সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুজনের পরিচয়। এরপর ধীরে ধীরে ভালো লাগা। পরে মন দেওয়া–নেওয়া। একপর্যায়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। কিন্তু শেষমেষ সাতপাকে বাঁধা হলো না। ভিন্ন জাতের কারণে ছেলেটিকে মেরে ফেলা হয়। অভিযোগ প্রেমিকার পরিবারের বিরুদ্ধে। এতে দমে যাননি প্রেমিকা। প্রেমিকের মরদেহকে বিয়ে করে তাঁর বাড়িতে বসবাস শুরু করেছেন।

মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে। তরুণীর নাম আঁচল মামিদওয়ার (২১)। তাঁর প্রেমিকের নাম সক্ষম তাতে (২০)। মৃত প্রেমিককে বিয়ে করার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর বিষয়টি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

আঁচল বলেন, তাঁরা বিয়ে করলে মেনে নেবেন বলে পরিবারের সদস্যরা আশ্বস্ত করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তিন বছর ধরে একসঙ্গে ছিলাম। কত স্বপ্ন দেখেছি। আমার ভাইয়েরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, তাঁরাই আমাদের বিয়ের আয়োজন করবেন; কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁরা আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।’

সক্ষমের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পরিচয় হয়েছিল বলে জানান আঁচল। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। তিনি বলেন, ‘তাঁরা (পরিবারের সদস্যরা) সক্ষমের সঙ্গে ভালো আচরণ করতেন, একসঙ্গে খেতেন। তাঁরা সক্ষমকে আশ্বস্ত করেছিলেন, সব ঠিক আছে। আমরা ভাবতে পারিনি যে এমন কিছু ঘটবে।’

পুলিশের উসকানি

আঁচল অভিযোগ করেন, ধীরাজ কোমলওয়ার ও মহিত আসারওয়ার নামের দুজন পুলিশ সদস্য এ কাজে তাঁর ভাইদের উসকানি দিয়েছিলেন। তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আগেও অপরাধে জড়িত থাকার রেকর্ড ছিল বলে জানা গেছে।

আঁচল বলেন, ‘সক্ষমকে যেদিন হত্যা করা হয়, সেদিন বেলা ১১টার দিকে আমার ছোট ভাই আমাকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে সক্ষমের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিতে বলে, যা ছিল মিথ্যা। আমি তাতে রাজি হইনি।’

মহারাষ্ট্রের এই তরুণী বলেন, ‘তখন পুলিশ আমার ভাইকে বলে, “তুমি তো মানুষ খুন করার পরেও এখানে আসো। তোমার বোন যাঁর সঙ্গে প্রেম করেন, তাঁকে মেরে ফেলো না কেন?”’

আঁচল বলেন, ‘পুলিশের কথার জবাবে আমার ভাই বলে, “ঠিক আছে, সন্ধ্যার মধ্যেই তাকে মেরে আপনাদের কাছে হাজির হব।”’

সক্ষমকে যেভাবে হত্যা করা হয়

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন সক্ষম। তখন আচঁলের ভাই হিমেশ মামিদওয়ারের সঙ্গে তাঁর কথা–কাটাকাটি হয়, যা শেষ পর্যন্ত মারামারিতে রূপ নেয়। হিমেশ একপর্যায়ে ২০ বছর বয়সী সক্ষমকে গুলি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। গুলিটি তাঁর পাঁজরে লাগে। এরপর হিমেশ তাঁর মাথায় টাইলস দিয়ে আঘাত করে ঘটনাস্থলেই তাঁকে মেরে ফেলেন।

এ ঘটনায় হিমেশ, তাঁর ভাই সহিল, তাঁদের বাবা গজনান মামিদওয়ার এবং আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যা, দাঙ্গাসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে।

শেষকৃত্য রূপ নেয় বিয়েতে

পরদিন সন্ধ্যায় শুক্রবার সক্ষমের শেষকৃত্যের প্রস্তুতি চলছিল। আঁচল তখন সক্ষমের বাড়িতে গিয়ে সিঁদুর পরে সক্ষমের মরদেহকে ‘বিয়ে’ করেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তিন বছর ধরে সক্ষমের সঙ্গে প্রেম করেছি। কিন্তু জাতপাতের পার্থক্যের কারণে আমার বাবা এ সম্পর্কের বিরোধিতা করেছিলেন। আমার পরিবার প্রায়ই সক্ষমকে হত্যার হুমকি দিত। আর এখন আমার ভাই ও বাবা সেটাই করে ফেলেছেন। আমি বিচার চাই। আমি চাই অভিযুক্তদের ফাঁসি হোক।’

আঁচল বলেন, এখন থেকে তিনি সক্ষমের পরিবারের সঙ্গে থাকবেন।

‘জাতপাতের কারণে হত্যা’

আঁচল জানিয়েছেন, পরিবার বলে দিয়েছে তাঁর জন্য বাড়ির দরজা চিরতরে বন্ধ। তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে জাতপাতের কারণে। আমার বাবা ও ভাইয়েরা বলতেন, “আমরা গ্যাংস্টার, সক্ষম তা জানে। সে কীভাবে আমাদের মেয়ের সঙ্গে কথা বলার সাহস পায়?”’

আঁচল বলেন, সক্ষমের পরিবার তাঁকে মেনে নিয়েছে। তিনি আজীবন তাদের সঙ্গেই থাকবেন। তিনি ন্যায়বিচার পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।

এই তরুণী বলেন, ‘অনেক মানুষ আমার পাশে রয়েছে। জাতের কারণে কাউকে হত্যা করা উচিত নয়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র সদস আম র ভ ই র পর ব র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

কোহলির ৫২তম সেঞ্চুরিতে ভারতের রান পাহাড়

টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়া ভারত ওয়ানডেতে শুরুটা করল দারুণ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করতে নেমে বিরাট কোহলির ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫২তম সেঞ্চুরিতে ভর করে বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে। ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে করেছে ৩৪৯ রান।

ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই যশস্বী জয়সওয়াল ফিরলেও দাঁড়িয়ে যান কোহলি ও রোহিত শর্মা। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তারা দুজন ১৩৬ রানের জুটি গড়ে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন।

আরো পড়ুন:

আইপিএলকে বিদায় জানালেন আন্দ্রে রাসেল, ফিরছেন নতুন ভূমিকায়

আফ্রিদিকে পেছনে ফেলে ছক্কার বিশ্বরেকর্ড গড়লেন রোহিত

১৬১ রানের মাথায় রোহিত ফিরেন ৫টি চার ও ৩ ছক্কায় ৫৭ রানের ইনিংস খেলে। নতুন ব্যাটসম্যান রুতুরাজ গায়কোয়াড় ৮ রান করেই ফিরেন সাজঘরে। এরপর ওয়াশিংটন সুন্দরও ১৩ রানের বেশি করতে পারেন না।

তবে পঞ্চম উইকেটে কোহলি ও লোকেশ রাহুল ৭৬ রানের জুটি গড়েন। এ যাত্রায় কোহলি ১০২ বলে ৭টি চার ও ৫ ছক্কায় ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫২তম সেঞ্চুরি তুলে নেন। সেঞ্চুরির পর ঝড় তোলেন কোহলি। তবে ২৭৬ রানের মাথায় কোহলি ফিরেন ১২০ বলে ১১টি চার ও ৭ ছক্কায় ১৩৫ রানের ইনিংস খেলে।

এরপর লোকেশ রাহুল ও রবীন্দ্র জাদেজা ৬৫ রান যোগ করেন সপ্তম উইকেট জুটিতে। তাতে ভারতের দলীয় সংগ্রহ বেড়ে হয় ৩৪১। এই রানে রাহুল ফিরেন ৬০ রান করে, ২ চার ও ৩ ছক্কায়। ৩৪৭ রানের মাথায় জাদেজা আউট হন ৩২ রান করে। একই রানে অক্ষর প্যাটেল ফিরেন ডাক মেরে। শেষ পর্যন্ত ভারতের সংগ্রহ হয় ৮ উইকেটে ৩৪৯।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিপিএলের আগে মুমিনুলকে সিডনিতে খেলার সুযোগ দিলেন হাথুরুসিংহে
  • একজন মহুয়া রউফ
  • ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগানের ভিডিওটি সন্দ্বীপের
  • গোপন বিয়ের ছবি প্রকাশ করলেন সামান্থা
  • আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়ে গর্ববোধ করার কথা জানালেন রেজা কিবরিয়া
  • মসজিদে বিয়ে, স্বামীর বয়স নিয়ে আলোচনা, মুখ খুললেন ফারিয়া
  • মুক্তিপণ আদায়ে ফেসবুকে বন্ধুত্ব, ব্যর্থ হয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড
  • কোহলির ৫২তম সেঞ্চুরিতে ভারতের রান পাহাড়
  • চন্দ্র কেন কম আলো দেয়