যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মাদক সম্রাট ‘এল চাপো’র ছেলের মাদক মামলায় দোষ স্বীকার
Published: 2nd, December 2025 GMT
মেক্সিকোর কুখ্যাত মাদক সম্রাট হোয়াকিন ‘এল চাপো’ গুজমানের এক ছেলে সোমবার শিকাগোর একটি আদালতে মাদক পাচারের অভিযোগে দোষ স্বীকার করেছেন। কম সাজা পাওয়ার বিনিময়ে মার্কিন প্রসিকিউটরদের সহযোগিতা করার সমঝোতার অংশ হিসেবে তিনি এ দোষ স্বীকার করেন।
কারাগারে থাকা সিনালোয়া কার্টেল নেতা গুজমানের চার ছেলের মধ্যে একজন হোয়াকিন গুজমান লোপেজ মাদক পাচার এবং একটি অপরাধমূলক উদ্যোগে জড়িত থাকার অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন। আদালতের নথি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে টেক্সাসে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি শুরুতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন। কিন্তু এবার সেই অবস্থান থেকে সরে এলেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির দেখা আদালতে জমা দেওয়া সমঝোতা নথি অনুযায়ী, প্রসিকিউটররা সম্মত হয়েছেন যে, লোপেজের সহযোগিতার মাত্রার ওপর নির্ভর করে বিচারক তাঁকে মাদকসংক্রান্ত অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে রেহাই দিতে পারেন।
লোপেজের সাজা বিচারক পরে ঘোষণা করবেন। তবে অপরাধের মাধ্যমে অর্জিত ৮ কোটি ডলার অর্থদণ্ড তাঁকে দিতেই হবে।
লোপেজের অন্য তিন ভাইয়ের মধ্যে ওভিদিও গুজমান কম সাজার বিনিময়ে করা একটি সমঝোতার অংশ হিসেবে ২০২৫ সালের জুলাইয়ে মাদক পাচারসংক্রান্ত ষড়যন্ত্র এবং একটি অপরাধমূলক উদ্যোগে অংশ নেওয়ার দুটি অভিযোগে দোষ স্বীকার করেন।
ওভিদিও গুজমান আরও স্বীকার করেছিলেন, তিনি ও তাঁর ভাইয়েরা, যাঁরা ‘লস চাপিতোস’ নামে পরিচিত; তাঁরা বাবার মাদক চক্রের (কার্টেল) দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
৬৮ বছর বয়সী ‘এল চাপো’ ২০১৬ সালে গ্রেপ্তারে হন। পরে ২০১৯ সালে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোর একটি ফেডারেল কারাগারে যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করছেন।
এ ছাড়া ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটন ডিসির বাইরে ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ‘এল চাপো’র স্ত্রী এমা করোনেল আইপুরোকে গ্রেপ্তার করে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। তাঁর বিরুদ্ধে কোকেন, মেথামফেটামিন, হেরোইন, গাঁজা পাচারের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়।
আরও পড়ুনমেক্সিকোর মাদকসম্রাট ‘এল চাপো’র স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১আরও পড়ুনমেক্সিকোর মাদকসম্রাট এল চাপোর ছেলে গ্রেপ্তার, দফায় দফায় সংঘর্ষে সেনাসহ নিহত ২৯০৭ জানুয়ারি ২০২৩.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ ষ স ব ক র কর এল চ প
এছাড়াও পড়ুন:
‘অসুস্থ মায়ের পাশে থাকতে না পারা কত যন্ত্রণার, সেটা সন্তানই বুঝতে পারে’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘‘আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মারাত্মক অসুস্থ। অথচ এই সময়ে তারেক রহমান আসতে পারছেন না। এ যে কত যন্ত্রণার, তা সন্তান ছাড়া কেউ বুঝবে না।’’
রবিবার (৩০ নভেম্বর) বিকালে নয়াপল্টন আনন্দ কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এক দোয়া মাহফিল প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চাইলেন ডিপজল
খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় বিএনপির দুই কর্মসূচি স্থগিত
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘তবে আপনাকে (তারেক রহমান) আশ্বস্ত করতে চাই, আমরা উনাকে (খালেদা জিয়া) বুঝতে দিবো না- তার সন্তান অনেক দূরে। উনি আমাদের সকলের মা। আমরা লাখো সন্তান আছি।’’
শনিবার (২৯ নভেম্বর) ও আজ রবিবার (৩০ নভেম্বর) সারা দেশে দলমত, জাতিধর্ম নির্বিশেষে সবাই দেশনেত্রীর জন্য দোয়া করেছেন বলে জানান দলের এই সিনিয়র নেতা।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘শহীদ জিয়াউর রহমান যদি দেশে গণতন্ত্র প্রবর্তন না করতেন আর খালেদা জিয়া যদি গণতন্ত্র লালন না করতেন, তাহলে এ দেশ গণতন্ত্রের সুবাতাস পেত না। এ দেশে যখনই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, তখনই দেশের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে। ১৯৯১ সালে যখন বিএনপি ক্ষমতায় আসে তখনো শেখ হাসিনা বলেছিলেন, একদিনের জন্য শান্তিতে থাকতে দেবেন না। তিনি তাই করেছিলেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘আজ একটি দল দেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে। তারা ধর্মীয়ভাবে দেশে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। মা-বোনকে বিভ্রান্ত করছে। এরা কাদিয়ানীর দ্বিতীয় সংস্কার। এরা বলেন- পুলিশ ও প্রশাসনকে আমাদের কথা মতো চলতে হবে। কথামতো ছাড়তে হবে। এ দলটি কখনই দেশের মঙ্গল চায়নি। ৪৭ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, ৭১ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে।’’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘‘বিএনপি একমাত্র দল সকল ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। বিএনপির হাতে দেশ ও জনগণ নিরাপদ। যারা মুসলমানের লেবাস পড়ে মন্দিরে গিয়ে নাচানাচি করে, তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।’’ জামায়াত আমীরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘তার মাঝে দেশপ্রেম আছে কি-না জানা নেই। থাকলে দেশে বিভ্রান্তি ছড়াতেন না।’’
তিনি বলেন, ‘‘শহীদ জিয়া বলেছিলেন, জাতিকে বিভক্ত রেখে দেশের উন্নয়ন করা যাবে না। সকল বিভাজন থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হবে।’’
আব্বাস বলেন, ‘‘খালেদা জিয়া বলেছিলেন, বিদেশে আমার বন্ধু আছে, প্রভু নেই। তিনি কখনো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। দেশ ও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি আজ হাসপাতালে। উনাকে কারাগারে রেখে অপচিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দেশ ও জাতির প্রয়োজনে তাকে ভীষণ প্রয়োজন। তাই পুরো জাতি আজ তার সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেছেন।’’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এছাড়া ঢাকা মহানগরের বিভিন্নস্তরের নেতাকর্মীরাও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/বকুল