ধর্মীয় পাঠ্যে বিরোধ দেখলে হানাফিদের সমাধান কী
Published: 2nd, December 2025 GMT
আমরা যখন কোরআন-হাদিস পাঠ করি, আমাদের সামনে বিধানসংক্রান্ত বিভিন্ন আলোচনা আসে। কোন ধর্মীয় উক্তি ও পাঠ্যের বাহ্যিক অর্থ অন্য আরেকটি পাঠ্যের সাথে বিরোধপূর্ণ ও সাংঘর্ষিক মনে হতে পারে।
এমন বাহ্যিক বিরোধ সমাধান ও ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে আলেমদের অনুসৃত পদ্ধতি কী, সেটা জানা প্রয়োজন। নাহলে আমরা কিভাবে পাঠ্যের ওপর আমল করব, তা নিয়ে সংশয়ে পড়তে পারি।
ধর্মীয় পাঠ্য ও বর্ণনায় এমন বিরোধ দেখা দিলে তা সমাধান করা আবশ্যক, এ ব্যাপারে ইসলামের স্কলারগণ একমত। তবে সমাধানের পদ্ধতি নিয়ে তাদের দুটি মত রয়েছে। একটি হানাফি পদ্ধতি এবং অন্যটি সংখ্যাগুরু আলেমদের পদ্ধতি। মূলনীতির এই মতভেদ শুধু শব্দ ও পরিভাষাগত, কিন্তু ফলাফল একই থাকে। (মুস্তফা জুহাইলি, আল-ওয়াজিয ফি উসুলিল ফিকহ, ২/৪১১)
দুটি বিপরীতমুখী ধর্মীয় পাঠ্য সামনে এলে পাঠক প্রথমে সেগুলোর প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস খুঁজবেন। যদি জানা যায় কোনটি আগে এবং কোনটি পরে এসেছে,আমরা কেবল হানাফি পণ্ডিতদের পদ্ধতি তুলে ধরব। হানাফি মতে, যদি দুটি ধর্মীয় পাঠ্যের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়, তবে ধর্মীয় পাঠক ও গবেষক এই চারটি ধাপ ধারাবাহিকভাবে অনুসরণ করবে: ১.
প্রতিটি ধাপের ব্যাখ্যা তুলে ধরা হলো।
১. নাসখ বা রহিতকরণদুটি বিপরীতমুখী ধর্মীয় পাঠ্য সামনে এলে পাঠক প্রথমে সেগুলোর প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস খুঁজবেন। যদি জানা যায় কোনটি আগে এবং কোনটি পরে এসেছে, তবে শেষের পাঠ্যটি আগের পাঠ্যে থাকা বিধানকে বাতিল করে দেবে।
তবে শর্ত হলো, পাঠ্য দুটি শক্তির দিক দিয়ে সমান হতে হবে। যেমন, দুটিই কুরআনের আয়াত, অথবা দুটিই মুতাওয়াতির (অসংখ্য বর্ণনাকারী) হাদিস হতে হবে। (মুস্তফা জুহাইলি, আল-ওয়াজিয ফি উসুলিল ফিকহ, ২/৪১২)
আরও পড়ুনধর্ম ও বিজ্ঞানের সম্পর্ক: পশ্চিমা অনুকরণ থেকে মুক্তির পথ২২ আগস্ট ২০২৫এই ধারার উদাহরণ হিসেবে একটা বিধানকে আনতে পারি। সেটা হল, যদি স্বামী মারা যায় বা স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে সেই নারী কতদিন ইদ্দত পালন করবে? কতদিন নতুন বিয়ে থেকে বিরত থাকতে হবে?
কোরআনের এক স্থানে বলা হয়েছে, “তোমাদের মধ্য হতে যারা স্ত্রীদের রেখে মারা যাবে সে অবস্থায় স্ত্রীগণ নিজেদেরকে চার মাস দশ দিন বিরত রাখবে।" (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৩৪)
এখানে সবার কথাই বলা হয়েছে, চাই সে সন্তান সম্ভবা বা না হোক। তবে আরেক আয়াতে বলা হয়েছে, “আর সন্তান সম্ভবা নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।" (সুরা তালাক, আয়াত: ৪)
এই দুই পাঠ্যের সমাধানে, ইবনে মাসউদ (রা.)-এর সিদ্ধান্ত হল, দ্বিতীয় আয়াতটি পরে নাজিল হয়েছে। তাই সন্তান সম্ভবা নারী ক্ষেত্রে দ্বিতীয় আয়াতটি প্রথম আয়াতের বিধান রহিত করবে। যদিও অন্য নারীদের ক্ষেত্র প্রথম আয়াতের বিধান ঠিক থাকবে। অর্থাৎ, সন্তান সম্ভবা বিধবার ইদ্দতের শেষ সীমা হল সন্তান প্রসব পর্যন্ত, চার মাস দশ দিন নয়। (জামালুদ্দিন যাইলায়ী, নাসবুর রায়াহ, ৩/২৫৬)
হানাফিদের মতে, দুটি দলিল মিলিয়ে আমল করার চেয়ে একটিকে শক্তিশালী প্রমাণ করে আমল করা ভালো। কারণ শক্তিশালী দলিলটি নিশ্চিত সত্যের কাছাকাছি।২. তারজিহ বা প্রাধান্য দেওয়াযদি ধর্মীয় পাঠ্যগুলোর প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস জানা না যায়, তবে পাঠক ও গবেষক একটি পাঠ্যের বিধানকে অন্যটির ওপর প্রাধান্য দেবেন। এর নানা পদ্ধতি আছে। যেমন, অস্পষ্টের চেয়ে স্পষ্ট পাঠ্যকে গুরুত্ব দেওয়া, ইঙ্গিতমূলক দলিলের চেয়ে মূল বক্তব্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া, ইত্যাদি। এছাড়া বর্ণনাকারীর যোগ্যতা বা জ্ঞানের গভীরতা বিবেচনা করেও প্রাধান্য দেওয়া হতে পারে। (মুস্তফা জুহাইলি, আল-ওয়াজিয ফি উসুলিল ফিকহ, ২/৪১২–৪১৩)
হানাফিদের মতে, দুটি দলিল মিলিয়ে আমল করার চেয়ে একটিকে শক্তিশালী প্রমাণ করে আমল করা ভালো। কারণ শক্তিশালী দলিলটি নিশ্চিত সত্যের কাছাকাছি। যখন একটি দলিলকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, তখন বিরোধ আর থাকে না। (ইবনে নিজামুদ্দিন লখনভি, ফাওয়াতিহুর রাহমুত, ২/১৮৯)
৩. জমা বা সমন্বয় সাধনযদি কোনো ধর্মীয় পাঠ্যকে এককভাবে প্রাধান্য দেওয়া সম্ভব না হয়, তখন পাঠক ও গবেষক সমন্বয়ের পথে হাঁটবেন। অর্থাৎ, দুটি পাঠ্যের ওপরই আমল করার চেষ্টা করবেন। কারণ পাঠ্যের বিধানকে বাদ দেওয়ার চেয়ে উভয়টির ওপর আমল করা উত্তম। (মুস্তফা জুহাইলি, আল-ওয়াজিয ফি উসুলিল ফিকহ, ২/৪১৩)
উদাহরণস্বরূপ, এক বর্ণনায় দেখা যায়, নবীজি (সা.) বলেছেন, “তোমাদের কি তোমাদের উত্তম সাক্ষীদের সম্পর্কে অবহিত করব না? উত্তম সাক্ষী হল সেই ব্যক্তি, যাকে সাক্ষ্যের জন্য ডাকার আগেই সে সাক্ষ্য দিতে এগিয়ে আসে।” (মুসলিম, হাদিস: ৪৩৪৫)
আরেক বর্ণনায় দেখা যায়, নবীজি (সা.) নিন্দা করে বলেছেন, “পরবর্তী এমন এক সম্প্রদায়ের উদ্ভব হবে যারা সাক্ষ্য দেবে অথচ তাদের কাছে সাক্ষ্য চাওয়া হবে না।” (মুসলিম, হাদিস: ৬২৪৫)
প্রথম হাদিসটি অনুরোধ আসার আগেই সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হওয়াকে বৈধ বলে, চাই তা আল্লাহর অধিকার সম্পর্কিত হোক অথবা বান্দার অধিকারের ক্ষেত্রে হোক। আর দ্বিতীয় হাদিসে অনুরোধের আগে সাক্ষ্য দেওয়াকে অনুমোদন করা হয়নি। কারণ সেখানে বিষয়টি নিন্দা ও সমালোচনার প্রসঙ্গে এসেছে।
এই দুই হাদিসের মধ্যে সমন্বয় করা হয় এভাবে, প্রথম হাদিসটিকে আল্লাহর অধিকারের সাথে সম্পর্কিত বিষয়ে প্রযোজ্য ধরা হয়, যেখানে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সাক্ষ্য দেওয়া সওয়াব হিসেবে গণ্য হবে। আর দ্বিতীয় হাদিসটি বান্দার অধিকারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ধরা হয়। (মুস্তফা জুহাইলি, আল-ওয়াজিয ফি উসুলিল ফিকহ, ২/৪১৪)
আরও পড়ুনচার মাজহাবের উৎপত্তি কীভাবে হল০৯ অক্টোবর ২০২৫৪. তাসাকুত বা দলিল বর্জনবিপরীতধর্মী দুটি বিষয়ের সমাধানে যদি উপরের তিনটি পদ্ধতি ব্যর্থ হয়, তখন উভয় পাঠ্য থেকেই দলিল বাদ দেওয়া হয়। এরপর গবেষক নিচের স্তরের দলিল খুঁজবেন। কোরআনে না পেলে সুন্নাহ, সুন্নাহতে না পেলে সাহাবির উক্তি বা কিয়াস (সাদৃশ্যমূলক যুক্তি) ব্যবহার করবেন।
আপাতদৃষ্টিতে যে বিষয়গুলোকে আমরা সাংঘর্ষিক মনে করি, ফকিহদের এই সূক্ষ্ম মূলনীতিগুলো প্রয়োগের ফলে তা-ই একটি সুশৃঙ্খল ও বাস্তবসম্মত বিধানে রূপ নেয়এর একটি উদাহরণ হল, গাধার ঝুটা বা ভুক্তাবশেষ পানির বিধান। এ বিষয়ে সাহাবিদের থেকে দুটি ভিন্ন মত বা ‘আসার’ পাওয়া যায়।
ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে গাধার ঝুটা পানি নাপাক। আবার ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, এটি পাক বা পবিত্র। এই দুটি মতের মধ্যে কোনো একটিকে প্রাধান্য দেওয়ার মতো শক্তিশালী কোনো কারণ নেই।
তাই হানাফি আলেমগণ উভয় বর্ণনাই বাদ দিয়েছেন। তারা এক্ষেত্রে পানির ‘আসল’ বা মৌলিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে ফয়সালা দিয়েছেন। আর পানির মৌলিক অবস্থা হল, পানি পবিত্র থাকে। (মুস্তফা জুহাইলি, আল-ওয়াজিয ফি উসুলিল ফিকহ, ২/৪১৫–৪১৬)
শেষকথাধর্মীয় পাঠ্যের বাহ্যিক বিরোধ নিরসনে হানাফি ফকিহদের নির্দেশিত এই চারটি ধাপ, নাসখ, তারজিহ, জমা ও তাসাকুত, ইসলামি আইনশাস্ত্রের গভীরতা ও নিয়মতান্ত্রিকতা প্রমাণ করে।
এই তাত্ত্বিক কাঠামো দুটি পাঠ্যের বিরোধ মেটানোর পাশাপাশি এটা নিশ্চিত করে যে, গৃহীত সিদ্ধান্তটি যেন সর্বোচ্চ সতর্কতা ও যুক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মাধ্যমে ধর্মীয় গবেষক ও মুজতাহিদরা যেমন সঠিক ফয়সালায় উপনীত হতে পারেন, তেমনি সাধারণ মানুষও ইবাদত ও আমলের ক্ষেত্রে সংশয়মুক্ত থাকার নির্দেশনা পায়।
বস্তুত, আপাতদৃষ্টিতে যে বিষয়গুলোকে আমরা সাংঘর্ষিক মনে করি, ফকিহদের এই সূক্ষ্ম মূলনীতিগুলো প্রয়োগের ফলে তা-ই একটি সুশৃঙ্খল ও বাস্তবসম্মত বিধানে রূপ নেয়, যা উম্মাহর জন্য দ্বীন পালনকে সহজ ও নিরাপদ করে তোলে।
[email protected]
আবদুল্লাহিল বাকি : লেখক, আলেম ও সফটওয়্যার প্রকৌশলী
আরও পড়ুনমুসাফির কাকে বলে: শরিয়তের আলোকে সফরের বিধান০৯ জুলাই ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বরগুনায় শীত মৌসুমেও কমছে না ডেঙ্গু
ডেঙ্গুর হটস্পট বরগুনায় শীত মৌসুমেও কমছে না ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। বাসিন্দারা বলছেন, মশক নিধন কার্যক্রমে প্রশাসনের উদাসীনতায় নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডেঙ্গু পরিস্থিতি। এদিকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ওষুধ সংকটে ভোগান্তিতে পড়ছেন অনেকেই।
ডেঙ্গুর হটস্পট বরগুনায় উপজেলাগুলোর মধ্যে সব থেকে বেশি সনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাথরঘাটা।
চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ১৯ জন। তবে, বেসরকারি ক্লিনিকে সনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি এই উপজেলায়।
এদিকে আক্রান্ত হয়ে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগীদের অভিযোগ, চিকিৎসক, নার্স ও ওষুধ সংকটের পাশাপাশি আক্রান্ত রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২৯ নভেম্বর ভর্তি হয়েছেন উপজেলার চরদুয়ানী এলাকার জেলে হাবিব হাওলাদার। তিনি বলেন, “তিন দিনে একবার চিকিৎসক দেখে গেছেন। তারপর আর চিকিৎসকের দেখা পাইনি। প্রয়োজন হলে নার্সদের ডেকেও পাওয়া যায় না।”
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৭নং বেডে ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা নিচ্ছেন আবুল হাসনাত (১৯)। তিনি বলেন, “পাঁচ দিন ধরে ভর্তি হয়ে আছি। এখান থেকে কোন ওষুধ দেয়নি। সব বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। ভেবেছিলাম ৫ আগস্ট হাসিনা পালানোর পরে স্বাস্থ্য খাতসহ সব কিছুর উন্নতি হবে কিন্তু এখন আরো খারাপ অবস্থা। সরকারিভাবে কোন ওষুধ পাইনি। আমি বাইরে থেকে কিনে নিচ্ছি। কিন্তু যাদের সামর্থ্য নেই তারা খুব কষ্টে আছে।”
ভর্তি রোগীদের অভিযোগ, সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালে বন্ধ। তাই বাইরের ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে চড়া দামে করাতে হচ্ছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
এমন পরিস্থিতিতে মশক নিধনের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন উপজেলার বাসিন্দারা।
পাথরঘাটা পৌর শহরের বাসিন্দা ইমাম হোসেন নাহিদ বলেন, “প্রতিদিন এই উপজেলার মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে। ঘরে ঘরে ডেঙ্গু। অথচ প্রশাসনের মশক নিধন কার্যক্রম নেই। এই উপজেলায় মৃত্যুর হার সব থেকে বেশি। অথচ এখানে স্বাস্থ্য খাতে সংকটও বেশি। অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছে। তারপরেও মশক নিধনে কোন পদক্ষেপ নেয়নি পৌর ও উপজেলা কর্তৃপক্ষ।”
পাথরঘাটা গোল চত্বর এলাকার এএস এম জসিম বলেন, “শীত মৌসুমেও এত মশার উৎপাত যে এখন ঘর ছাড়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। পৌরসভা থেকে মশক নিধনে কোন উদ্যোগ আমরা পৌরবাসী দেখিনি। মশক নিধনে বরাদ্দ আছে, সেই টাকা লুটপাট করে খাচ্ছে অথচ সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে।”
এদিকে বরগুনা সদর, বেতাগী ও বামনা উপজেলায় এখনো চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের অভিযোগ চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও।
এসব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যারা চিকিৎস্যা নিচ্ছেন তারা বলছেন, সরকারিভাবে ওষুধ দেওয়ার কথা থাকলেও কিছুই পাচ্ছেন না তারা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হচ্ছে বাইরে থেকে। সব দিকে সিন্ডিকেট। ডেঙ্গুতে এত খারাপ অবস্থা অথচ সরকারের কোন নজরদারি নাই।
এসব বিষয়ে বরগুনার সিভিল সার্জন আবুল ফাত্তাহ বলেন, “নানামুখী সংকটের মধ্যেও ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করা হচ্ছে।”
শীত মৌসুমেও এডিস মশা না কমার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শীতের শুরুর দিকে বৃষ্টি হয়েছে, সেই সময়ে মশক নিধনে জোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ ছিল। মশক নিধন আমাদের কাজ না, এটা প্রশাসনের কাজ। তারপরেও আমরা তাদের সাথে নিয়ে মশক নিধন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তাদের তাগাদা দিচ্ছি। তবে, যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এতে ধারণা করছি এখন সারা বছর ডেঙ্গু থাকবে। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে।”
সরকারি হিসাবে চলতি বছরে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৫২৪ জন হলেও বেসরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি, মৃত্যুর সংখ্যা ৬৪।
ঢাকা/এস