ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গত ২ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হলেও তা আজ বেড়েছে।
এদিন আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন কমলেও সিএসইতে বেড়েছে। তবে পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম বেড়েছে।
বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর ডিএসইএক্স সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়। লেনদেন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৬.
ডিএসইতে মোট ৩৮৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ২৮৫টি কোম্পানির, কমেছে ৫৬টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৭টির।
এদিন ডিএসইতে মোট ৩৭৯ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ০.৮৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৫৩৬ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১.৯২ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৮৫০ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৩.৬০ পয়েন্ট বেড়ে ৮৭৫ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১৩.৮২ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ২৯০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সিএসইতে মোট ১৬৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৮৭টি কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮টির।
সিএসইতে ১২ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
ঢাকা/এনটি/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল খ ট ক র শ য় র ও ইউন ট ল নদ ন শ ড এসই স এসই
এছাড়াও পড়ুন:
বিএসইসির সিদ্ধান্তহীনতায় লেনদেন বন্ধ এক ব্রোকারেজ হাউসের, বিপাকে ২২ হাজার বিনিয়োগকারী
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সিদ্ধান্তহীনতায় এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে একটি ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেন। তাতে ওই ব্রোকারেজ হাউসের প্রায় ২২ হাজার বিনিয়োগকারী বিপাকে পড়েছেন। হঠাৎ করে ব্রোকারেজ হাউসটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা লেনদেনে অংশ নিতে পারছেন না।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, ডিলার ও লেনদেন সনদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় ২৪ নভেম্বর ট্রেডক্যাপ স্টক ব্রোকারেজের লেনদেন স্থগিত করে দেয়। ব্রোকারেজ হাউসটির আগের নাম ছিল আনোয়ার খান মর্ডাণ সিকিউরিটিজ। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এটি মালিকানা বদল হয়। প্রতিষ্ঠানটির সব দায়দেনা ও সম্পদ কিনে নেয় ট্রেডক্যাপ স্টক ব্রোকারেজ। মালিকানা বদলের পর ডিএসইতে ব্রোকারেজ হাউসটির নাম বদলে হয় ট্রেডক্যাপ স্টক ব্রোকারেজ। মালিকানা বদলের পরপর নতুন প্রতিষ্ঠানটি নাম বদল ও লাইসেন্স নবায়নের আবেদন করে ডিএসইতে। ডিএসইর পক্ষ থেকে সেই আবেদন অনুমোদনের জন্য বেশ কয়েক মাস আগে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিতে পাঠানো হয়।
কিন্তু বিএসইসিতে প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স নবায়ন ও নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকায় এরই মধ্যে লাইসেন্সটি মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। তাতে হঠাৎ করেই ডিএসইর পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটির লেনদেন স্থগিত করে দেওয়া হয়। তাতে বিপাকে পড়েছেন এই ব্রোকারেজ হাউসে লেনদেনকারী ২২ হাজার বিনিয়োগকারী। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারী তাঁদের অসুবিধার কথা জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স নবায়ন ও নাম বদলের ছাড়পত্রের বিষয়ে বিএসইসির কোনো সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় ডিএসইও এটির লেনদেন চালুর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে সব ধরনের কাগজপত্র বিএসইসিতে পাঠানো হয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রয়োজনীয় ফিও প্রতিষ্ঠানটি পরিশোধ করেছে। আর কোনো কাগজপত্রের দরকার আছে কি না, সে বিষয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। এদিকে লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় লেনদেন বন্ধ করা ছাড়া আমাদের কাছে কোনো উপায়ও নেই। আবার কবে লেনদেন চালু করা যাবে, তা বিএসইসির সিদ্ধান্ত না পেলে আমরাও বলতে পারছি না। এমন এক পরিস্থিতিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ভোগান্তিতে পড়লেও আমাদের করণীয় কিছু নেই।’
নিয়ম অনুযায়ী, শেয়ারবাজারে লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ব্রোকারেজ হাউসের লাইসেন্স বা সনদ নির্ধারিত সময় পরপরই নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে নবায়ন করতে হয়। এর মধ্যে কোনো প্রতিষ্ঠানের মালিকানা বদল বা নাম বদল হলেও সেটি বিএসইসিকে অবগত করতে হয়। সেই সঙ্গে নতুন নামে ব্রোকারেজ হাউসটি লাইসেন্স স্থানান্তরের আইনি বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। সেটি পালন করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এখন ভোগান্তিতে পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক্করণ সংক্রান্ত ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী এখন কোনো ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেনস্বত্ব বিক্রির সুযোগ নেই। তবু মালিকানা বদলের পাশাপাশি কেউ কেউ সেটি করছেন। তবে কী কারণে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানটির সনদ নবায়ন আটকে আছে, সেটি সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা না বলে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না।’
ডিএসই–সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেনস্বত্ব বিক্রির ক্ষেত্রে ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন বিধিনিষেধ থাকলেও কেউ যদি প্রতিষ্ঠানের সব দায়দেনা ও সম্পদ কিনে নেয়, সে ক্ষেত্রে আইনে কোনো বাধা নেই। আনোয়ার খান মডার্ন সিকিউরিটিজের মালিকানা বদলের ক্ষেত্রে সব দায়দেনা ও সম্পদ একসঙ্গে বিক্রি হয়েছে। এ কারণে এখানে আইনগত কোনো বিধিনিষেধ নেই। তাই আমরা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো এটির নাম বদল ও লেনদেনের অনুমোদন দিয়েছি। এখন বিএসইসির নবায়ন সনদ আটকে যাওয়ায় লেনদেন স্থগিত করতে হয়েছে।