একটা সময় অফিসে ফাইল ঘেঁটে আর হিসাব–নিকাশ করেই কেটে যেত সারা দিন। কিন্তু আজকের দুনিয়ায় অনেক কাজেই ব্যবহৃত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং ও অটোমেশন। এখন ক্যালেন্ডার ম্যানেজ করা, প্রজেক্টের অগ্রগতি দেখা, এমনকি মিটিং মিনিটস লিখতেও নেওয়া হচ্ছে প্রযুক্তিগত সাহায্য।

তাই অনেকে ভাবতে পারেন, প্রযুক্তিগত দক্ষতাই আপনার ক্যারিয়ারে সাফল্য অর্জনের জন্য যথেষ্ট, কিন্তু মোটেও তা নয়। প্রযুক্তির ব্যাপারে আপনি অভিজ্ঞ হয়েও যদি মানবিক না হোন, প্রযুক্তি ও মানুষের সঙ্গে সংযোগ ঘটাতে না পারেন, তবে তা শিখে নেওয়ার এখনই সময়। ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’য় এ ব্যাপারে সম্প্রতি কথা বলেছেন শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা। চলুন, দেখা যাক কী বলছেন তাঁরা।

যেসব স্কিল আপনাকে এগিয়ে রাখবে

প্রযুক্তি যত বেশি আমাদের দৈনন্দিন কাজ সহজ করছে, ততই জরুরি হয়ে উঠছে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক তৈরি ও টিকিয়ে রাখার গুণ। কারণ, চাকরি হোক আর ব্যবসা, ক্রেতাদের সঙ্গে আবেগপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্ক থাকতেই হবে। অন্যের অনুভূতি বোঝা, বিরোধ মেটানো, টিমের সদস্যদের অনুপ্রাণিত করা এবং গল্প বলার দক্ষতাই এখন সবচেয়ে মূল্যবান।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদ্ভাবনের ফলে প্রায় সব শ্রেণি ও পেশার মানুষ কোডিং, এআই ও ডিজিটাল স্কিল শেখার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ছেন। যুগের সঙ্গে এগিয়ে থাকার জন্য এসব প্রযুক্তি শেখা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আপনি যদি সবার চেয়ে এগিয়ে থাকতে চান, তবে শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতাই যথেষ্ট নয়; বরং আসল প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা লুকিয়ে আছে এমন স্কিলে, যা অ্যালগরিদম অনুকরণ করতে পারে না। এসব স্কিল হলো সহানুভূতি, সৃজনশীলতা ও আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা।

আরও পড়ুনঅফিসে বেতন বাড়ানোর কথা কীভাবে বলবেন১০ আগস্ট ২০২৫যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেডি স্কুল অব ডিজাইনের সহকারী অধ্যাপক কিরণ এল মিরাজকর বলেন, কোডিং কাঠামো তৈরি করে, কিন্তু সৃজনশীলতা নতুন জিনিস উদ্ভাবন করতে, ক্রেতাদের সঙ্গে মানবিক যোগাযোগ স্থাপন করতে ও ব্যবসার সামগ্রিক লাভে প্রভাব ফেলে।

৩০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে মিরাজকর দেখেছেন, প্রযুক্তি যত উন্নত হোক না কেন, সেটি শেষ পর্যন্ত মানুষের সমস্যা সমাধানেই ব্যবহৃত হয়। তাঁর ভাষায়, ‘নিখুঁতভাবে বানানো অ্যাপও ব্যর্থ হয়, যদি কেউ তা ব্যবহার করে আনন্দ না পায়। সৃজনশীলতা না থাকলে প্রযুক্তি কার্যকর হলেও তা প্রাণহীন থেকে যায়।’

কমিউনিকেশন টেকনোলজি ও ভয়েস ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করছে অরাট্রিক্স। এই প্রতিষ্ঠানের সিওও ও সহপ্রতিষ্ঠাতা আনাস শোয়েব বলেন, ‘টেকনিক্যাল দক্ষতা হয়তো আপনাকে দরজার ভেতরে ঢুকতে সাহায্য করবে, কিন্তু আপনি কত দূর যেতে পারবেন, সেটি নির্ভর করে যোগাযোগের দক্ষতা, সৃজনশীলতা, অভিযোজন ক্ষমতা ও আবেগীয় বুদ্ধিমত্তার ওপর।’

গবেষণায় যা দেখা গেছে

ইউরোপিয়ান ইকোনমিক লেটারস (২০২৫)–এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, এআই যখন টেকনিক্যাল কাজের দায়িত্ব নিচ্ছে, তখন সফট স্কিল দীর্ঘমেয়াদি ক্যারিয়ারে ৬০ শতাংশের বেশি সাফল্য নির্ধারণ করছে। হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ (২০১৯)–এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, আইকিউ –সম্পন্ন নেতারা সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করে দলকে আরও কার্যকর করে তোলেন।

জার্নাল অব কমিউনিকেশন ইন সায়েন্টিফিক ইনকোয়ারি (মালয়েশিয়া, ২০২৩)–এর গবেষণায় দেখা যায়, আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা নিজের কর্মদক্ষতা ও কর্মসংস্থানের মধ্যে একটি ‘মডারেটর’ হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ আপনি যদি আবেগীয় বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ব্যক্তি হোন, তবে তা আপনার টেকনিক্যাল দক্ষতার সুবিধা আরও বাড়িয়ে তোলে।

এখনকার বিশ্বে আপনি কত দূর যেতে পারবেন, সেটি নির্ভর করবে যোগাযোগ দক্ষতার ওপর.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব দ ধ মত ত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী মাও. জব্বারের নির্বাচনী মোটর সাইকেল শোডাউন

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আবদুল জব্বারের নেতৃত্বে নির্বাচনী প্রচারণায় হাজারের অধিক মোটর সাইকেল নিয়ে নিজ নির্বাচনী এলাকায় শোডাউন করছেন।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সিদ্ধিরগঞ্জ কাঁচপুর ব্রিজের নিচ থেকে শুরু করে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়ক হয়ে ফতুল্লা, পঞ্চবটি হয়ে চাষাঢ়ায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মাধ্যমে শেষে শহরের নিতাইগঞ্জ, সৈয়দপুর, বন্দর মদনপুর, কাচপুর চিটাগাংরোড হয়ে হাজীগঞ্জ নতুন রাস্তা মোড়ে শেষ হয়। 

বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, শেখ হাসিনা দেশে  হত্যা, খুন ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে পরিচালনা করেছিল। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দিল্লিতে বসে দেশে ফিরে আশার পরিকল্পনা করছে।

তাদের বলতে চাই আগামীর বাংলাদেশে কোন সন্ত্রাসীদের স্থান হবে না। আগামীর দেশ হবে শান্তিপূর্ণ ও মানুষের অধিকার পূরনের একটি সম্মৃদ্ধ দেশ। সেই দেশে যারা সন্ত্রাসী ও মানুষের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি করবে তাদেরকে এই দেশে থেকে বিতাড়িত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পূর্বে গণ ভোটের কথা বলেছি, কিন্তু এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের দিনে গণভোটের আয়োজন করার ঘোষণার মাধ্যমে পুরো জাতি হতাশ হয়েছে। কারণ নির্বাচনের দিন সকলে ভোট নিয়ে ব্যাস্ত থাকবে। সেদিন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যে শতশত ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছিল, সেই জীবনের যে ম্যান্ডেট সেটি ভূলুণ্ঠিত হবে। 

জামায়াতের আমীর আরও বলেন, এখনও সময় আছে সুষ্ঠু একটি নির্বাচন ও আগামীতে একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির মাধ্যমে নতুন একটি বাংলাদেশ বিনির্মানের জন্য ব্যবস্থা করবেন। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও হানাহানি বাদ দিয়ে সকলে মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।
মোটরসাইকেল শোডাউনের কারণে সড়কে ভোগান্তির বিষয়টি উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেন মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার। 

এরপর  নারায়ণগঞ্জ-৩ সংসদীয় আসনে ইকবাল হোসাইন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে সোনারগাঁ এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ সদসদীয় আসনে মইনুদ্দিন আহমাদের নেতৃত্ব সদর-বন্দরে নির্বাচনী এলাকায় পৃথক শোডাউন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগরী সাবেক আমীর, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের জামায়াত  মনোনীত এমপি প্রার্থী মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের প্রার্থী ড. ইকবাল হোসাইন ভূঁইয়া, মহানগরী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ জামাল হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারি এইচ এম নাসির উদ্দিন, জেল সহকারি সেক্রেটারি আবু সাঈদ মুন্না, মহানগর  কর্ম পরিষদ সদস্য মো. জাকির হোসাইন, এডভোকেট মাইন উদ্দিন মিয়া, মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ সভাপতি হাফেজ আব্দুল মোমিন, জামায়াতে ইসলামীর থানা আমির সেক্রেটারি ও অন্যান্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ