ব্রাজিলের বিশ্বকাপ দলে কি সুযোগ পাবেন নেইমার
Published: 17th, November 2025 GMT
২০১০ সালের কথা। নেইমার তখন সান্তোসে। দরিভাল জুনিয়র ক্লাবটির কোচ। একটি ম্যাচে মাঠ থেকে নেইমারকে তুলে নেন দরিভাল। বেঞ্চে বসে সবার সামনেই কোচের ওপর ক্ষোভ উগরে দেন নেইমার। ১৮ বছর বয়সী নেইমার তখন মাঠে প্রায় অপ্রতিরোধ্য ও তুখোড় ফুটবলার। ব্রাজিলিয়ানরা তাতে মজেছিলেন। সে কারণে নেইমার নয়, দরিভালকে তাঁর সিদ্ধান্তের কারণে দাঁড়াতে হয় কাঠগড়ায়।
১৫ বছর পরের কথা।
মারাকানায় গত সোমবার ফ্ল্যামেঙ্গো-সান্তোস ম্যাচ চলছিল। দৃশ্যপটে খানিকটা পরিবর্তন। নেইমার সেই আগের মানুষটি আর নেই। ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের শরীর আগের চেয়ে আরেকটু ভারী ও গতি কমেছে। অতীতের সেই ঝলকও আগের মতো আর পায়ে ফোটে না। কিন্তু সান্তোস কোচ হুয়ান পাবলো ভয়ভোদা তাঁকে বদলি হিসেবে তুলে নিতেই বাধল বিপত্তি। নেইমার রেগে কাঁই। কোচ তাঁকে তুলে নেওয়ায় রাগটা ঝাড়লেন সবার সামনেই।
তখন দেখে মনে হয়েছে, নেইমার আসলে কোচ নয়, সান্তোস নয়, লড়ছিলেন এমন এক বাস্তবতার সঙ্গে যেটা তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। বয়স! ৩৩ বছর বয়সী নেইমার মানতেই পারছিলেন না, তাঁর এখন বয়স হয়েছে। অবনমনের শঙ্কায় পড়া একটি ক্লাবের জন্য তাঁকে নিষ্ফলা হিসেবে পুরো সময় খেলানো বিলাসিতা। ব্রাজিল জাতীয় দলের জন্যও কি এই মুহূর্তে ব্যাপারটি খুব মিথ্যা?
জাতীয় দলের প্রসঙ্গে আসার আগে সেই ম্যাচে নেইমারের দুটি মন্তব্য উল্লেখ না করলেই নয়। বিরতির সময় সতীর্থদের বলেছেন, ‘ফাইনাল থার্ডে (আক্রমণভাগ) আমাকে বেশি বেশি খুঁজতে হবে। গোল করার এটাই একমাত্র পথ।’
কথাটি ভাঙলে বোঝা যায় বিষয়টি আসলে এমন—সান্তোসকে গোল পাইয়ে দেওয়ার একমাত্র পথ হলো অ্যাটাকিং থার্ডে নেইমারকে বেশি বেশি পাস দেওয়া। এই কথার আরেকটি অর্থ হতে পারে এমন, প্রতিপক্ষের বক্সের চারপাশে খেলার আগের সেই ধার ও শারীরিক সামর্থ্য আর নেই নেইমারের। এ কারণে গোল বানানো ও গোল করার দায়িত্ব তাঁর যতটা, সতীর্থদের তাঁকে খুঁজে বের করে গোল করানোর দায়িত্বটা আরও বেশি। বিশ্বাস হয় এটা নেইমারের কথা!
বদলি হয়ে উঠে আসার সময় কোচকে নেইমার বলেছেন, ‘আমাকে তুলে নিচ্ছ নাকি?’ তখন ম্যাচের ৮৫ মিনিট। সান্তোস ৩-০ গোলে পিছিয়ে। কাগজে-কলমে দলের সেরা তারকাকে এমন সময়ে কোচ যদি তুলে নেন, তাহলে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায় গোলের জন্য সান্তোস কোচ আর নেইমারের ওপর ভরসা রাখেন না। সান্তোস ম্যাচটি হারলেও নেইমার উঠে যাওয়ার পর দুই গোল করেছে।
আরও পড়ুন৯-১ গোলে জিতে নবমবারের মতো বিশ্বকাপে রোনালদোর পর্তুগাল৮ ঘণ্টা আগেএবার ১৫ বছর আগে-পরের দৃশ্যপটে ফেরা যাক। ২০১০ সালের সেই সময়ে গোটা ব্রাজিল ছিল নেইমারের পক্ষে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে নেইমারের পক্ষে প্রায় কেউ নেই। ব্রাজিলজুড়ে তাঁর অমন আচরণের তুমুল সমালোচনা হয়েছে। নির্মম বাস্তবতা হলো, ব্রাজিলিয়ানরা তাদের সোনার ছেলেটির ওপর আস্থা রাখেন না। কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর আপনার জানা থাকলেও ব্রাজিলিয়ান খ্যাতিমান সাংবাদিক জুকা কাফুরির মুখে শুনতে পারেন, ‘আমার ৫৫ বছরের ক্যারিয়ারে নেইমার প্রতিভার সবচেয়ে বড় অপচয়।’
এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে ফেরা যাক।
ব্রাজিলের জার্সিতে সর্বশেষ ২০২৩ সালে খেলেছেন নেইমার.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল কর
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাজিলের বিশ্বকাপ দলে কি সুযোগ পাবেন নেইমার
২০১০ সালের কথা। নেইমার তখন সান্তোসে। দরিভাল জুনিয়র ক্লাবটির কোচ। একটি ম্যাচে মাঠ থেকে নেইমারকে তুলে নেন দরিভাল। বেঞ্চে বসে সবার সামনেই কোচের ওপর ক্ষোভ উগরে দেন নেইমার। ১৮ বছর বয়সী নেইমার তখন মাঠে প্রায় অপ্রতিরোধ্য ও তুখোড় ফুটবলার। ব্রাজিলিয়ানরা তাতে মজেছিলেন। সে কারণে নেইমার নয়, দরিভালকে তাঁর সিদ্ধান্তের কারণে দাঁড়াতে হয় কাঠগড়ায়।
১৫ বছর পরের কথা।
মারাকানায় গত সোমবার ফ্ল্যামেঙ্গো-সান্তোস ম্যাচ চলছিল। দৃশ্যপটে খানিকটা পরিবর্তন। নেইমার সেই আগের মানুষটি আর নেই। ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের শরীর আগের চেয়ে আরেকটু ভারী ও গতি কমেছে। অতীতের সেই ঝলকও আগের মতো আর পায়ে ফোটে না। কিন্তু সান্তোস কোচ হুয়ান পাবলো ভয়ভোদা তাঁকে বদলি হিসেবে তুলে নিতেই বাধল বিপত্তি। নেইমার রেগে কাঁই। কোচ তাঁকে তুলে নেওয়ায় রাগটা ঝাড়লেন সবার সামনেই।
তখন দেখে মনে হয়েছে, নেইমার আসলে কোচ নয়, সান্তোস নয়, লড়ছিলেন এমন এক বাস্তবতার সঙ্গে যেটা তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। বয়স! ৩৩ বছর বয়সী নেইমার মানতেই পারছিলেন না, তাঁর এখন বয়স হয়েছে। অবনমনের শঙ্কায় পড়া একটি ক্লাবের জন্য তাঁকে নিষ্ফলা হিসেবে পুরো সময় খেলানো বিলাসিতা। ব্রাজিল জাতীয় দলের জন্যও কি এই মুহূর্তে ব্যাপারটি খুব মিথ্যা?
জাতীয় দলের প্রসঙ্গে আসার আগে সেই ম্যাচে নেইমারের দুটি মন্তব্য উল্লেখ না করলেই নয়। বিরতির সময় সতীর্থদের বলেছেন, ‘ফাইনাল থার্ডে (আক্রমণভাগ) আমাকে বেশি বেশি খুঁজতে হবে। গোল করার এটাই একমাত্র পথ।’
কথাটি ভাঙলে বোঝা যায় বিষয়টি আসলে এমন—সান্তোসকে গোল পাইয়ে দেওয়ার একমাত্র পথ হলো অ্যাটাকিং থার্ডে নেইমারকে বেশি বেশি পাস দেওয়া। এই কথার আরেকটি অর্থ হতে পারে এমন, প্রতিপক্ষের বক্সের চারপাশে খেলার আগের সেই ধার ও শারীরিক সামর্থ্য আর নেই নেইমারের। এ কারণে গোল বানানো ও গোল করার দায়িত্ব তাঁর যতটা, সতীর্থদের তাঁকে খুঁজে বের করে গোল করানোর দায়িত্বটা আরও বেশি। বিশ্বাস হয় এটা নেইমারের কথা!
বদলি হয়ে উঠে আসার সময় কোচকে নেইমার বলেছেন, ‘আমাকে তুলে নিচ্ছ নাকি?’ তখন ম্যাচের ৮৫ মিনিট। সান্তোস ৩-০ গোলে পিছিয়ে। কাগজে-কলমে দলের সেরা তারকাকে এমন সময়ে কোচ যদি তুলে নেন, তাহলে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায় গোলের জন্য সান্তোস কোচ আর নেইমারের ওপর ভরসা রাখেন না। সান্তোস ম্যাচটি হারলেও নেইমার উঠে যাওয়ার পর দুই গোল করেছে।
আরও পড়ুন৯-১ গোলে জিতে নবমবারের মতো বিশ্বকাপে রোনালদোর পর্তুগাল৮ ঘণ্টা আগেএবার ১৫ বছর আগে-পরের দৃশ্যপটে ফেরা যাক। ২০১০ সালের সেই সময়ে গোটা ব্রাজিল ছিল নেইমারের পক্ষে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে নেইমারের পক্ষে প্রায় কেউ নেই। ব্রাজিলজুড়ে তাঁর অমন আচরণের তুমুল সমালোচনা হয়েছে। নির্মম বাস্তবতা হলো, ব্রাজিলিয়ানরা তাদের সোনার ছেলেটির ওপর আস্থা রাখেন না। কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর আপনার জানা থাকলেও ব্রাজিলিয়ান খ্যাতিমান সাংবাদিক জুকা কাফুরির মুখে শুনতে পারেন, ‘আমার ৫৫ বছরের ক্যারিয়ারে নেইমার প্রতিভার সবচেয়ে বড় অপচয়।’
এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে ফেরা যাক।
ব্রাজিলের জার্সিতে সর্বশেষ ২০২৩ সালে খেলেছেন নেইমার