ঢাকায় ভবন নির্মাণে নতুন করে খরচ বাড়তে পারে। কারণ, জমির ব্যবহার, নকশা ও ইমারত নির্মাণ অনুমোদন ফি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। শিগগিরই ঢাকার ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০২৫ প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বাড়তি ফি কার্যকর হতে পারে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও আবাসন ব্যবসায়ীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা বলেন, জমির ব্যবহার ও ইমারত নির্মাণ ফি কয়েক গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তাতে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের নির্মাণ ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবে। এমনকি শিল্পকারখানার নির্মাণ ব্যয়ও বেড়ে যাবে। এতে সরকারের রাজস্ব বাড়লেও বেসরকাৃরি খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইমারত নির্মাণের নকশা অনুমোদন, সময় বাড়ানো ও ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্রের ফি আগে ছিল ১ হাজার টাকা। এখন সেটি বাড়িয়ে ৫ হাজার টাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ব্লকভিত্তিক আবাসিক ইউনিট নির্মাণ আবেদনের ক্ষেত্রে প্রতি কাঠায় নতুন করে ৫ হাজার টাকা ফি আরোপ হতে পারে, যা এত দিন ছিল না।

এ ছাড়া আবাসিক ভবন নির্মাণের অনুমোদন নিতে প্রতি বর্গমিটারে ৫০ টাকা ফি দিতে হবে। বাণিজ্যিক ও শিল্পকারখানার ক্ষেত্রে প্রতি বর্গমিটারে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ফি হতে পারে। মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডার মতো ধর্মীয় উপাসনালয়ের ক্ষেত্রে ফি লাগবে না। তবে এসব উপাসনালয়ের কোনো অংশ অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না।

বর্তমানে আবাসিক ভবনের সব তলার মোট মেঝে এলাকা (ফ্লোর এরিয়া) অনুযায়ী ১৬টি স্তরে ফি নির্ধারণ করা আছে। যেমন কোনো ভবনে মোট ৩ হাজার মেঝে এলাকা থাকলে বর্তমানে ইমারত নির্মাণ অনুমোদন ফি দিতে হয় ২৬ হাজার টাকা। তবে নতুন বিধিমালা কার্যকর হলে সেটি বেড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা হতে পারে। তার মানে ব্যয় বাড়বে ১ লাখ ২৪ হাজার টাকা।

এ ক্ষেত্রে ভবনের মোট মেঝে এলাকা যত বাড়বে, ব্যয়ও তত বাড়বে। যেমন কোনো ভবনে মোট ১০ হাজার বর্গমিটার মেঝে এলাকা থাকলে এখন ফি দিতে হয় ৮৩ হাজার টাকা। সেই ফি বেড়ে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তাতে খরচ বাড়বে ৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা। আবার কোনো ভবনে মোট ৩০ হাজার বর্গমিটার মেঝে এলাকা থাকলে এখন ফি দিতে হয় ২ লাখ ৭ হাজার টাকা। সেই ফি বেড়ে ১৫ লাখ টাকা হতে পারে। সেটি হলে খরচ বাড়বে ১২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত মাসের তৃতীয় সপ্তাহে নতুন ফির বিষয়ে সম্মতি চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। চিঠিতে রাজউকের সুপারিশ অনুযায়ী সংশোধিত ফি অনুমোদনের অনুরোধ করা হয়েছে।

জানতে চাইলে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইমারত নির্মাণ অনুমোদন নিতে প্রতি বর্গমিটারে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ফি দিতে হলে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণে নতুন করে খরচ বাড়বে। এতে ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক ভবনের জায়গার দাম বাড়তে পারে, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য অসুবিধাজনক। আশা করছি সরকার বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে ফি হাতের নাগালে রাখবে।’

এদিকে রাজধানীর নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপ সংশোধনের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকার ভবনের উচ্চতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে ড্যাপ রিভিউ-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। ড্যাপ সংশোধনের বিষয়টিও নতুন বিধিমালায় থাকবে বলে জানিয়েছেন রাজউক কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে রাজউকের উপনগর-পরিকল্পনাবিদ মো.

মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নকশা অনুমোদনের সময় দেখা যায়, এক-দুই বর্গমিটারের জন্য ফি কমবেশি হয়। সে জন্য প্রতি বর্গমিটার অনুযায়ী ফি নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি ২০১৪ সালেই নির্ধারণ করা হয়েছিল। যদিও তখন বিধিমালা না করায় সেটি কার্যকর করা যায়নি। অপর প্রশ্নের উত্তরে বলেন, নতুন ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) ও ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে বিধিমালাটি প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভবন ন র ম ণ ব যবহ র ক ভবন ভবন র র জউক

এছাড়াও পড়ুন:

খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত, পাবেন এসএসএফের নিরাপত্তা

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে তিনি স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) নিরাপত্তা পাবেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ বিষয়ে তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন।

পোস্টে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া লিখেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ (ভিভিআইপি) হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিতে এসএসএফ নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ