বোনকে বাসে তুলে দিতে গিয়েছিলেন ভাই। চালকের সহযোগী ‘বাসে সিট আছে’ বলে তাঁদের গাড়িতে তোলেন। কিন্তু সিট খালি না থাকায় চালকের সহযোগীর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান ভাই। তখন চালকের সহযোগী তাঁকে মারধর করে বাস থেকে ফেলে দেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার দুপুরে ওই ভাই মারা যান।

গত রোববার বিকেলে রাজশাহী নগরের লিলিহলের বাঁশের আড্ডা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম আলাউদ্দিন ইসলাম ওরফে টগর (৩৫)। বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুরের কুলপাড়ায়। পেশায় তিনি কৃষক ছিলেন। গতকাল বেলা দেড়টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ নিয়ে নগরের কাশিয়াডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।

নিহত আলাউদ্দিনের চাচাতো ভাই আল-আমীন জানান, তাঁর চাচাতো বোন রুমি খাতুনের শ্বশুরবাড়ি গোদাগাড়ীতে। বোনকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের একটি বাসে উঠিয়ে দিতে গিয়েছিলেন আলাউদ্দিন। চালকের সহযোগী তাঁদের জানান, ‘বাসে সিট আছে।’ কিন্তু ভেতরে গিয়ে আলাউদ্দিন দেখেন, বাসে কোনো সিট খালি নেই। তখন এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চলন্ত বাসে আলাউদ্দিনকে মারধর করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়।

আল-আমীন বলেন, আলাউদ্দিনকে সড়কে পড়ে থাকতে দেখে বোন রুমি কোলের বাচ্চাকে পাশের যাত্রীর কাছে দিয়ে দ্রুত বাস থেকে নামেন। তখন একটি মাইক্রোবাস বাসটিকে থামিয়ে দেয়। পরে কাশিয়াডাঙ্গা থানা-পুলিশ বাসটি হেফাজতে নেয়।

কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুল বারী বলেন, সিট আছে বলে যাত্রী তুলে হেলপার-সুপারভাইজার সিট দিতে পারেননি। এরপর তাঁরা উল্টো আলাউদ্দিনকে মারধর করে বাস থেকে ফেলে দেন। এতে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গতকাল রাতে আলাউদ্দিনের ভাই দুলাল হোসেন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। বাসের চালক ও তাঁর সহযোগী পলাতক। বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এজাহারে তাঁদের নাম নেই। তাঁদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের পর আলাউদ্দিনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

যোগাযোগ করলে রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ঘটনাটি ‘দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করেন। তবে তিনি দাবি করেন, আলাউদ্দিন বোনকে বাসে তুলে দিয়ে নামতে দেরি করেন। এর মধ্যে বাস ছেড়ে দেয়। তিনি নামতে চাইলে বাসের সহকারী ‘টাইমের গাড়ি’ উল্লেখ করে সামনে নামিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির সময় ওই ব্যক্তি বাসের সহকারীকে বাসের ভেতর মারধর করেন। তখন সহকারী বলেন, ‘আপনি আমাকে মারলেন, সামনে কাশিয়াডাঙ্গায় আমাদের মাস্টার আছে, সেখানে চলেন।’ এ কথা শুনে ওই ব্যক্তি বাস থেকে লাফ দেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দুই হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে দোয়া 

বিএনপির চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দুই হাজার মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নিয়ে দোয়া করলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। 

মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার তারটিয়া জামিয়া আলহেরা মাদ্রাসায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। 

এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার রাশেদুল হাসান রাশেদ ও শফিকুর রহমান খান শফিক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজগর আলীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। 

সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শাপলা চত্বরে হুজুরদের গুলি করে হত্যার প্রতিবাদ করেছেন। দেশে জুলুম নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে হবে। দেশকে বাঁচাতে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন। অন্তর থেকে সকলেই দোয়া করবেন। মহান রাব্বুল আলামিন যেন আমাদের নেত্রীকে সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন।’’ৎ
এ সময় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

ঢাকা/কাওছার//

সম্পর্কিত নিবন্ধ