বাংলাদেশের টেকসই সামুদ্রিক উন্নয়ন, ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়ন এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতিতে সমুদ্রের গুরুত্ব তুলে ধরে কার্যকর সুশাসন ও বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। 

তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন ও অবৈধ, অপ্রকাশিত এবং অনিয়ন্ত্রিত (আইইউইউ) মাছ ধরা একক দেশের পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এজন্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা জোরদার করতে হবে।”

রবিবার (২ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের দ্য পেনিনসুলা হোটেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস আয়োজিত ‘মেরিন ফিশারিজ অ্যান্ড ব্লু ইনোভেশনস: সেইফগার্ডিং ওশান হারমনি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হলো ‘সেইফগার্ডিং ওশান হারমনি’।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে ঠিকই, তবে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে দায়িত্বশীল আহরণ, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, বিজ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্ত এবং কার্যকর সুশাসন অত্যন্ত জরুরি।” 

তিনি আরো বলেন, “ব্লু ইকোনমিকে জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করায় বিজ্ঞান–নীতি–কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সমন্বয়ে একটি টেকসই সামুদ্রিক ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।”

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, “ড.

ফ্রিটজফ নানসেন কর্মসূচির ২০২৫ সালের সামুদ্রিক জরিপ অনুযায়ী, গত সাত বছরে ছোট পেলাজিক মাছের মজুদ ১,৫৮,০০০ টন থেকে কমে ৩৩,৮১১ টনে নেমে এসেছে, যা ৭৮.৬% হ্রাস। বড় শিকারী মাছ কমে যাওয়ায় জেলিফিশের আধিক্য দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য বিপজ্জনক সংকেত।” 

তিনি বলেন, “এসব ফলাফল বঙ্গোপসাগরের ইকোসিস্টেমে দ্রুত হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিত দেয়।”

উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশে অত্যন্ত দক্ষ গবেষক ও বিজ্ঞানী আছেন। নীতিনির্ধারণে তাঁদের গবেষণালব্ধ তথ্য প্রাধান্য দিতে হবে।” এসময় তিনি ইকোসিস্টেম সুরক্ষা, সমুদ্র ভিত্তিক পরিকল্পনা এবং জলবায়ু–সহনশীল মৎস্য ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দেন।

ইলিশকে জাতীয় ও বৈশ্বিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “ইলিশ আহরণে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষে কিন্তু এই সম্পদ এখন হুমকির মুখে। সাগরের প্রতিটি স্তরে ইলিশ রক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।”

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। প্লেনারি সেশনে “গ্লোবাল ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়ন: চ্যালেঞ্জ, অভিজ্ঞতা এবং বাংলাদেশের জন্য কৌশলগত অন্তর্দৃষ্টি”- শীর্ষক বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের বিজনেস স্কুলের প্রফেসর ড. পিয়ের ফাইলার (Dr. Pierre Failler)। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ মেরিন সায়েন্সের পরিচালক ড. শেখ আফতাব উদ্দিন আহমেদ। 

এসময় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি, গবেষক, বিজ্ঞানী, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/রেজাউল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট মৎস য

এছাড়াও পড়ুন:

চুয়াডাঙ্গায় বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর সীমান্তে ভারতের বিএসএফের গুলিতে শহিদুল ইসলাম শহিদ (৩৮) নামে এক বাংলাদেশি ব্যক্তি মারা গেছেন।  

শনিবার (২৯ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার গয়েশপুর সীমান্তের ৭০ নম্বর পিলারের কাছে ভারতের অভ্যন্তরে মাটিআরি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।

আরো পড়ুন:

পেঁয়াজ নিয়ে চোখে শর্ষে ফুল ভারতীয় ব্যবসায়ীদের

দক্ষিণী সিনেমায় কেন অভিনয় করেন না সুনীল শেঠি?

মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

নিহত শহিদুল গয়েশপুর গ্রামের নষ্কর মালিতার ছেলে। 

নিহত শহিদুলের স্ত্রী নাসরিন আক্তারের দাবি, শনিবার বিকেলে মাধবখালী সীমান্তের দোয়ালের মাঠে শহিদুল গরুর জন্য ঘাস কাটতে যান। এসময় বিএসএফ সদস্যরা শহিদুলকে ধরে খুব কাছ থেকে গুলি করে। শহিদুল ঘটনাস্থলে নিহত হন বলে ভারতে তার পরিচিতজনরা নিশ্চিত করেছেন। 

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বিএসএফের ৩২ ব্যাটালিয়নের কমান্ডেন্ট সুজিত কুমারের বরাত দিয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলম জানান, শনিবার বিকেলে কয়েকজন ব্যক্তি ভারতের মাটিয়ারি এলাকা থেকে মাদক নিয়ে বাংলাদেশে ফিরছিলেন। এসময় মাটিয়ারি ৩২ বিএসএফের সদস্যরা তাদের আটকের জন্য ধাওয়া করে।

অন্য মাদক কারবারিরা পালালেও শহিদুল বিএসএফ সদস্যকে হাসুয়া দিয়ে আক্রমণ করতে যান। এ সময় বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। তারা তাকে উদ্ধার করে মাটিয়ারি এলাকার হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ৮টার দিকে শহিদুল মারা যান।

বিএসএফের বরাতে তিনি আরো জানান, শহিদুলের মরদেহ পুলিশের হেফাজতে রয়েছ। ৩০ নভেম্বর ময়নাতদন্তের পর কবে নাগাদ তার মরদেহ বাংলাদেশে হস্তান্তর করবে তা জানাবে বিএসএফ। 

ঢাকা/মামুন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশে সবচেয়ে বেশি মাল্টা চাষ হয় কোথায়
  • খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় না'গঞ্জ মহানগরী জামায়াতের দোয়া
  • চুয়াডাঙ্গায় বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত