রাজশাহীতে বিএনপির নারী কর্মীকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন
Published: 14th, November 2025 GMT
রাজশাহীর পবায় ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে ভোট চাইতে গিয়ে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগ ওঠা জামায়াতের কর্মীর বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে ‘সচেতন নারী সমাজের’ ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করে রাজশাহী নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম।
১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের আশরাফের মোড় এলাকায় বিএনপির দুই নারী কর্মীকে মারধর ও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগকারী দুজন হলেন উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের নিলুফার ইয়াসমিন ও তাঁর বোন নূরভানু। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম নুরুল ইসলাম। তিনিও একই এলাকার বাসিন্দা ও জামায়াতের কর্মী। এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ও গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে দলীয় প্রার্থী শফিকুল হক (মিলন), বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবিবা, মহিলা দলের রাজশাহী মহানগরের সভাপতি শামসাদ মিতালী, রাজশাহী বিভাগীয় মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রোকসানা বেগম (টুকটুকি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল আলিম, ইউট্যাবের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি অধ্যাপক অধ্যাপক মামুনুর রশীদ প্রমুখ।
বিএনপি নেতা শফিকুল হক বলেন, নির্বাচনের ট্রেন চালু হয়েছে। কিন্তু এ সময়ে রাজশাহীর এ ঘটনা কিছুটা হলেও সেই ট্রেনকে বাধাগ্রস্ত করেছে। নারীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। রাজশাহীতে যাঁরা নারীদের হেনস্তা করছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের কাজ না করতে পারেন।
শামসাদ মিতালী বলেন, ‘আমাদের দেশে ৫২ শতাংশ ভোটার নারী। নারীদের অধিকার নিয়ে অনেক কথা বলা হয়, কিন্তু আমাদের নেত্রী নিলুফার ও তাঁর বোনের ওপর যেভাবে নির্মমভাবে অত্যাচার করা হলো, তাতে প্রমাণ হয়, তাদের কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল নেই।’ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হলে নারীরা দেশজুড়ে কঠোর আন্দোলনে নামবেন।
ইউট্যাব নেতা মামুনুর রশীদ ঘটনাটিকে অকল্পনীয় উল্লেখ করে বলেন, আজ যখন নারীরা শিক্ষা, গবেষণা, অর্থনীতিসহ সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন তাঁদের ওপর নির্যাতন করে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। যাঁরা এই জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছেন, প্রশাসনকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবিবা বলেন, ‘আমরা শুধু একজন কর্মীর ওপর হামলার বিরুদ্ধে দাঁড়াইনি, আমরা দাঁড়িয়েছি সেই সংস্কৃতির বিরুদ্ধে, যা একজন পুরুষকে রাজনৈতিক পরিচয়ে নারীর গায়ে হাত তোলার সাহস জোগায়।’ তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আইনগত ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। যেই পা আমার বোনের দিকে উঠেছে, সেই পা আইনের মাধ্যমে ভেঙে দেওয়া হবে।’
অভিযোগের বিষয়ে জামায়াতের কর্মী নুরুল ইসলাম দাবি করেন, তাঁকে উদ্দেশ্য করে ‘আমার বউ নৌকাত ভোট দিছি’ বলে কটূক্তি করায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ওই নারীকে শুধু ধাক্কা দিয়েছিলেন। এর বেশি কিছু ঘটেনি।
কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মতিন বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। জিডিটি আদালতে পাঠানো হয়েছে, বিষয়টি তদন্তাধীন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরে আইনজীবী সমিতির ভবনে ককটেল বিস্ফোরণের প্রতিবাদে মানববন্ধন
ছবি: Shariatpur
ক্যাপশন: জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতি মানববন্ধন করেছে। আজ মঙ্গলবার। ছবি: প্রথম আলো
শরীয়তপুরের চিকন্দী আইনজীবী সমিতির ভবনের দেয়ালে ও আইনজীবী রুবায়েত আনোয়ারের চেম্বারের দরজায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতি এই মানববন্ধন করে।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, সদর উপজেলার চিকন্দী এলাকায় সদর ও জাজিরা সহকারী জজ আদালত। চিকন্দী এলাকার আদালতটি চৌকি কোর্ট হিসেবে পরিচিত। ব্রিটিশ আমল থেকে চিকন্দীতে আদালতটি পরিচালিত হয়ে আসছে। গত রোববার রাত দুইটার দিকে দুর্বৃত্তরা চিকন্দী আইনজীবী সমিতির ভবনের দেয়ালে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ওই সময় দুর্বৃত্তরা চিকন্দী বাজার সড়কের পাশে থাকা আইনজীবী রুবায়েত আনোয়ারের চেম্বারের দরজায় একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। রুবায়েত আনোয়ার বিএনপির চিকন্দী ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান, জজকোর্টের পিপি মনিরুজ্জামান দিপু, জজকোর্টের জিপি সাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।
রুবায়েত আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিকন্দী কোর্ট ও বাজার সড়কের পাশে আমার চেম্বার। চেম্বারে রাতে কোনো মানুষ থাকেন না। রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। আমার সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ নেই। কী উদ্দেশ্যে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা বুঝতে পারছি না। তবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এ ঘটনা ঘটাতে পারে।’
চিকন্দী আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা হঠাৎ কেন আইনজীবী সমিতি টার্গেট করেছে, তা বুঝতে পারছি না। ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে চিকন্দী ও শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। দ্রুততম সময়ে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছি। দুই আইনজীবী সমিতি বসে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেব।’