অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে সরকারি বাসা ছাড়ার নির্দেশ
Published: 2nd, December 2025 GMT
পাবনার ঈশ্বরদীতে পুকুরে পানিতে ডুবিয়ে আটটি কুকুরছানাকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তাকে সরকারি বাসভবন ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে এ নির্দেশনা দেয় উপজেলা প্রশাসন। অভিযুক্ত কর্মকর্তা হাসানুল রহমান উপজেলা কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনে কর্মরত।
এর আগে গতকাল সোমবার সকালে উপজেলা পরিষদের আবাসিক এলাকায় একটি পুকুর থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় আটটি কুকুরছানার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় লোকজন ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক সপ্তাহ আগে হাসানুল রহমানের সরকারি বাসভবনের আঙিনায় আটটি ছানার জন্ম দেয় একটি কুকুর। এরপর গতকাল সকাল থেকেই ওই পুকুরের পাশে ছোটাছুটি ও আর্তনাদ করছিল মা কুকুরটি। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুকুরটিতে একটি বস্তা ভাসতে দেখা যায়। পরে সেটির ভেতরে মৃত অবস্থায় আটটি কুকুরছানা পাওয়া যায়। আজও মা কুকুরটিকে আর্তনাদ করতে দেখা গেছে। সকাল থেকে মা কুকুরটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কক্ষের সামনে ঘোরাঘুরি করছিল। কিছুতেই কুকুরটিকে সেখান থেকে সরানো যাচ্ছিল না।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা পরিষদ গিয়ে দেখা যায়, মা কুকুরটি উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় তলায় ইউএনওর কক্ষের সামনে ঘুরঘুর করছে। এটিকে সেখান থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করেও সফল হয়নি কয়েকজন কর্মচারী। দুপুর ১২টার দিকে কুকুরটিকে আদর করে নিচে নামান কয়েকজন, তবে বিকেল পর্যন্ত কুকুরটিকে উপজেলা পরিষদের আশপাশে ঘুরঘুর করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈশ্বরদীর ইউএনও মো.
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঈশ্বরদীর সাবেক ইউএনও সুবীর কুমার দাশও। তিনি গতকাল দুপুরে ফেসবুকে তিনি এক পোস্টে লিখেন ‘আমার সাবেক কর্মস্থলে কয়েকটি পোষা কুকুর ছিল, যার একটির নাম লাল্টু। ওর জন্ম থেকে আমি লালনপালন করেছি। আমার বদলির পর সেখানে কুকুরছানাদের ওপর অন্ধকার নেমে আসে। আজ সকালে শুনেছি, উপজেলা পরিষদের একজন সরকারি কর্মকর্তা ও তাঁর পরিবার কুকুরছানাগুলোকে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন। আমি সরকারের কাছে এই হত্যার বিচার চেয়েছি।’
প্রকৃতি ও বন্য প্রাণীবিষয়ক স্থানীয় সংগঠন ‘নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনসার্ভসন কমিউনিটির সভাপতি এহসান আলী বিশ্বাস বলেন, জীবজন্তুদের রক্ষায় দেশে আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হলে, এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।
আইন অনুযায়ী কুকুরছানাগুলোকে হত্যা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি। আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।’
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ স ম আবদুর নূর বলেন, ‘বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। উপজেলা প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি। আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।’
এদিকে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন অভিযুক্ত কর্মকর্তা হাসানুল রহমান। তিনি বলেন, ‘সন্তানদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমার স্ত্রী ছানাগুলোকে সরিয়ে দিতে বলেছিল। কিন্তু এগুলো যে মারা যাবে, তা ভাবিনি। আমি এই ঘটনায় লজ্জিত ও দুঃখিত।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জয়ার ঘরোয়া ভিডিওতে নেটিজেনদের মাতামাতি
চলচ্চিত্রে জয়া আহসান যেন প্রতিটা রূপেই দর্শকদের জন্য আলাদা চমক। পর্দায় যেমন, তেমনই সোশ্যাল মিডিয়াতেও তিনি যেন আলো-ছায়ার অনন্য মিশেল। এবার আলো কিংবা ক্যামেরা—কোনো কিছুরই প্রয়োজন হয়নি। একেবারেই ঘরোয়া, একেবারেই নিজের মতো জয়া হাজির হলেন ভোরের লুকে।
তার শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, বাহারি সবুজে ভরা তার ছাদবাগান। লাউ, লেবু, ফুল-সবুজে যেন ছোট্ট এক স্বর্গ। ভিডিওতে লাউ তুলতে তুলতেই অকপটে হেসে জয়া বলে ফেললেন, “সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে মুখ না ধুয়ে চলে এসেছি, আমার মাথায় তেল!”
আরো পড়ুন:
পাওনা দিতে পারলে শিল্পটা আজ হারিয়ে যেত না: জয়া
‘মানুষ বলে, আমার পুরো শরীর প্লাস্টিক সার্জারি করা’
এই এক বাক্যেই যেন কোটি টাকার গ্ল্যামার ভেঙে পড়ে চরম বাস্তবতা। ভক্তদের সবচেয়ে বেশি আপন করে নেয়। ক্যাপশনে জয়া লিখেছেন অ্যালিস বি. টোকলাসের বিখ্যাত উক্তি, “নিজ হাতে ফলানো সবজি তোলার মতো সন্তোষজনক বা রোমাঞ্চকর আর কিছুই নেই।”
মন্তব্যের ঘরে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। মো. আবু বায়েজিদ এসকে লিখেন, “আপনার এত ব্যাস্ততার ভিতর বাগানের পিছনে যে সময় দেন তা আমাদের অনেকের জন্য অনুকরণীয়। জানি না এই লেখা আপনার নজরে আসবে কি না। আমার কাছে একটা মরিচের ভ্যারাইটি আছে যেটা বিশ্বের সব থেকে দামি মরিচ হিসেবে স্বীকৃত, ‘আজি চারপিতা মরিচ’। আপনি আগ্রহী হলে পাঠিয়ে দিতে পারব।” এর উত্তরে জয়া লিখেন, “অবশেষ ধন্যবাদ, মরিচ চারা পেতে অবশ্যই আগ্রহী।”
গ্ল্যামারের আড়ালে তার এই সাদামাটা মাটির টান দেখে মুগ্ধ নেটিজেনরা। তারকা হয়েও প্রকৃতির সঙ্গে এত নিবিড় সম্পর্ক, খালি মুখে-তেলে মাথায় ছাদে ছুটে যাওয়া—এই সরলতা যেন দারুণভাবে ছুঁয়ে গেছে ভক্তদের মন।
বাগান পরিচর্যার ফাঁকে জয়া জানান, তার ছাদবাগানের একটি বিশেষ লেবু গাছের গল্পও—এটি তাকে উপহার দিয়েছিলেন তাদের লাইটম্যান নান্নু ভাই, তিনি গাছটি এনেছিলেন বাগেরহাট থেকে। একটি ফুলগাছের মরে যাওয়া ফুল আর ছোট্ট শিম গাছের কথাও জানান জয়া।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত