এবার শব্দ হয়ে ওঠো
দ্ব্যর্থবোধক নয়; পরিপূর্ণ
একটিই শব্দ প্রকম্পন,
যেন পিনাক টংকার।
কাল দংশনে লুপ্ত পুরাণের
পাতায় পাতায় শব্দ হয়ে ওঠো।
অমরাবতীর মায়া প্রাচীর ভেদ করে
আরশ কাঁপিয়ে দশদিক
মর্ত্যলোকে সশব্দ গর্জনে
একটিই শব্দ হয়ে ওঠো।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২৬ টুকরা লাশ: নিহতের বন্ধুকে আসামি করে মামলা
ঢাকায় হাইকোর্ট–সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে ড্রাম থেকে রংপুরের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হকের ২৬ টুকরা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
আজ শুক্রবার আশরাফুলের বোন আনজিরা বেগম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় এই হত্যা মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে আশরাফুলের বন্ধু জরেজ মিয়াকে। হত্যাকাণ্ডে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের জড়িত থাকার কথাও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর।
পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার কিংবা হত্যাকাণ্ডের কারণ জানাতে পারেনি। ওসি খালেদ মনসুর বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজসহ তদন্তে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে হত্যাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
তবে মরদেহ গ্রহণের সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে আরজিনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘জরেজ মিয়া আমার ভাইকে খুন করেছেন। আমি জরেজের ফাঁসি চাই।’
জরেজ কী কারণে আশরাফুলকে হত্যা করেছেন, সে বিষয়ে কোনো ধারণা আরজিনাও দিতে পারেননি। তিনি বলেন, জরেজ গ্রেপ্তার হলে হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যাবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে নীল রঙের দুটি ড্রামে আশরাফুলের খণ্ড খণ্ড মরদেহ পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক পরিচয় শনাক্ত না হলেও পরে আঙুলের ছাপ নিয়ে আশরাফুলের পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ।
আশরাফুল হক (৪২) রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর ১০ বছরের এক মেয়ে ও সাত বছরের এক ছেলে রয়েছে। তাঁর বাবার নাম মো. আবদুর রশীদ।
স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী, বন্ধু জরেজ মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে তিন দিন আগে রংপুর থেকে ঢাকা এসেছিলেন কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হক। তারপর আশরাফুলের মুঠোফোনে কল করলে বারবার জরেজই ফোন ধরছিলেন।আজ সকালে পরিবারের সদস্যরা আশরাফুলের মরদেহ নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে যান। সেখানে বোন আনজিরা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আনজিরা বিলাপ করে বলেন, আশরাফুল কাঁচামালের ব্যবসা করতেন। তিনি ট্রাকে কাঁচামাল নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করতেন। গত মঙ্গলবার আশরাফুল তাঁর বাবাকে হাসপাতালে রেখে মালয়েশিয়াফেরত বন্ধু জরেজ মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় রওনা হয়েছিলেন।
ওই দিনই আশরাফুলের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল তা বোনের। তখন আশরাফুল বলেছিলেন যে তিনি নারায়ণগঞ্জে আছেন। তাঁর সঙ্গে জরেজও রয়েছেন। তাঁরা এক পাওনাদারের কাছে টাকা নিতে অপেক্ষা করছেন।
আনজিরা বলেন, ‘আশরাফুল বলেছিল, “বাবাকে হাসপাতালে রিলিজ দিবে, টাকাপয়সা দিছি। বাবাক নিয়া আইসো।” এরপর থাকি আশরাফুলকে কল দিলে তার বন্ধু জরেজ ধরে। আর বলে, “আশরাফুল ব্যস্ত আছে, কালেকশনে গেছে।”’
স্বজনেরা জানান, আশরাফুলের স্ত্রী লাকী বেগম গত বুধবার স্বামীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তখনো ফোন ধরেছিলেন জরেজ মিয়া। বলেছিলেন, আশরাফুল ‘কাজে ব্যস্ত’।
লাকী গতকাল দুপুরে কল দিলে আবার জরেজই ফোন ধরেন। তখন আশরাফুলের বোন আনজিরা যান জরেজের স্ত্রীর কাছে। আশরাফুলের স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী, জরেজের স্ত্রী ফোন দিলে তাঁর স্বামী বলেন, আশরাফুলের ফোন ড্রেনে কুড়িয়ে পেয়েছেন।
এরপর গতকাল বিকেলে আশরাফুলের স্বজনেরা রংপুরের বদরগঞ্জ থানায় গেলে জানতে পারেন, ঢাকায় নীল রঙের একটি ড্রামের ভেতর থেকে ২৬ টুকরা অবস্থায় আশরাফুলের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। খবর পেয়ে ঢাকায় রওনা হন তাঁরা। আজ সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।
আরও পড়ুনতিন দিন আগে বন্ধুর সঙ্গে ঢাকায় যান রংপুরের আশরাফুল, ড্রামে মিলল ২৬ টুকরা লাশ৭ ঘণ্টা আগে