জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা যেই সংস্কার অগ্রযাত্রা শুরু করেছিলাম, সেখানে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। একটি দল প্রকাশ্যে সংস্কারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, আরেকটি দল গোপনে সংস্কারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সেজন্য সংস্কার নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগের পর ২৪ জনের দেশে ফিরে আসা উপলক্ষে দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, “এনসিপি গণঅভ্যুত্থান থেকে উঠে আসা একটি রাজনৈতিক দল। আমরা কখনো বলিনি গণঅভ্যুত্থান এনসিপির। যদিও এমন অভিযোগ অনেকেই করে থাকেন। কিন্তু জুলাইয়ের শহীদ পরিবার, আহতদের দায়িত্ব নেওয়ার প্রসঙ্গ আসে কিংবা এই কারাবন্দি প্রবাসীরা এতদিন ধরে রাস্তায় রাস্তায় দৌড়াচ্ছেন, কোনো অফিসে অথবা দলের কাছে গেলে তাদেরকে বলা হতো এটা এনসিপির দায়িত্ব।”

নাহিদ ইসলাম বলেন, “ছাত্র-জনতা মিলেই গণঅভ্যুত্থান সফল করেছিল। ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল রাজনৈতিক দলের ছাত্রনেতাদের এখানে অবদান রয়েছে, তারা রাজপথে ছিলেন। অথচ অভ্যুত্থানের ফসল নেওয়ার বেলায় কিন্তু সবাই এগিয়ে আসে। এটার ফসল বিএনপি-জামায়াত সমানভাবে নিচ্ছে। এমনকি আগামী নির্বাচনেও তারা সেই ধরনের একটা বন্দোবস্ত তৈরি করছে।”

কারাবন্দি প্রবাসীদের বিষয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “আরো আগে তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। তাদের পরিবারগুলোকে বিভিন্নভাবে কষ্ট করতে হয়েছে। এই প্রবাসীরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধা। তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করা সকলের দায়িত্ব। সরকার পতন না হলে তারা কোনোদিন মুক্তি পেত না। নিশ্চিত ঝুঁকি জেনেও তারা রাজপথে নেমেছিল। তাদের অবদান সারাজীবন মনে রাখবো। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থার জন্য সরকারের কাছে আবেদন থাকবে।” 

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচনের মাধ্যমে পিসফুল ট্রানজিশন: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হলে আসন্ন নির্বাচনের মাধ্যমেই একটি পিসফুল ট্রানজিশন ঘটাতে হবে বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। 

তিনি বলেন, “সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে দেশ ও বিশ্ব বুঝবে—বাংলাদেশ স্থিতিশীলতার পথে যাচ্ছে। আর নির্বাচন শান্তিপূর্ণ না হলে অস্থিরতা থেকে যাবে, যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য বড় ঝুঁকি।”

শনিবার (২৯ নভেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে ‘চতুর্থ বাংলাদেশ অর্থনীতি সম্মেলন ২০২৫’-এ বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “গত ১৬ বছরে দেশের অর্থনৈতিক যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা রাতারাতি বদলানো সম্ভব নয়। এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা বড় ধরনের অর্থনৈতিক পরিবর্তনও বাস্তবসম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। তবে সমাজকে ইতিবাচক সংকেত দিতে হবে যে সরকার সেই পথেই এগোচ্ছে। শিক্ষা সংস্কারে দক্ষতাভিত্তিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে তরুণদের কর্মসংস্থানের জটিলতা অনেকটাই সমাধান হবে।”

তিনি বলেন, “২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে জনগণ—বিশেষত তরুণরা—অর্থনৈতিক অনুপ্রেরণা ও আকাঙ্ক্ষা থেকেই রাস্তায় নেমেছিল। গণঅভ্যুত্থানের মূল প্রেক্ষাপট বুঝতে হলে এর আগের ফ্যাসিবাদী সময়ের অর্থনৈতিক কাঠামো—লুটতরাজ, ব্যাংক লোপাট, অর্থ পাচার এবং অলিগার্ক-চক্রের উত্থান—এসব আলোচনা করতে হবে। এই বৈষম্যই গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্লোগানকে জনপ্রিয় করেছে।” 

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “আন্দোলনটি চাকরির দাবিতে হলেও এর পেছনে বৈষম্যের দীর্ঘ পটভূমি ছিল। তাই আন্দোলনের নাম রাখা হয় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’, যাতে বৃহত্তর জনগণের সঙ্গে সংযোগ তৈরি হয়। সে সময় শ্রমিক মজুরি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কর্মসংস্থানের মতো বৃহত্তর দাবিও ছিল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।” 

তিনি আরো বলেন, “ফ্যাসিবাদী সময়ের বৈষম্যমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে তরুণরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পড়াশোনা শেষে উপযুক্ত বা মর্যাদাপূর্ণ চাকরি না পাওয়া এবং সরকারি চাকরিতে কোটানির্ভর বৈষম্য—এসব থেকেই তাদের ক্ষোভ জমতে থাকে, যার বিস্ফোরণ ঘটে গণঅভ্যুত্থানে।” 

নাহিদ ইসলাম বলেন, “গত এক দশকের তিনটি বড় ছাত্র আন্দোলন—প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলন—গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অর্থনৈতিক চাপ ও বৈষম্যই এসব আন্দোলনের ভিত্তিকে আরো শক্ত করেছে।” 

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচনের মাধ্যমে পিসফুল ট্রানজিশন: নাহিদ ইসলাম