দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদের যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এরশাদ হালিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর শ্যাওড়াপাড়ার নিজ বাসা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

পরে রাতেই ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় যৌন নিপীড়ন ও মারধরের অভিযোগ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আজ শুক্রবার ওই শিক্ষককে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

অধ্যাপক এরশাদ হালিমের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়ে গতকাল ফেসবুকে লিখতে থাকেন তাঁর বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে গতকাল রাতে টিএসসিতে সাংবাদিক সমিতিতে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাঁরা অবিলম্বে এই শিক্ষককে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এর মধ্যে একজন শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথা জানিয়ে তার বিস্তারিত বিবরণ ফেসবুকে তুলে ধরেন। পরে রাতেই শিক্ষককে তাঁর বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।

অধ্যাপক এরশাদ হালিমের বিচার দাবিতে সোচ্চার হওয়া শিক্ষার্থীদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ফজলুল হক মুসলিম হল সংসদের সহসভাপতি আবু নাঈম। তিনি আজ শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেছেন, এখন পর্যন্ত ১২ জন শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথা তাঁদেরকে জানিয়েছেন।

এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উনার নিপীড়নের শিকার হয়েছেন দাবি করে আবু নাঈদ বলেন, ‘নিপীড়নের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ঠিক কত তা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। বিষয়টি সামনে আসার পর অন্তত ১২ জন ছাত্র তথ্য–প্রমাণসহ তার এমন কার্যকলাপের বিষয়ে আমাদেরকে জানিয়েছেন। প্রতিদিনই নতুন কেউ না কেউ জানাচ্ছেন।’

শিক্ষকের নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ওই শিক্ষার্থী বলেছেন, তিনি পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি সমস্যায় পড়েছিলেন। সেটা ঠিক করে দেওয়ার কথা বলে তাঁকে ওই শিক্ষক তাঁর শ্যাওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নেন। আলাপচারিতার এক পর্যায়ে ওই শিক্ষক তাঁকে যৌন নিপীড়ন করেন এবং বিষয়টি যাতে প্রকাশ না করেন সেজন্য ভয়–ভীতি দেখান। এরপরেও কয়েকবার ওই শিক্ষার্থীকে ভয়–ভীতি দেখিয়ে শ্যাওড়াপাড়ার বাসায় নিয়ে তিনি যৌন নিপীড়ন ও মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ আসার পর ওই শিক্ষককে সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পুলিশ ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে।

আদালতে শিক্ষককে নির্দোষ দাবি

আজ বিকেলে অধ্যাপক এরশাদ হালিমকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক মেহেদী হাসান। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী শ্যামল কুমার রায় তাঁর জামিন চান। শুনানিতে তিনি বলেন, তাঁর মক্কেল নির্দোষ। মূলত কয়েক মাস পর তাঁর বিভাগীয় প্রধান হওয়ার সুযোগ আসছে। সেজন্য

অন্য শিক্ষকেরা তাঁকে ফাঁসিয়েছে। তাঁর স্ত্রী ও অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া সন্তান আছে উল্লেখ করে তিনি কেন এসব করবেন, সেকথা বলা হয়।

শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে এরশাদ হালিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

ছাত্রদের যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এরশাদ হালিমের শাস্তি দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে টিএসসিতে সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওই শ ক ষ শ ক ষকক ন কর ন গতক ল হওয় র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনের সড়কে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় একজন পথচারী আহত হয়েছেন এবং রাস্তার পাশে থাকা একটি মোটরসাইকেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত মোটরসাইকেলের মালিক নাজমুস সাকিব জানান, তিনি ফুটপাথের পাশে বসে চা খাচ্ছিলেন। হঠাৎ একটি ককটেল ছুটে এসে এখানে পড়ে। এতে তাঁর মোটরসাইকেলের তেলের ট্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে এ ঘটনায় আহত ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় জানা যায় যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা প্রথম আলোকে বলেন, সম্ভবত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশ থেকে টিএসসিতে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, ধারণা করা হচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে কেউ একজন ককটেলগুলো ছুড়েছে। সেখানে প্রক্টোরিয়াল টিম পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে অভিযান চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করা হচ্ছে।

রাত সোয়া ৮টার দিকে ঘটনাটি ঘটে বলে জানান শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর। তিনি বলেন, ‘বাংলা একাডেমির গেটে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আমরা অনুমান করছি দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে এসে ককটেল বিস্ফোরণের পর পালিয়ে গেছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অমিতাভ রেজার বিয়ে
  • ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার ব্যাপক হামলা
  • দিল্লির বিস্ফোরণের ঘটনায় সন্দেহভাজন নবীর বাড়ি গুঁড়িয়ে দিল ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী
  • কল করে ‘কাকন বাহিনী’র প্রধান বললেন, তিনি প্রকৌশলী, ইজারা নিয়ে বালুর ব্যবসা করছেন
  • থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে আবারো উত্তেজনা
  • স্থপতি থেকে অভিনেতা হোমায়ুন এরশাদি
  • সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা
  • জেফরি এপস্টেইনের ব্যক্তিগত ইমেইলে একাধিকবার ট্রাম্পের নাম
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ