চুয়াডাঙ্গায় তরুণের লাশ উদ্ধার, ঘোষণা দিয়ে প্রতিপক্ষ হত্যা করেছে– অভিযোগ পরিবারের
Published: 2nd, December 2025 GMT
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বেলগাছিতে এক তরুণকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তাঁর মরদেহ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেলগাছি গ্রামের খরার মাঠ থেকে উদ্ধার করা হয়।
নিহত সোহেল রানা (২৫) পৌর এলাকার বেলগাছি গ্রামের বকচরপাড়ার আসাবুল হকের ছেলে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ ঘোষণা দিয়ে গলা কেটে তাঁকে খুন করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেলগাছি গ্রামের কৃষকেরা স্থানীয় মাঠে কৃষিকাজ করতে গিয়ে সোহেল রানার গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান এবং স্বজনদের খবর দেন। বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অনুজ কুমার লাশের সুরতহাল তৈরি করে প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির গলায় সামনের দিকে বড় করে একটি কাটা দাগ ও পেছনে আরও একটি কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া মাথায় পূর্বের আঘাতের অন্তত চারটি কাটা দাগও রয়েছে।
নিহত ব্যক্তির বাবা আসাবুল হক বলেন, তিনি খেজুরগাছ কাটাসহ কৃষিকাজ করেন। সোহেল রানা এসব কাজে তাঁকে সহযোগিতা করতেন। সোমবার বিকেল থেকে বাবা ও ছেলে একসঙ্গে মাঠে কাজ করছিলেন। সন্ধ্যার দিকে বাড়ি থেকে ফোন এলে আসাবুল হক খড়ি (জ্বালানি কাঠ) নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দেন এবং সোহেল রানা পরে আসবেন বলে জানান। রাত ১০টা পর্যন্ত বাড়িতে না এলে তিনি চারদিকে খোঁজ করতে থাকেন। আজ মঙ্গলবার সকালে আবার খোঁজ করতে গিয়ে মাঠে ছেলের গলাকাটা লাশ দেখতে পান।
আসাবুল হকের অভিযোগ, একই গ্রামের জোয়ার্দ্দারপাড়ার ফারুক ও হারুনের সঙ্গে সোহেল রানার নানা কারণে বিরোধ ছিল। আট দিন আগে তারা সোহেল রানার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করেছিল, তাতেও সে বেঁচে গিয়েছিল। এরপর হামলাকারীরা কয়েক দিন ধরে তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছিল।
নিহত ব্যক্তির ভাই জামাল হোসেন বলেন, ‘৪–৫ দিন আগে সোহেল রানা খেজুরগাছ থেকে রসের ভাঁড় পাড়তে আসেন। জমির আইল দিয়ে যাওয়ার সময় পেয়ারাবাগানের জমিতে পা দেওয়ায় কথা–কাটাকাটি হয়। এরপর ফারুকসহ তিন-চারজন মিলে গালাগালি দিয়ে দা দিয়ে মাথায় আঘাত করে। সোমবার তাঁর মাথার সেলাই খোলা হয়। এরপর সোহেলকে একা পেয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে। আজ সকালে ফারুক নিজেই লাশ দেখতে এসেছিল। আমি তাকে বলি, “তুই আমার ভাইকে খুন করেছিস।” ফারুক তখন বলে, “তোর ভাইকে খুন করেছি তো কী হয়েছে?”’
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, গতরাত থেকে ভোররাতের মধ্যে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। লাশের সুরতহাল তৈরি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তও করা হবে। ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের গ্রেপ্তার করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মসজিদে বিয়ে, স্বামীর বয়স নিয়ে আলোচনা, মুখ খুললেন ফারিয়া
কয়েক মাস আগে দ্বিতীয়বার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন আলোচিত অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। তার বরের নাম তানজিম তৈয়ব। রাজধানীর একটি মসজিদে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন তারা। মসজিদে বিয়ে করায় নেটিজেনদের একাংশ্যের কটূ কথাও শুনতে হয়েছে তাকে। কেবল তাই নয়, বরের বয়স নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ‘দেবী’খ্যাত এই অভিনেত্রী।
এতদিন ব্যাপারটি নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করেননি শবনম ফারিয়া। কয়েক দিন আগে একটি টিভি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী।
আরো পড়ুন:
‘নয়ছয়’-এর নির্মাতা রাফায়েলকে বিয়ে করলেন অভিনেত্রী মম
বিয়েতে কনে উপহার পেলেন ১০০ খাটাশ
মসজিদে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত কেন নিয়েছিলেন, তার কারণ ব্যাখ্যা করে শবনম ফারিয়া বলেন, “বাংলাদেশে কোনো ছেলে বা মেয়ে যখন বিয়ে করেন তখন কি ছেলে বা মেয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেন? আমার যেহেতু বাবা নেই, তাই জীবনের যেকোনো সিদ্ধান্ত মা ও বড় দুই বোন-বোন জামাইয়ের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে আসতে হয়।”
মসজিদে বিয়ের ব্যাপারটা গোপন রাখতে চেয়েছিলেন ফারিয়া। বিবাহোত্তর সংবর্ধনা দিয়েই বিয়ের খবর জানানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। ব্যাপারটা মসজিদ থেকেই কোনো এক গণমাধ্যমে জানানো হয়েছিল। এরপর মসজিদে তোলা একটি ছবি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। না জানিয়ে বিয়েটা মানুষ স্বাভাবিকভাবে নেয়নি; পরে স্বামীর পরামর্শে ফেসবুকে বিয়ের খবর দেন বলেও জানান শবনম ফারিয়া।
শবনম ফারিয়ার স্বামীর বয়স নিয়েও সমালোচনা হয়েছে। অনেকে দাবি করেন, তার বর তার চেয়ে বয়সে ছোট। এ বিষয়ে শবনম ফারিয়া বলেন, “আমার হাজব্যান্ড অনেক ফিট। সে কারণে তাকে তরুণ দেখায়। কিন্তু ওর অনেক বয়স। সেটা একদমই বোঝা যায় না। আমার থেকে বয়সে বেশ বড়।”
এ পরিস্থিতিতে শ্বশুরবাড়ির লোকজনরে কাছ থেকে খুব সহযোগিতা পেয়েছিলেন ফারিয়া। শ্বশুর-শাশুড়ি অভিনেত্রীকে বলেছেন, “এসবে পাত্তা না দিতে, তিন–চার দিন পর এমনিতেই মানুষ ভুলে যাবে।”
২০১৫ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে হারুন অর রশীদ অপুর সঙ্গে পরিচয় হয় শবনম ফারিয়ার। এরপর দুজনের মাঝে তৈরি হয় ভালো বন্ধুত্ব। বন্ধুত্বের সীমানা পেরিয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আংটি বদল করেন তারা। ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এই জুটি। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সংসার ভাঙার ঘোষণা দেন ফারিয়া। এরপর অপু বিয়ে করলেও একা ছিলেন ফারিয়া।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন শবনম ফারিয়া। সেদিন বাদ আসর রাজধানীর মাদানি অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত মসজিদ আল মুস্তাফায় দুই পরিবারের উপস্থিতিতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন এই অভিনেত্রী। এসময় তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও নিকট আত্মীয়রা উপস্থিত ছিলেন। তার বর তানজিম তৈয়ব বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা। চলতি বছরের শেষে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন বলে জানিয়েছেন ফারিয়া।
ঢাকা/শান্ত