সরকার অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারি করেছে। এই আদেশ জারির আগে সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন দলের মধ্যে মতভিন্নতা ছিল।

রাজনৈতিক দলগুলোকে মতভিন্নতা কাটিয়ে সমন্বিত প্রস্তাব দিতে সরকার সাত দিন সময় দিয়েছিল; কিন্তু দলগুলোর মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায়নি।

এখন প্রশ্ন হলো, জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ ও গণভোট নিয়ে কোন দলের আপত্তির কতটুকু বিবেচনায় নিল সরকার।

আগে জেনে নিই জুলাই সনদ কী।

জুলাই সনদ কী

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর জোরালো হয় সংস্কারের দাবি।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার, পুলিশ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধানদের নিয়ে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যার সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক ইউনূস নিজেই।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে ছয়টি কমিশনের ১৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব ও বাস্তবায়নপদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে স্থান পায়নি স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ। অবশ্য এসব কমিশনের প্রস্তাব সরকার কিছু কিছু বাস্তবায়ন করছে। তবে পরিস্থিতি ‘সন্তোষজনক নয়’ বলে মনে করেন অংশীজনেরা।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে প্রায় আট মাস ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ মেনে নেওয়ার আহ্বান

ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটি এ আহ্বান জানায়।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মনে করে, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য জরুরি। দলটি বলছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য খুব ক্ষতিকর কিছু নেই। তাই দলীয় স্বার্থে কিছু ছাড় দিয়ে হলেও এবং রাজনৈতিক ইগো (অহংকার) ত্যাগ করে, জাতির মুখের দিকে তাকিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।

দলটির মিডিয়া সম্পাদক এহসান আহমেদের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশের প্রধান একটি প্রয়োজন ছিল জাতীয় ঐক্য সমুন্নত রেখে বিচার, সংস্কার, নির্বাচন সম্পন্ন করা। জনগণের জান, মাল, জবান ও সম্মানের অধিকার নিরঙ্কুশ করার লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া। কিন্তু গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, সরকার জাতীয় ঐক্য বিনষ্টে শুরু থেকেই মুখ্য ভূমিকা রাখছে। তারই ধারাবাহিকতা দেখছি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ ও প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে।

দলটি প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন শুরু থেকেই বলে আসছে, দলগুলোর মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হবে; যেন যতটুকু সংস্কার সম্পন্ন করা সম্ভব হয়, সেটা টেকসই হয়। নব্বইয়ের অভিজ্ঞতা, সত্তরের অভিজ্ঞতা শেখায় জনগণ রক্ত দিয়ে যে পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি করে, রাজনৈতিক দলগুলোর দলীয় স্বার্থের ফাঁদে তার প্রায় সবই বিনষ্ট হয়ে যায়।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন আরও বলেছে, দলটি গণভোটের সময়, উচ্চকক্ষে ভোটের আনুপাতিক হারে আসন বরাদ্দ, সংবিধান সংস্কার পরিষদ—ইত্যাদির পক্ষে শুরু থেকেই মতামত জানিয়ে আসছিল। বস্তুত ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের একটি মৌলিক প্রস্তাব। কিন্তু জাতীয় ঐক্য নিশ্চিত না হলে ভালো উদ্যোগও ব্যর্থ হতে পারে, হিতে বিপরীত হতে পারে। এই ধরনের ব্যর্থতার ভার বহন করার সক্ষমতা এই জাতির আর নেই। এই দিকটিতে দলটি অধিকতর গুরুত্ব দিয়েছিল।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সম্পন্ন না করেই, দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য নিশ্চিত না করেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করেছে। ফলে সামনের দিনে এই সনদ বাস্তবায়ন না হওয়ার একটা আশঙ্কা শুরু থেকেই জন্ম নিয়েছে। তবে জাতির মুখের দিকে চেয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ মেনে নেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোঁজামিলের গণভোট অগ্রহণযোগ্য: বাংলাদেশ জাসদ
  • সব দলের ঐক্য ছাড়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কঠিন হবে: নাগরিক কোয়ালিশন
  • জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ মেনে নেওয়ার আহ্বান
  • জুলাই সনদ, জাতীয় নির্বাচন, গণভোট, সংসদের উচ্চকক্ষসহ প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে যা যা আছে
  • প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আলী রীয়াজ
  • প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ
  • জাতীয় নির্বাচন, গণভোট একই দিনে: প্রধান উপদেষ্টা
  • বৈঠকে বসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ, পরে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ
  • গণভোটে ৪টির বেশি প্রশ্ন রাখার চিন্তা সরকারের