তোমাকে দেখি না সেই কত দিন, কত মাস, কত বছর...। ষোলটি বছর কেটে গেছে তারপরও ভুলে যাই—তুমি নেই। ‘নয়ন সমুখে তুমি নাই, নয়নের মাঝখানে নিয়েছ যে ঠাঁই।’
২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮ কবিতা উৎসবের সমাপ্তি দিন। সভাপতিত্ব করবে তুমি তা কিন্তু একবারও বলোনি। উত্তরা থেকে সকাল সকাল তোমাকে নিয়ে বেরিয়েছি, লম্বা পথ, তোমাকে টিএসসিতে নামাব। পথে অনেক গল্প, আমাদের উত্তরার লেকের পাড়ে একটি বিশাল বটগাছ ছিল। তুমি দেখিয়ে বললে এবারের পহেলা বৈশাখটা ওই বটগাছের নিচেই করব, এই উত্তরায়। উত্তরায় ছড়িয়ে দেব পহেলা বৈশাখের আমেজ—এ রকম কত কথা। তার ভেতর তোমার শারীরিক সুস্থতার কথাও উঠল। কথা হলো খুব শিগগিরই তোমাকে নিয়ে দেশের বাইরে গিয়ে তোমার হার্টের বাইপাসটা করিয়ে আসব। তুমি এবার খুব সহজেই সম্মতি দিলে, কী জানি কী ভেবে? নিজেই পকেট থেকে হার্টের ওষুধটা বের করে দেখিয়ে বললে, নিয়ে যাচ্ছি সাথে, তবে একদিন আর জিভের নিচে দিতে হয়নি, বেশ সুস্থ বোধ করছি—এ রকম আরও কত কথা। কিন্তু তখন কি ঘুণাক্ষরেও জানতাম ওই কথোপকথনই হবে তোমার সঙ্গে আমার শেষ কথা?
সেদিনই রাতে শেষ হলো কবিতা উৎসব, সাথে সাথে তুমিও হারিয়ে গেলে। আর ফেরোনি বাড়ি। তোমার অপেক্ষায় আমি তো তখন না খেয়ে বসে আছি। তুমি কি দেখেছ দূর থেকে?
বেশ কিছু দিন থেকেই তুমি আমাকে মাঝে মাঝেই ডেকে পাঠাতে। কী এক জরুরি কথা বলার আছে। কিন্তু একদিনের জন্যও তোমার সেই জরুরি কথাটা শেষ পর্যন্ত আমার কাছে বলতে পারোনি। যা তোমাকে প্রতিনিয়ত ব্যথিত করেছে, তোমার ভেতরটাকে ঝাঁঝরা করে দিয়েছে। কারণ তুমি তো কখনো কথার খেলাপ করোনি, সেটাই তোমাকে দিয়ে করিয়ে নিয়েছিল। তোমার ধারণায় তারা তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী, তুমি তা-ই ভাবতে, শেষ পর্যায়ে তোমার ভুল যখন ভাঙতে শুরু করেছিল, তখনই তুমি চলে গেলে। তোমার মৃত্যুর পর আমি বুঝেছিলাম কী ছিল তোমার সেই অতি জরুরি কথা। যে জিনিস তুমি আমাকে দিয়েছিলে, তা তুমি আমার জন্য রক্ষা করতে না পারার পরাজয় তোমাকে এভাবে শেষ করে দিচ্ছিল তা তো তখন আমি জানতাম না। এখন বুঝি—যখন সব শেষ হয়ে গেছে। যাকগে সেসব কথা। তোমার রেখে যাওয়া অজস্র কাজ, সেগুলো ঠিকভাবে সামাল দিতে, সেগুলো নেড়েচেড়ে গোছাতে গোছাতেই কেটে কেল ১৬টি বছর।
‘সখী’, শিল্পী: কামরুল হাসান.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১৯ গোলের দিনে এক নাইজেরিয়ানের ঝলক
আজকের ফলড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ৮: ০ ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ২ (৩): ২ (২) উত্তরা ইউনিভার্সিটি
শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি ৫: ২ আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলে আজ ছিল গোল–উৎসবের দিন। তিনটি ম্যাচে সব মিলিয়ে জালে বল জড়িয়েছে ১৯ বার! ফুটবলপ্রেমী দর্শকদের গোল দেখার তৃষ্ণা মিটেছে ষোলো আনা।
দিনটাই শুরু হয়েছিল গোলবন্যায়। প্রথম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিককে। এই টুর্নামেন্টে দ্বিতীয়বারের মতো অংশ নিল এশিয়া প্যাসিফিক।
বড় জয়ের পর দিনের দ্বিতীয় ম্যাচটি দেখল টাইব্রেকারের চরম উত্তেজনা। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ৩-২ গোলে হারাল উত্তরা ইউনিভার্সিটিকে। তৃতীয় ম্যাচেও হলো ৭ গোল। শান্ত–মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি ৫-২ গোলে আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে তুলে নিয়েছে সহজ জয়।
ড্যাফোডিলের ৮ গোলের উৎসবে একাই ৫টি গোল করেছেন নাইজেরিয়ান শিক্ষার্থী আবু বক্কর ইউনুসার। প্লেসিং শট, নিখুঁত শট, বুদ্ধিদীপ্ত টোকা এবং হেডেও গোল করেছেন তিনি। ২২ বছর বয়সী তরুণ আবু বক্কর কম্পিউটারবিজ্ঞানের ছাত্র। খেলা তৈরিতেও দারুণ অবদান রাখেন। এ বছরই ফেব্রুয়ারিতে বড় ভাই আব্বাস ইউনুসার হাত ধরে ঢাকায় আসেন আবু বক্কর। গত বছর ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে ড্যাফোডিলকে চ্যাম্পিয়ন করার পেছনে আব্বাসের বড় ভূমিকা ছিল। তবে এবার বয়সের কারণে তিনি খেলতে পারছেন না। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী, ২৮ বছরের বেশি বয়স হলে এই প্রতিযোগিতায় খেলা যায় না। তবে মাঠে বসে আব্বাস দেখেছেন ছোট ভাই আবু বক্করের দুর্দান্ত ঝলক।
দারুণ পারফরম্যান্সের সুবাদে ম্যাচসেরার পুরস্কারও পেয়েছেন ড্যাফোডিলের আবু বক্কর।