চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই মদ তৈরির কারখানা, গ্রেপ্তার এক
Published: 2nd, December 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে মদ তৈরি ও বন্য প্রাণী শিকারের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে প্রক্টরিয়াল বডি। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদসংলগ্ন পাহাড় থেকে তাঁকে আটক করা হয়। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তির সুমন চাকমা (৫০)। তিনি খাগড়াছড়ি জেলার বাসিন্দা। সুমন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাষাবাদ করার জন্য জমি ইজারা নিয়েছিলেন। তবে চাষাবাদের আড়ালে তিনি সেখানে চোলাই মদ তৈরির কারখানা গড়ে তোলেন। পাশাপাশি পাহাড়ের বন্য প্রাণী শিকার করে আসছেন তিনি। ওই এলাকায় হঠাৎ বহিরাগতদের চলাচল বাড়ায় নজরদারি বাড়ায় প্রক্টরিয়াল বডি। এরপর সুস্পষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সুমন চাকমার বাড়িতে গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দীর নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। রাত সাড়ে তিনটায় এ অভিযান শেষ হয়েছে।
প্রক্টরিয়াল বডি জানায়, সুমন তাঁর ঘরের পাশেই মদ তৈরি করতেন। তাঁর ছোট বেড়ার ঘরের পেছনের লম্বা বারান্দাজুড়ে মদ উৎপাদনের বিভিন্ন সরঞ্জাম ছিল। পরে ঘর তল্লাশিতে সদ্য প্রস্তুত করা প্রায় ৩০ লিটার চোলাই মদসহ নানান উপকরণ জব্দ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, সুমন চাকমাকে রাতেই থানায় সোপর্দ করা হয়। ভাড়া নেওয়া জমিতে অবৈধভাবে মদের ব্যবসা ও অনুমতি ছাড়া গাছ কাটায় তাঁর ইজারা বাতিল করা হবে এবং তাঁকে জরিমানাও করা হবে।
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সুমন চাকমার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মাদক আইনে মামলা করেছে। তাঁকে আপাতত হাটহাজারী থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আদালতে নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মদ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
শোবার ঘরকে বানাল জাদুঘর
চীনের হেনান প্রদেশের ১৪ বছর বয়সী কিশোর শিয়ে ঝাওইউতং নিজের ছোট্ট শোবার ঘরকে এক ব্যতিক্রমী ইতিহাস জাদুঘরে পরিণত করেছে। প্রাচীন চীনের ইতিহাস ও সাহিত্যের প্রতি গভীর অনুরাগ থেকে সে বছরের পর বছর ধরে সংগ্রহ করেছে নানা সামগ্রী। এতে রয়েছে মাটির পাত্র, চিনামাটি, প্রাচীন ইট, পুরোনো মুদ্রা, এমনকি তিন হাজার বছরের পুরোনো যুগের নিদর্শন।
ঝাওইউতংয়ের ঘরে বিছানা ছাড়া বাকি সব জায়গা দখল করে আছে এসব সংগ্রহ। সে নিজেই বলেছে, ‘বিছানাটা আমার দেহের, আর বাকি ঘর আমার আত্মার পাত্র।’
সম্প্রতি নিজের সংগ্রহ নিয়ে তৈরি ঝাওইউতংয়ের এক ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, যেকোনো একটি জিনিস বা বস্তু ধরে তার যুগ, পটভূমি ও ইতিহাস ব্যাখ্যা করছে সে। ভিডিওটি লাখো মানুষের মন কেড়েছে। অনেকে তাকে ‘প্রাচীন আত্মাধারী বালক’ বলে অভিহিত করেছেন।
ঝাওইউতংয়ের সংগ্রহের মধ্যে হান সাম্রাজ্য যুগে (খ্রিষ্টপূর্ব ২০৬ থেকে খ্রিষ্টাব্দ ২২০) কবরে ব্যবহারের মাটির চুলা, স্প্রিং অ্যান্ড অটাম এবং ওয়ারিং স্টেটস যুগের (খ্রিষ্টপূর্ব ৭৭১ থেকে ২২১ সাল) বিরল ‘স্পেড কয়েন’ বা কোদাল আকৃতির পয়সা রয়েছে।
এ ধরনের একটি মুদ্রা কিনতে সাধারণত কয়েক শ থেকে কয়েক হাজার ইউয়ান খরচ করেছে ঝাওইউতং। সে জানায়, তার সংগ্রহে থাকা স্পেড কয়েনটি ‘গড় মানের’। এসব দুর্লভ প্রাচীন জিনিস কেনার জন্য সে নিজের জমানো অর্থ খরচ করে। এ জন্য সে কৃচ্ছ্র সাধন করে। ছিদ্র হয়ে গেলেও নতুন মোজা কেনে না। তবে কিছু জিনিস সে বিনা খরচে সংগ্রহ করেছে, যেমন লুয়োয়াং ভ্রমণের সময় হান যুগের ইটটি সে ঘাসের মধ্যে পেয়েছিল। তবে তার সংগ্রহে কত প্রাচীন জিনিস বা বস্তু আছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ছয় বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে ঝেংঝৌ মিউজিয়ামে ঘুরতে গিয়ে ইতিহাসের প্রেমে পড়ে ঝাওইউতং। পরে ‘চায়নিজ পোয়েট্রি কম্পিটিশন’ টিভি অনুষ্ঠানে পরিচিত এক বন্ধুর অনুপ্রেরণায় নিজের ঘরকে জাদুঘর বানানোর ধারণা পায়।
ইতিহাসের পাশাপাশি প্রাচীন ‘অরাকল বোন লিপি’র প্রতিও ঝাওইউতংয়ের গভীর আগ্রহ রয়েছে, যা চীনের সবচেয়ে প্রাচীন লিখনপদ্ধতি। তার সংগ্রহে নকল অরাকল বোন লিপিও আছে, যা শিয়ে নিজে খোদাই করেছে।