জয় বাংলা বলায় কাউকে গ্রেপ্তার করলে আমাকে প্রথমে করেন: কাদের সিদ্দিকী
Published: 14th, November 2025 GMT
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘আজ থেকে বলব, আমাদের লোকেরা সব সময় জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলবে। যদি জয় বাংলা বলা কোনো অপরাধ হয়ে থাকে, জয় বাংলা বললে কাউকে যদি গ্রেপ্তার করতে হয়, তাহলে আমাকে প্রথমে করেন। তারপর বাকি যাঁরা বলবেন, তাঁদের করেন।’
আজ শুক্রবার দুপুরে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ছাতিহাটি গ্রামে মা–বাবার কবর জিয়ারতের পর এক সমাবেশে কাদের সিদ্দিকী এ কথা বলেন। এর আগে বড় ভাই আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর কারামুক্তির পর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আজ মা–বাবার কবর জিয়ারত করতে আসেন তিনি।
এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘দেশের সংখ্যাগুরু ভোটার যদি ভোটে অংশগ্রহণ করতে না পারে, আমরা সেই ভোটে যাব না। আজ প্রায় ১৫ মাস অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। দেশ সম্পর্কে কথা বলতে একবারের জন্যও আমাদের ডাকে নাই। কাল চিঠি পেলাম, একবার ভেবেছিলাম সরকারের ডাক এসেছে। পরে দেখলাম, নির্বাচন কমিশন ডেকেছে। সরকার ডাকলে যেতাম না। নির্বাচন কমিশন ডেকেছে, তাদের কথাগুলো বলে আসব।’
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘সামনে নির্বাচনটা চাই, সব মানুষের অংশগ্রহণে। মানুষ যেন সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে। যেকোনো ভোটার যেন বলতে পারে আমি ভোট দিয়েছি।’
এ সময় লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি বজ্রর (কাদের সিদ্দিকীর ডাকনাম) সাথে একমত। আল্লাহর অপার করুণা, আমরা দুজন আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হয়েছি। না হলে আজকে আমরা ঘৃণিত হতাম। আমি জেলে গিয়ে দেখেছি, দেশের বড় বড় কুতুবরা ৫ আগস্টের আগে যে ভাব করত, তাদের সেই ভাব ধ্বংস হয়ে গেছে। আল্লাহ ওই সব ভাববাদীদের পছন্দ করেন না।’
দুপুরে কালিহাতী উপজেলা সদরে লতিফ সিদ্দিকীর বাড়ির সামনে থেকে কয়েক শ মোটরসাইকেল ও গাড়িবহর নিয়ে তাঁর সমর্থকেরা ছাতিহাটি গ্রামের দিকে রওনা হন। বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তাঁরা কালিহাতী পর্যন্ত যান। সেখানে জুমার নামাজ শেষে কাদের সিদ্দিকী ও লতিফ সিদ্দিকী তাঁদের মা–বাবার কবর জিয়ারত করেন। পরে সমাবেশে বক্তব্য দেন। এ সময় লতিফ সিদ্দিকীর স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য লায়লা সিদ্দিকী, তাঁদের ছোট ভাই ও কালিহাতী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজাদ সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মৃত্যুদণ্ড থেকে ফিরে নির্বাচন করব স্বপ্নেও ভাবিনি: বাবর
১৭ বছরের কারাভোগের পর আবারো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাওয়াকে জীবনের অবিশ্বাস্য ফিরে আসা হিসেবে উল্লেখ করেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।
তিনি বলেছেন, ‘‘মৃত্যুদণ্ড থেকে ফিরে মনোনয়ন পাব, নির্বাচন করব; এটা স্বপ্নেও ভাবিনি। এটা সম্ভব হয়েছে আপনাদের দোয়া, ভালোবাসা ও বিশ্বাসের কারণে।’’
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো নিজ এলাকা নেত্রকোণার মদনে পৌঁছালে স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে গণসংবর্ধনা প্রদান করেন। সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
লুৎফুজ্জামান বাবর বলেন, ‘‘আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষ আমার জন্য দোয়া করেছে, রোজা রেখেছে; নামাজ পড়েছে। তাদের এই ঋণ আমার জীবনের বড় পাওয়া।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আল্লাহর রহমত আর জনগণের আস্থার কারণে আজ আমি রাজনীতিতে ফিরে আসতে পেরেছি। পাশাপাশি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’’
উল্লেখ্য, প্রায় ১৭ বছরের কারাভোগের পর চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি দুপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান লুৎফুজ্জামান বাবর। এর আগে, ওই দিন সকালে লুৎফুজ্জামান বাবরের চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা থেকে উচ্চ আদালতে খালাস পাওয়ার চিঠি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আসে।
তার আগে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সাজা থেকে খালাস পান তিনি। এর আগে, গত বছরের ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় আট বছরের দণ্ড থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পান বাবর। এ ছাড়া দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন আটটি মামলায় জামিন পান তিনি।
ঢাকা/ইবাদ/রাজীব