দেশে মধ্যরাতে আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ৪ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানার সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মায়ানমারের মিনজিন এলাকায়। উৎপত্তিস্থলটি ঢাকা থেকে দক্ষিণ–পূর্ব দিকে প্রায় ৪৩১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ফলে কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামসহ অঞ্চলে কয়েক সেকেন্ড কম্পন অনুভূত হয়।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ১০৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার গভীরে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত ও মিয়ানমারে কম্পন অনুভূত হয়েছে।
ইউএসজিএস আরো জানায়, ভূমিকম্পটি তুলনামূলকভাবে ‘হালকা’ মাত্রার হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য তারা পায়নি। সংস্থাটির প্রাথমিক বিশ্লেষণে কোনো সম্ভাব্য আফটারশক বা আঞ্চলিক ঝুঁকি সম্পর্কে আলাদা সতর্কতা জারি করা হয়নি।
এর আগে গত ২১ নভেম্বর সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে দেশে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদীতে। এতে বিভিন্ন ভবনে ফাটল ধরে এবং ১০ জনের প্রাণহানী হয়। এছাড়া, ২২, ২৩ ও ২৬ নভেম্বর দেশে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ঢাকা/রেজাউল/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বে কি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বাড়ছে
ইন্দোনেশিয়া ও ইথিওপিয়ায় মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে দুটি বড় আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত হওয়ায় বিশ্বজুড়ে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা বাড়ছে বলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেকে। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দুটি অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্নও তৈরি হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা বৃদ্ধির কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। বিশ্বজুড়ে প্রায় ১ হাজার ৩৫০টি সম্ভাব্য সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। বর্তমানে পর্যবেক্ষণপদ্ধতি উন্নত হওয়ায় আগের তুলনায় মনে হচ্ছে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট সেমেরু আগ্নেয়গিরিতে মাত্র চার বছরের ব্যবধানে গত ২২ নভেম্বর দ্বিতীয়বারের মতো অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে। অপরদিকে ইথিওপিয়ার হায়লি গুব্বি আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে প্রথমবারের মতো। দুটি আগ্নেয়গিরিতেই বড় ধরনের অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে।
ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভের (ইউএসজিএস) তথ্য মতে, পৃথিবীর গভীরে তাপমাত্রা এত বেশি যে কিছু শিলা ধীরে ধীরে গলে গিয়ে ম্যাগমা নামে পরিচিত একটি ঘন, প্রবাহিত পদার্থে পরিণত হয়। যেহেতু এটি চারপাশের কঠিন শিলার চেয়ে হালকা, তাই এই ম্যাগমা ওপরে উঠে ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা চেম্বারে জমা হয়। অবশেষে তার কিছু অংশ ছিদ্র ও ফাটলের মাধ্যমে পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌঁছানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করে। তখনই অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। একবার ম্যাগমা মাটির ওপরে বেরিয়ে এলে, তাকে লাভা বলা হয়।
কিছু আগ্নেয়গিরি ঘন ঘন বিস্ফোরিত হয়। আবার হায়লি গুব্বির মতো আগ্নেয়গিরি হাজার হাজার বছর শান্ত থাকতে পারে। স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের গ্লোবাল ভলকানিজম প্রোগ্রাম ১৯৬৮ সাল থেকে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত নথিভুক্ত করছে।
ইউএসজিএসের তথ্য মতে, আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ বাড়ছে এমন কোনো প্রমাণ নেই। বিশ্বজুড়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর বেশির ভাগই প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অব ফায়ার বরাবর অবস্থিত। এই অঞ্চলে বিশ্বের মোট সক্রিয় বা সুপ্ত আগ্নেয়গিরির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ ৭৫০ থেকে ৯১৫টির মতো আগ্নেয়গিরি রয়েছে। ইউরোপের আইসল্যান্ডেও নিয়মিত অগ্ন্যুৎপাত হয়ে থাকে। জলবায়ু ও জনসংখ্যার চাপ বাড়ার কারণে বর্তমানে অগ্ন্যুৎপাতের প্রভাব বেশি অনুভূত হলেও সামগ্রিক সংখ্যা বাড়ছে না।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া