প্রেমিকের গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রেমিকাকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
Published: 14th, November 2025 GMT
মেহেরপুরে প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে এক তরুণী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। গত বুধবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার রাজাপুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।
আরো পড়ুন:
ডিপজলের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা, তদন্তে পিবিআই
ছাত্রীকে অপহরণ-ধর্ষণের মামলায় প্রধান শিক্ষকের যাবজ্জীবন
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রাজাপুর গ্রামের আফতাব আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম ও জুমাত আলীর ছেলে রাকিবুল ইসলাম। আরেক অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের ছেলে মিনারুল পলাতক আছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, বুধবার বিকেলে প্রেমিকের সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করেন ওই তরুণী। সন্ধ্যার দিকে সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মাঠের রাস্তা দিয়ে আসার সময় তিন যুবক তাদের পথরোধ করে। এ সময় তারা দুই জনকে নানা প্রশ্ন করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা প্রেমিকের গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তরুণীকে পার্শ্ববর্তী একটি আম বাগানে নিয়ে যান। এ সময় তারা প্রেমিকের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।
চাঁদা না দিলে তাদের দুই জনকে বিবস্ত্র করে সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিতে থাকে। এ সময় প্রেমিক তার প্রেমিকাকে তিন যুবকের কাছে রেখে টাকা নিতে মেহেরপুর শহরে আসেন। টাকা নিয়ে ফিরে গিয়ে দেখেন, তার প্রেমিকা কান্নাকাটি করছে। পরে প্রেমিকা জানান, তাকে তিন জন ধর্ষণ করেছে। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রেমিক তখন গ্রামবাসীসহ তার বন্ধুদের খবর দেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে বাড়ি পাঠান।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘‘তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গতকাল ধর্ষণের শিকার তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’’
ঢাকা/ফারুক/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম মল ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
ছেলে খুনের ঘটনায় মামলা করলেন বিচারক
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আব্দুর রহমান তার ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে (১৬) খুনের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে তিনি মামলার এজাহারে সই দিয়ে ছেলের লাশ নিয়ে জামালপুরে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। পরে রাজপাড়া থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করে।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বাসায় ঢুকে বিচারকের ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
প্রেমিকাকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গাজিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, “বিচারক নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলার একমাত্র আসামি লিমন মিয়া (৩৪)। তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পুলিশের হেফাজতে হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসা শেষে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।”
আসামি লিমন মিয়ার বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মদনের পাড়া ভবানীগঞ্জ গ্রামে। তার বাবার নাম এস এম সোলায়মান শেখ। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য ও ফুলছড়ি উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। লিমন সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি করতেন। ২০১৮ সালে তার চাকরি চলে যায়। এর পর থেকে তিনি নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কয়েক বছর আগে বিয়ে করেছিলেন লিমন। তবে, সংসার টেকেনি। বিচারক আব্দুর রহমানের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসীর (৪৪) সঙ্গে তার পূর্বপরিচয় ছিল। তার কাছ থেকে লিমন টাকা নিতেন।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন লিমন। দিয়েছিলেন প্রাণনাশের হুমকিও। এ নিয়ে গত ৬ নভেম্বর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন তাসমিন। মেয়ের বাসায় থাকা অবস্থায় সিলেটের জালালাবাদ থানায় এ জিডি করেন তিনি।
আব্দুর রহমান প্রায় এক বছর আগে শ্রম আদালতের বিচারক হয়ে রাজশাহীতে আসেন। গত মাসে তাকে মহানগর দায়রা জজ হিসেবে পদায়ন করা হয়। রাজশাহী শহরের ডাবতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে থাকতেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় ওই বাসায় যান লিমন। সেখানে তাওসিফকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাসমিন নাহারও। ধস্তাধস্তিতে হামলাকারী লিমনও আহত হন। পরে তিনজনকেই ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাওসিফকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
শুক্রবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে তাওসিফের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্ত করেন ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. কফিল উদ্দিন ও একই বিভাগের প্রভাষক শারমিন সোবহান কাবেরী। ময়নাতদন্ত শেষে মর্গের ভেতরে ঢুকে ছেলের মরদেহ দেখেন তার বাবা আবদুর রহমান। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
রামেকের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কফিল উদ্দিন জানিয়েছেন, তাওসিফের ডান উরু, ডান পা ও বা বাহুতে ধারালো ও চোখা অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এই তিনটি জায়গায় রক্তনালী আছে। সেগুলো কেটে গিয়েছিল। এ কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণও ছিল শরীরে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে তাওসিফের গলায় কালশিরা দাগ আছে বলে জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বলেছেন, নরম কাপড় দিয়ে শ্বাসরোধের কারণে এই দাগটি হতে পারে। তবে এটি মৃত্যুর প্রধান কারণ নয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা একই সময়ে হয়েছে।
ময়নাতদন্তের পর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের রাজশাহী সেন্টারের সদস্যরা রামেক হাসপাতালের নির্ধারিত কক্ষে মরদেহের গোসল করিয়ে দেন। পরে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সেই মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। নিহত তাওসিফ রাজশাহী গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
ঢাকা/কেয়া/রফিক