ইংল্যান্ডের সাবেক ব্যাটসম্যান রবিন স্মিথ মারা গেছেন। ৬২ বছর বয়সী স্মিথ গতকাল রাতে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পার্থে নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন।
কাউন্টি দল হ্যাম্পশায়ারে খেলা স্মিথ ইংল্যান্ডের হয়ে ৬২ টেস্টে ৪৩.৬৭ গড়ে ৯ সেঞ্চুরিসহ ৪২৩৬ রান করেন। ৭১ ওয়ানডেতে ৩৯.০১ গড়ে চার সেঞ্চুরিসহ ২৪১৯ রান করেন স্মিথ। ১৯৯৬ সালে অবসর নেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ জানিয়েছে, স্মিথের সাবেক হ্যাম্পশায়ার সতীর্থ কেভান জেমস তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। জেমস বিবিসি রেডিও সোলেন্টে ক্রীড়া উপস্থাপক হিসেবে কাজ করেন।

আশি ও নব্বই দশকে দ্রুতগতির বোলিং সামলানোয় খ্যাতি ছিল স্মিথের। চুলের ছাঁটের জন্য ‘জাজি’ নামে পরিচিতি ছিল তাঁর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভয়ংকর পেসারদের বিপক্ষে অন্যতম সাহসী ব্যাটসম্যান ছিলেন। দক্ষ ছিলেন স্কয়ার কাটে। ব্রিটিশ পিতার ঘরে দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া এই ক্রিকেটারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার মাত্র আট বছরের। তবে এ সময় ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডারে ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৯৪ সালে অ্যান্টিগা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভয়ংকর পেস আক্রমণের বিপক্ষে তাঁর ১৭৫ রানের ইনিংসটি এই সংস্করণে ক্যারিয়ার–সেরা।

দ্রুতগতির বোলিং সামলানোয় খ্যাতি ছিল স্মিথের.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথম স্থায়ী কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের ৪৩ বছর

১৯৮২ সালের ২ ডিসেম্বর চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছিল। এই দিনে চিকিৎসকেরা প্রথমবারের মতো এক রোগীর দেহে একটি স্থায়ী কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড স্থাপন করেন। এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল জীবন ও মৃত্যুর সঙ্গে প্রযুক্তির এক কঠিন লড়াই, যা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত লাখ লাখ মানুষের জন্য আশার আলো নিয়ে আসে। আজ থেকে ৪৩ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উটাহ হেলথ কেয়ারে সম্পন্ন হওয়া সেই ঐতিহাসিক সার্জারি আজও চিকিৎসাক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত।

দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগে ভুগছিলেন ডেন্টাল সার্জন বার্নি ক্লার্ক। জীবন সংকটাপন্ন অবস্থায় এই ৬১ বছর বয়সী রোগী স্বেচ্ছায় পরীক্ষামূলকভাবে জারভিক-৭ নামের সেই কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।তাঁর অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন চিকিৎসক উইলিয়াম ডিভ্রিস ও তাঁর দল। প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টার দীর্ঘ ও জটিল অস্ত্রোপচারের পর কৃত্রিমভাবে তৈরি এই অঙ্গ বার্নি ক্লার্কের অকেজো হৃৎপিণ্ডের স্থানে বসানো হয়। জারভিক-৭ হৃৎপিণ্ডটি ছিল বায়ুচালিত, যা কাজ করার জন্য একটি বাহ্যিক কম্প্রেসরইউনিটের সঙ্গে টিউবের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকত। এই অস্ত্রোপচারসফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে মানুষ একটি যান্ত্রিক হৃৎপিণ্ড নিয়েও বেঁচে থাকতে পারে।

কৃত্রিম হৃৎপিণ্ডটির নাম ছিল এর অন্যতম উদ্ভাবক বিজ্ঞানী রবার্ট জারভিকের নামানুসারে জারভিক-৭। এটি ছিল অ্যালুমিনিয়াম ও পলিউরেথেন প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি একটি দুই প্রকোষ্ঠের ভেন্ট্রিকুলার পাম্প। বার্নি ক্লার্ক এই কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড নিয়ে ১১২ দিন বেঁচে ছিলেন।

বার্নি ক্লার্কের ওপর চালানো সেই পরীক্ষা ছিল এক সাহসী বৈজ্ঞানিক পদক্ষেপ। প্রথম প্রতিস্থাপনের পরবর্তী চার দশকে কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড-প্রযুক্তিতে আমূল পরিবর্তন দেখা গেছে। জারভিক-৭-এর মতো বায়ুচালিত যন্ত্রের অসুবিধা কাটিয়ে ওঠার জন্য গবেষকেরা ক্রমাগত কাজ করেছেন।

সূত্র: উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ