স্পিন-জালে আয়ারল্যান্ডকে ‘শিকার’ বাংলাদেশের
Published: 14th, November 2025 GMT
প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংটাই বড় পার্থক্য তৈরি করে দিল দুই দলের। তা আংশিক সত্য। পুরোটা হলো, বাংলাদেশের স্পিন-জালে আটকা পড়েছে আয়ারল্যান্ড। বোলাররা টেস্ট ম্যাচ জেতায়। প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নিতে না পারলে যতই ভালো ব্যাটিং হোক না কেন ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা থাকে না। সিলেটে তেমন কিছুই হলো। আয়াল্যান্ডকে ২৮৬ রানে আটকে দেওয়ার পর বাংলাদেশ ৫৮৭ রান করে ৮ উইকেটে। ৩০১ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে আয়ারল্যান্ড পারেনি ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে। ইনিংস ও ৪৭ রানের দারুণ জয়ে দুই ম্যাচ সিরিজে এগিয়ে বাংলাদেশ।
দুই ইনিংস মিলিয়ে আয়ারল্যান্ডের ২০ উইকেটের ১৪টি নিয়েছেন বাংলাদেশের তিন স্পিনার। আর বাংলাদেশের ৮ উইকেটের ৬টিই পেয়েছেন আইরিশ স্পিনাররা। বাংলাদেশ নিজেদের শক্তির জায়গা স্পিনে ফাঁদ পেতেছিল। সেই স্পিনেই শেষ পর্যন্তই ধরাশয়ী আয়ারল্যান্ড। অভিষিক্ত হাসান মুরাদ প্রথম ইনিংসের ২ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে পেয়েছেন ৪ উইকেট। দুই ইনিংস মিলিয়ে তাইজুলের শিকার ৫টি। দ্বিতীয় ইনিংসে মেহেদী হাসান মিরাজ কোনো উইকেট না পেলেও প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নিয়ে ছিলেন দলের সেরা। সব মিলিয়ে স্পিন আক্রমণে আয়ারল্যান্ডকে উড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ২৮৬ রান করা আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে করে ২৫৪ রান।
আরো পড়ুন:
ইনিংস ও ৪৭ রানে জিতল বাংলাদেশ
রেকর্ডময় দিনে বড় জয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ
গতকাল তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের সুবাস পেতে থাকে বাংলাদেশ। ৫ উইকেটে ৮৬ রানে দিনের খেলা শুরু করে তারা। মাথায় ছিল ইনিংস হার এড়ানোর বোঝা। আগের দিন শেষ বিকেলে যে লড়াইটা তারা করতে পারেনি, আজ প্রায় তিন ঘণ্টার লড়াইয়ে তা পেরেছিল অতিথিরা। পরাজয় অনুমিতই ছিল। তবুও শেষ ৫ উইকেট হাতে রেখে আজ ১৬৮ রান যোগ করতে পারে।
দিনের শুরুতে তাইজুল সাফল্য এনে দেন। তার বল স্লগ সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে শর্ট ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে সাদমানের হাতে ক্যাচ দেন হামফ্রিজ। এরপর সপ্তম উইকেটে জুটি বাঁধেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ও অ্যান্ডি বালবিরনি। প্রতি আক্রমণে গিয়ে খুব সহজেই ব্যাটিং করেন তারা। মুরাদ বোলিংয়ে এসে এই জুটি ভাঙেন। তার সোজা বল স্লগ করতে গিয়ে এলডিব্লিউ হন আইরিশ অধিনায়ক। বালবিরনি ৬৩ বল খেলে ৫টি চারে ৩৮ রানে লড়াকু ইনিংস খেলে যান।
সকালের সেশনে বাংলাদেশের সাফল্য ২ উইকেট। দ্বিতীয় সেশনে ফিরে বাকি ৩ উইকেট নিয়ে জয়ের কাজ সারেন স্পিনাররা। হাসান মুরাদ আবার আক্রমণ করে ফেরান ম্যাকব্রাইনকে। এরপর তার শিকার জর্ডান নীল। নবম উইকেটে জর্ডান নীল ও ব্যারি ম্যাকার্থি ৫৬ বলে ৫৪ রানের জুটি গড়েন। তাতে আড়াইশ পেরিয়ে যায় আয়ারল্যান্ডের রান। মনে হচ্ছিল, ইনিংস পরাজয় এড়িয়ে যাবেন তারা। কিন্তু তাইজুল ম্যাকার্থিকে থামিয়ে দিলে সব আশা শেষ হয়ে যায়। ২৭ বলে ২টি চার ও ১ ছক্কায় ২৫ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। ওখানেই শেষ হয়ে যায় আয়ারল্যান্ডের প্রতিরোধ।
প্রথম ইনিংসে ১৭১ রান করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়। সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে ১-০ ব্যবধানে। ১৯ নভেম্বরে মিরপুরে শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট। যেই ম্যাচ দিয়ে মুশফিকুর রহিম ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট খেলবেন।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম ইন উইক ট ন উইক ট র র ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষা ক্যাডারে রসায়ন বিভাগে প্রথম পঞ্চগড়ের আবু তালেব
৪৯তম বিশেষ বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। ফলাফলে শিক্ষা ক্যাডারের রসায়ন বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান আবু তালেব।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে পিএসসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
অনার্সের ফল প্রকাশের আগেই বিসিএস ক্যাডার হলেন ঢাবির খাদিজা
পিরোজপুরে নব নিযুক্ত জেলা প্রশাসক আবু সাঈদ
আবু তালেব পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলী ইউনিয়নের খোচাবাড়ী এলাকার আহমেদনগর গ্রামের কৃষক সরদার আলী ও গৃহিণী রাবেয়া বেগমের সন্তান। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তালেব দ্বিতীয়।
তিনি ২০১৪ সালে পামুলী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি এবং ২০১৬ সালে ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। উভয় পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি।
এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। এরপর কৃতিত্বের সাথে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। এরপর প্রতিযোগিতা পূর্ণ বিসিএসে অংশ নিয়ে দেখা পান কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের।
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আবু তালেব বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, এটি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। এই ফল আমার বাবা-মা, শিক্ষক এবং পরিবারের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব ছিল না। আমি ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতাম শিক্ষক হব এবং গ্রামের শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করব। সেই সঙ্গে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাই।”
তিনি বলেন, “এটা আমার চতুর্থ বিসিএস। এর আগে ৪৬তম বিসিএসে লিখিত দিয়েছিলাম, ৪৭তম বিসিএসে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলাম। তাই এবার সফলতা পাওয়া আমার জন্য অনেক আনন্দের।”
ছেলের সাফল্যে আবেগাপ্লুত পিতা সরদার আলী বলেন, “আমি একজন কৃষক মানুষ। নিম্নবিত্ত পরিবারে নানা প্রতিকূলতার পরও ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে নিয়েছিলাম। আজ ও দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে, এটা আমাদের পরিবারের জন্য গর্বের। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার ছেলে দেশের জন্য কাজ করবে, এটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রার্থনা।”
ঢাকা/নাঈম/মেহেদী