখেই সাজানো হয় প্রতিদিনের প্রথম আলো। নিশ্চয়ই আরও অনেক কিছু করার আছে। বাক্স থেকে বেরিয়ে এসে ‘আউট অব দ‍্য বক্স’ ভাবার সুযোগ আছে। এসব ক্ষেত্রে কিশোর-তরুণ পাঠকদের পরামর্শ আমরা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করব।

মো.

সাইফুল্লাহ: জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, প্রথম আলো

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল প ঠকদ র র তর ণ দ র জন আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, অপহরণের পর মিলল শিক্ষার্থীর মরদেহ

রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে এক কলেজছাত্রকে অপহণের পর তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ছাত্রের নাম সুদীপ্ত রায়। সে ভাটারার ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। 

গতকাল তুরাগের দিয়াবাড়িতে নির্মাণাধীন ভবনের তৃতীয় তলা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে, গত ৭ নভেম্বর ভাটারার শহীদ আব্দুল আজিজ সড়কে অবস্থিত কলেজ হোস্টেল থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। ওইদিন রাতেই সুদীপ্তের পরিবারকে ফোন দিকে ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরদিন ৮ নভেম্বর এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের বাবা হিমাংশু কুমার রায়।

পরবর্তীতে এ ঘটনায় ময়মনসিংহ থেকে অভিযুক্ত যোবায়ের ও আব্দুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের একজন সুদীপ্তের এলাকার আরেকজনের বাড়ি নেত্রকোনায়। একটি আইফোন ছিনিয়ে নিতে সুদীপ্তকে অপহরণ করে তারা। আইফোন না দেওয়ায় ঘটনার দিন রাতেই তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। গ্রেপ্তার দুজনই পরিকল্পনা করে সুদীপ্তকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।

জানা গেছে, সুদীপ্তের বাড়ি দিনাজপুরে। গ্রেপ্তার দুজনই ভাটারা এলাকায় থাকতো এবং সুদীপ্তের পূব পরিচিত ছিল।

নিহতের বাবা হিমাংশু কুমার রায় অভিযোগ করেন, ভাটারার ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জগন্নাথপুর শাখায় একাদশ শ্রেণিতে পড়তো সুদীপ্ত। শহীদ আব্দুল আজিজ সড়কে কলেজের হোস্টেলে থাকতো। ৭ নভেম্বর বিকাল ৫টার দিকে মাকে ফোন করে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে হেস্টেল থেকে বের হয় সুদীপ্ত। রাত ১০টার দিকে সুদীপ্ত তার মাকে ফোনে জানায়, সে মিরপুরে আছে এবং রাতেই হোস্টেলে ফিরবে। রাতে অজ্ঞাতনামা একজন সুদীপ্তের ফোন থেকে তার মাকে ফোন দেয়। অজ্ঞাত ব্যক্তি জানায়, সুদীপ্ত তাদের জিম্মায় রয়েছে এবং ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এই টাকা ৮ নভেম্বর বিকেল ২টার মধ্যে তাদের নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দিতে হবে। টাকা নিয়ে না আসলে সুদীপ্ততে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়।

এ বিষয়ে পুলিশসহ অন্যান্য যে কাউকে জানানো যাবে না বলেও হুমকি দেয়। কারো সঙ্গে যোগাযোগ করলে সুদীপ্তকে মেরে ফেলবে বলে ফোনটি কেটে দেয়। এরপর থেকে সুদীপ্তের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ৮ নভেম্বর সকালে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আমাকে ফোন দেয় এবং সুদীপ্তের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। সুদীপ্তকে আমি পুরো ঘটনা ও মুক্তিপণের কথা জানাই। কিন্তু আমার ছেলে এসব অস্বীকার করে এবং বলে, সে হোস্টেলে যাচ্ছে। এরপর থেকে সেই নম্বরটিও বন্ধ পাই। বেলা আড়াইটার দিকে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে এবং টাকা রেডি রাখার কথা জানিয়ে আবার ১ ঘণ্টা পর ফোন দিবে বলে। এরপর সেটিও বন্ধ পাই।

নিহতের ভগ্নিপতি অনিল সেন বলেন, গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ ও যোবায়ের সুদীপ্তকে অপহরণ করে দিয়াবাড়ির একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায়। ঘটনার দিন রাতেই তার মায়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার পর আইফোনটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। না দেওয়ায় তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে টয়লেটের মধ্যে ফেলে রাখে। পরবর্তীতে তারা আইফোনটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ তাদেরকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয়।

বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) এইচ এম শফিকুর রহমান বলেন, “সুদীপ্তকে অপহরণের পর মিরপুরের শাহ আলী এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রাতেই দিয়াবাড়িতে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। সেখানেই সুদীপ্ততে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে।”

ঢাকা/এমআর/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ২ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বর্তমান সংবিধান মানলে পরবর্তী নির্বাচন ২০২৯ সালে: ফরহাদ মজহার
  • অন্তর্বর্তী সরকার নতুন পে-স্কেলের কাঠামো নির্ধারণ করবে: অর্থ উপদে
  • ৫জি থেকে ৬জি, ইন্টারনেটের পরবর্তী ধাপ
  • অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ের
  • ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, অপহরণের পর মিলল শিক্ষার্থীর মরদেহ
  • দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু বৃহস্পতিবার