চেক জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ, গা ঢাকা দিয়েছেন অনুপ
Published: 2nd, December 2025 GMT
মৌলভীবাজারের রাজনগর ও বড়লেখা উপজেলায় সরকারি তহবিল থেকে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে এক কোটি ৭২ লাখ ৫১ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা পরিষদের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর (সিএ) অনুপ চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে।
সাবেক জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেনের তদন্তে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি ফাঁস হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শাহিনা আক্তারের তদন্তে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে রাজনগর উপজেলায় বিভিন্ন তহবিল থেকে এক কোটি ৫০ লাখ ৫১ হাজার ৪৫৫ টাকা এবং বড়লেখা উপজেলায় মাত্র দুই মাসে ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন অনুপ দাস। সূত্র জানিয়েছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে বড়লেখা বদলি করা হয়। কিন্তু বদলি হওয়ার আগেই তিনি চেক জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
উপজেলা প্রশাসনের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, অনুপ দাস হাটবাজার তহবিল থেকে ৮০ লাখ ৫১ হাজার টাকা, রাজস্ব তহবিল থেকে ৪০ লাখ টাকা, উন্নয়ন তহবিল থেকে ৩১ লাখ টাকাসহ মোট এক কোটি ৫১ লাখ ৫১ হাজার ৪৫৫ টাকা আত্মসাৎ করেন। তিনি চেক প্রস্তুতের সময় টাকার অঙ্কের ঘর ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁকা রাখতেন। ইউএনওর স্বাক্ষরের পর তিনি সেই ফাঁকা স্থানে নিজের মতো করে অতিরিক্ত সংখ্যা বসিয়ে চেকে অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে নিতেন। এভাবে একের পর এক চেকের মাধ্যমে তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ করলেও বিষয়টি দীর্ঘদিন কারও নজরে আসেনি।
গত ২৮ অক্টোবর সদ্যবিদায়ী জেলা প্রশাসক মো.
এ বিষয়ে জানতে অনুপ দাসের মোবাইল ফোনে কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ দিকে ঘটনা জানাজানি হলে বিষয়টি সামাল দিতে অনুপের স্ত্রী জুমি রানী ২২ লাখ টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গালিব হোসেন বলেন, ‘‘ঘটনা জানার পর আমরা অনুপ দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে তার স্ত্রী ২২ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন।”
তিনি আরও জানান, বড়লেখা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো মামলা হয়নি; তবে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
রাজনগর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ-জোহরা বলেন, ‘‘অনুপ দাস বড়লেখায় কর্মরত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা বড়লেখা উপজেলা প্রশাসন নিতে পারে।’’
এ দিকে প্রশ্ন উঠেছে, এত বড় অঙ্কের সরকারি লেনদেন একজন সিএ একা কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন? কেউ কি তাকে সহযোগিতা করেছে কিনা তদন্তে উঠে আসা দরকার। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক তৌহিদুজ্জামান পাভেল বলেন, ‘‘আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। এখানে অন্য কেউ সম্পৃক্ত আছে প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/আজিজ//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল খ ৫১ হ জ র তহব ল থ ক অন প দ স র জনগর উপজ ল ব ষয়ট তদন ত বড়ল খ যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
চেক জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাৎ, গা ঢাকা দিয়েছেন অনুপ
মৌলভীবাজারের রাজনগর ও বড়লেখা উপজেলায় সরকারি তহবিল থেকে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে এক কোটি ৭২ লাখ ৫১ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা পরিষদের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর (সিএ) অনুপ চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে।
সাবেক জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেনের তদন্তে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি ফাঁস হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শাহিনা আক্তারের তদন্তে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে রাজনগর উপজেলায় বিভিন্ন তহবিল থেকে এক কোটি ৫০ লাখ ৫১ হাজার ৪৫৫ টাকা এবং বড়লেখা উপজেলায় মাত্র দুই মাসে ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন অনুপ দাস। সূত্র জানিয়েছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে বড়লেখা বদলি করা হয়। কিন্তু বদলি হওয়ার আগেই তিনি চেক জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
উপজেলা প্রশাসনের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, অনুপ দাস হাটবাজার তহবিল থেকে ৮০ লাখ ৫১ হাজার টাকা, রাজস্ব তহবিল থেকে ৪০ লাখ টাকা, উন্নয়ন তহবিল থেকে ৩১ লাখ টাকাসহ মোট এক কোটি ৫১ লাখ ৫১ হাজার ৪৫৫ টাকা আত্মসাৎ করেন। তিনি চেক প্রস্তুতের সময় টাকার অঙ্কের ঘর ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁকা রাখতেন। ইউএনওর স্বাক্ষরের পর তিনি সেই ফাঁকা স্থানে নিজের মতো করে অতিরিক্ত সংখ্যা বসিয়ে চেকে অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে নিতেন। এভাবে একের পর এক চেকের মাধ্যমে তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ করলেও বিষয়টি দীর্ঘদিন কারও নজরে আসেনি।
গত ২৮ অক্টোবর সদ্যবিদায়ী জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন রাজনগর উপজেলা পরিষদ পরিদর্শনের সময় হিসাব নিরীক্ষায় অসংগতি লক্ষ্য করেন। ক্যাশবই ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট মিলিয়ে দেখতেই চেক জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসে। পরে জেলা প্রশাসন ও দুদক যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে।
এ বিষয়ে জানতে অনুপ দাসের মোবাইল ফোনে কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ দিকে ঘটনা জানাজানি হলে বিষয়টি সামাল দিতে অনুপের স্ত্রী জুমি রানী ২২ লাখ টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গালিব হোসেন বলেন, ‘‘ঘটনা জানার পর আমরা অনুপ দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে তার স্ত্রী ২২ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন।”
তিনি আরও জানান, বড়লেখা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো মামলা হয়নি; তবে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
রাজনগর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ-জোহরা বলেন, ‘‘অনুপ দাস বড়লেখায় কর্মরত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা বড়লেখা উপজেলা প্রশাসন নিতে পারে।’’
এ দিকে প্রশ্ন উঠেছে, এত বড় অঙ্কের সরকারি লেনদেন একজন সিএ একা কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন? কেউ কি তাকে সহযোগিতা করেছে কিনা তদন্তে উঠে আসা দরকার। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক তৌহিদুজ্জামান পাভেল বলেন, ‘‘আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। এখানে অন্য কেউ সম্পৃক্ত আছে প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/আজিজ//