বিদেশ সফরের অনুমতি পাননি ৩ ডেপুটি গভর্নর
Published: 2nd, December 2025 GMT
বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন ডেপুটি গভর্নরের বিদেশে চারটি প্রশিক্ষণ সফর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ আটকে দিয়েছে। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে বাংলাদেশ ব্যাংকসংশ্লিষ্ট সূত্রে। গত জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এসব প্রশিক্ষণ সফর ছিল। চারটির মধ্যে দুটিতেই যাওয়ার কথা ডেপুটি গভর্নর কবির আহাম্মদের। বাকি দুটির একটিতে মো.
গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নর ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের বাকি সব কর্মকর্তার বিদেশ যাওয়ার অনুমোদন বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই দেয়। গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরদের বিদেশ যেতে সরকারি আদেশ (জিও) লাগে। অর্থ উপদেষ্টা অনুমোদনের পর তা যায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে।
গত জুলাইয়ে মরক্কোয় ইসলামি অর্থায়ন ব্যবস্থা নিয়ে ইসলামিক ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস বোর্ডের (আইএফএসবি) বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশ নেওয়ার কথা ছিল ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহাম্মদের। এ জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে জিও চাওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত কোনো আদেশ জারি হয়নি।
গত সেপ্টেম্বরে ফ্রান্সে ডিজিটাল লেনদেন ও কার্ড ব্যবস্থা নিয়ে এক কর্মশালায় যোগদানের আমন্ত্রণ পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তাতে ডেপুটি গভর্নর জাকির হোসেন চৌধুরীকে অংশ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। তাঁর এই সফরে খরচ ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানের বহন করার কথা ছিল। কিন্তু সরকারি আদেশ জারি না হওয়ায় তিনি যেতে পারেননি।
গত নভেম্বরে ঘটেছে একই ধরনের আরও দুটি ঘটনা। একটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক দিনের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা হওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রে। ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমানকে তাতে অংশ নেওয়ার মনোনয়ন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এই সফরের খরচ বহনের কথা ছিল আইএমএফের। কিন্তু সরকারি জিও জারি না হওয়ায় তিনিও যেতে পারেননি।
গত মাসে চীনে আইএমএফের আরেকটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা ছিল। সেখানে অংশ নিতে আইএমএফের খরচে চীন যেতে ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহাম্মদকে মনোনীত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু সরকারি অনুমতি না পাওয়ায় তিনিও যেতে পারেননি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের অনুমতি না পাওয়ায় কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ ও সম্মেলনে অংশ নিতে পারেননি ডেপুটি গভর্নররা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বিদেশ সফরের বেশির ভাগের খরচ বিদেশি প্রতিষ্ঠান বহন করে। তারপরও কিছু সফরের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ সংশোধন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের প্রভাব কমানোর উদ্যোগের পর থেকেই এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরি এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ তো রীতিমতো ক্ষমতার লড়াই শুরু হয়ে গেছে। এমনিতে দেশের আর্থিক খাতের অবস্থা ভালো না, এমনটা চলতে থাকলে আরও খারাপ হয়ে পড়বে।’
এদিকে প্রশিক্ষণ সফর আটকে যাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে জানতে চাওয়া হলে লিখিত বক্তব্যে বিভাগটি জানিয়েছে, কবির আহাম্মদের মরক্কো যাওয়ার সারসংক্ষেপ গত ১৯ জুন পাঠানো হলেও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অনুমোদন করেনি। এ ছাড়া জাকির হোসেন চৌধুরীর ফ্রান্স সফরের ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনার পরিপন্থী। আর এক দিনের কর্মসূচি হওয়ায় হাবিবুর রহমান যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন না বলে মৌখিকভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানিয়েছেন। আর কবির আহাম্মদের চীন সফরের সারসংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে রয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট র অন ম প র নন সরক র সফর র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশ সফরের অনুমতি পাননি ৩ ডেপুটি গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন ডেপুটি গভর্নরের বিদেশে চারটি প্রশিক্ষণ সফর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ আটকে দিয়েছে। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে বাংলাদেশ ব্যাংকসংশ্লিষ্ট সূত্রে। গত জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এসব প্রশিক্ষণ সফর ছিল। চারটির মধ্যে দুটিতেই যাওয়ার কথা ডেপুটি গভর্নর কবির আহাম্মদের। বাকি দুটির একটিতে মো. হাবিবুর রহমান ও আরেকটিতে জাকির হোসেন চৌধুরীর যাওয়ার কথা ছিল বলে জানা যায়।
গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নর ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের বাকি সব কর্মকর্তার বিদেশ যাওয়ার অনুমোদন বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই দেয়। গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরদের বিদেশ যেতে সরকারি আদেশ (জিও) লাগে। অর্থ উপদেষ্টা অনুমোদনের পর তা যায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে।
গত জুলাইয়ে মরক্কোয় ইসলামি অর্থায়ন ব্যবস্থা নিয়ে ইসলামিক ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস বোর্ডের (আইএফএসবি) বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশ নেওয়ার কথা ছিল ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহাম্মদের। এ জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে জিও চাওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত কোনো আদেশ জারি হয়নি।
গত সেপ্টেম্বরে ফ্রান্সে ডিজিটাল লেনদেন ও কার্ড ব্যবস্থা নিয়ে এক কর্মশালায় যোগদানের আমন্ত্রণ পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তাতে ডেপুটি গভর্নর জাকির হোসেন চৌধুরীকে অংশ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। তাঁর এই সফরে খরচ ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানের বহন করার কথা ছিল। কিন্তু সরকারি আদেশ জারি না হওয়ায় তিনি যেতে পারেননি।
গত নভেম্বরে ঘটেছে একই ধরনের আরও দুটি ঘটনা। একটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক দিনের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা হওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রে। ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমানকে তাতে অংশ নেওয়ার মনোনয়ন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এই সফরের খরচ বহনের কথা ছিল আইএমএফের। কিন্তু সরকারি জিও জারি না হওয়ায় তিনিও যেতে পারেননি।
গত মাসে চীনে আইএমএফের আরেকটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা ছিল। সেখানে অংশ নিতে আইএমএফের খরচে চীন যেতে ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহাম্মদকে মনোনীত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু সরকারি অনুমতি না পাওয়ায় তিনিও যেতে পারেননি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের অনুমতি না পাওয়ায় কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ ও সম্মেলনে অংশ নিতে পারেননি ডেপুটি গভর্নররা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বিদেশ সফরের বেশির ভাগের খরচ বিদেশি প্রতিষ্ঠান বহন করে। তারপরও কিছু সফরের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ সংশোধন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের প্রভাব কমানোর উদ্যোগের পর থেকেই এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরি এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ তো রীতিমতো ক্ষমতার লড়াই শুরু হয়ে গেছে। এমনিতে দেশের আর্থিক খাতের অবস্থা ভালো না, এমনটা চলতে থাকলে আরও খারাপ হয়ে পড়বে।’
এদিকে প্রশিক্ষণ সফর আটকে যাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে জানতে চাওয়া হলে লিখিত বক্তব্যে বিভাগটি জানিয়েছে, কবির আহাম্মদের মরক্কো যাওয়ার সারসংক্ষেপ গত ১৯ জুন পাঠানো হলেও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অনুমোদন করেনি। এ ছাড়া জাকির হোসেন চৌধুরীর ফ্রান্স সফরের ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনার পরিপন্থী। আর এক দিনের কর্মসূচি হওয়ায় হাবিবুর রহমান যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন না বলে মৌখিকভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানিয়েছেন। আর কবির আহাম্মদের চীন সফরের সারসংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে রয়েছে।