দেশে নারীরা আবারও অন্ধকারে ফিরে যাচ্ছেন। নারীদের ঘরে ফিরিয়ে দিতে কর্মঘণ্টা কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। নারী কর্মপরিসরে কাজ করবে না ঘরে থাকবে—এটা একান্তই নারীর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।

আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক কর্মসূচিতে এ কথা বলেন নারীনেত্রী ও সমাজের সচেতন ব্যক্তিরা। এ সময় নারীরা সমস্বরে স্লোগান দেন—‘পাঁচ নয় আট, তুমি বলবার কে?’

‘নারীর ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও অসম্মান: প্রতিরোধে প্রস্তুত সচেতন নারী সমাজ’ শীর্ষক এই মৌন মিছিল ও সমাবেশের আয়োজক ছিল নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম। এ সময় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নারীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে নারীর প্রতি অসম্মান ও সহিংসতার প্রতিবাদ জানান।

কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

দেশে একটি দল ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়ে ব্যবসা করছে অভিযোগ তুলে এই বিএনপি নেতা বলেন, তাদের হাতে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে। তারা চায়, এ দেশের নারীরা যেন অন্দরমহলে বন্দী থাকে। যেন বাংলাদেশে অর্ধেক জনসমষ্টি অন্ধকারে থাকে। নারীর অগ্রগতি-উন্নতি যেন না হয়। সে জন্য তারা বলছে, কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিতে হবে। কিন্তু কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিলে নারীদের কর্মসংস্থান কমে যাবে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, গত ১৭ বছর নারীরা যেভাবে খুন-ধর্ষণের শিকার হতেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটবে। নারীরা তাঁদের মর্যাদা ফিরে পাবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দেশে আজ আবার নারীরা অন্ধকারে ফিরে যাচ্ছেন। নারীদের ঘরে ফিরিয়ে দিতে কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কাজেই অধিকার আদায়ে নারীদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। মর্যাদা ফিরে পেতে নারীদের সমস্বরে আওয়াজ দিতে হবে।’

নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত সমাবেশের অতিথিরা.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিআইডব্লিউটিএ’র প্রশিক্ষণার্থীদের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বিষয়ে সচেতন করার উদ্যোগ

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিএ) ও ডেভলপমেন্ট এ্যাকটিভিটিস অফ সোসাইটি (ডাস) এর যৌথ উদ্যোগে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বিষয়ে প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ (টিওটি) অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ’র ৩০ জন প্রশিক্ষক এই প্রশিক্ষক-প্রশিক্ষণে অংশ নেন।   বৃহস্পতিবার সকালে ডেক এন্ড ইঞ্জিন পার্সোনেল ট্রেনিং সেন্টার (ডিইপিটিসি), বন্দর, নারায়ণগঞ্জের সভাকক্ষে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

পাবলিক পরিবহনে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছাড়াও চালক ও অন্যন্য স্টাফগণ মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। এজন্য দরকার চালক ও স্টাফগণের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং নিজেদেরকে অধূমপায়ী হওয়া। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ চালকদের যেমন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে পারে তেমনি চালক ও অন্যন্য স্টাফ নিয়োগ ও প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচনে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছাও দরকার বলে মনে করেন বক্তারা। 

ডেক এন্ড ইঞ্জিন পার্সোনেল ট্রেনিং সেন্টার (ডিইপিটিসি), বন্দর, নারায়ণগঞ্জের এর প্রধান শিক্ষক মো: লুৎফর রহমান খান এর সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাস এর টীমলীড আমিনুল ইসলাম বকুল, বিইআর এর প্রকল্প পরিচালক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এ কর্মরত ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব।

কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন ডাস এর প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর মোয়াজ্জেম হোসেন টিপু। কর্মশালাটির প্রথমাংশে তামাক সেবন ও ধূমপানের ক্ষতিকর দিকসমূহ এবং দ্বিতীয়াংশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও দন্ড বিধি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং অংশগ্রহণকারীদেও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেয়া হয়। কর্মশালা শেষে সকল অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়।

বক্তারা তাদের বক্তব্যে প্রশিক্ষকদেরকে আরও বেশী তামাকমুক্ত আইন ও তার কূফল সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন। তারা বলেন, সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই নিজস্ব সচেতনতাই পারে
নিজেকে তামাকমুক্ত জীবন গড়তে সহায়তা করতে।

তারা আশ্বাস প্রদানের সাথে বলেন, আগামীতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহের সকল কোর্সেই ভর্তির সময় ধূমপায়ীদেরকে ভর্তি না করে এনফোর্সমেন্ট এর বিষয়টা গুরুত্ব দেবে বিআইডব্লিউটিএ। প্রয়োজনে যে কোনো কোর্সের শুরুতে এবং কোর্স সমাপ্তির পরে দু’টি সার্ভে করে ছাত্র-ছাত্রীদের ধূমপানের অবস্থা যাচাই করারও পরামর্শ দেন তারা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ