ঢাকায় পেপ্যালের প্রতিনিধি: আইসিটি বিভাগ ও ফ্রিল্যান্সারদের সঙ্গে ইতিবাচক বৈঠক
Published: 2nd, December 2025 GMT
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার ও ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত আন্তর্জাতিক লেনদেন গেটওয়ে ‘পেপ্যাল’ চালু হওয়া নিয়ে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। গতকাল সোমবার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, দেশের ফ্রিল্যান্স কমিউনিটি ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্রাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) প্রতিনিধি এবং পেপ্যাল (দক্ষিণ এশিয়া ও সিঙ্গাপুর অঞ্চল) দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ বিষয়ে অত্যন্ত ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকটিতে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
বৈঠকে পেপ্যালের পক্ষ থেকে সিঙ্গাপুরভিত্তিক চারজন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের কর্মকর্তাও ছিলেন। তবে তাঁদের ছবি ও পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। ফ্রিল্যান্স কমিউনিটির পক্ষ থেকে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেয়। উপস্থিত ফ্রিল্যান্সারদের মতে বৈঠকটি ছিল অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ ও গঠনমূলক। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়াই ফ্রিল্যান্সারদের নিজেদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা সরাসরি পেপ্যাল প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরার পূর্ণ সুযোগ দেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্স বাজার এবং পেপ্যালের ব্যবসায়িক সম্ভাবনার বিষয়টি প্রাধান্য পায়। ফ্রিল্যান্সার কাজী মামুন কমিউনিটির পক্ষে একটি উপস্থাপনা দেন। তিনি তাঁর উপস্থাপনায় শুধু মার্কেটপ্লেসভিত্তিক কাজ নয়, বরং এজেন্সি ব্যবসা, এফবিএ, এফবিএম, ড্রপ শিপিং, স্যাস, প্লাগ-ইন ডেভেলপমেন্ট, ই-কমার্স, রিমোট জব, গুগল অ্যাডসেন্স, অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েটসহ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের প্রায় সব খাতের আয়ের চিত্র তুলে ধরেন।
মতবিনিময় সভায় বর্তমানে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স দেশে আনার ক্ষেত্রে পেওনিয়ার, স্ট্রাইপ বা ওয়াইজ ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা, মুদ্রা বিনিময় হার, অতিরিক্ত চার্জ এবং সময়ের অপচয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। আলোচনায় কেন বাংলাদেশের জন্য একটি নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট গেটওয়ে অপরিহার্য, তা পেপ্যাল প্রতিনিধিদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন ফ্রিল্যান্সাররা।
বৈঠকে উপস্থিত ফ্রিল্যান্সার ও উদ্যোক্তা মাসুম বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পেপ্যাল প্রতিনিধিদের মনোভাব ছিল বেশ ইতিবাচক। তারা বাংলাদেশের বাজারের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে নোট করেছেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে পাল্টা প্রশ্ন করে জেনে নিয়েছেন।’ লুৎফে সিদ্দিকী তাঁর ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আলোচনাটি সমন্বয় করেন।
জানা গেছে, পেপ্যাল প্রতিনিধিরা আগামী দুই থেকে তিন বাংলাদেশে অবস্থান করবেন। এ সময়ের মধ্যে তাঁরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিডার চেয়ারম্যান এবং একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করবেন। সরকারের এসব নীতিনির্ধারক ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার পর তাঁরা ফিরে গিয়ে নিজেদের মধ্যে পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন।
ফ্রিল্যান্সার কাজী মামুন বলেন, ‘চূড়ান্ত ফলাফল কী হবে, তা সময়ের ব্যাপার, তবে বৈঠকের পরিবেশ এবং আইসিটি বিভাগের আন্তরিকতা আমাদের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে। পেপ্যালের মতো একটি গেটওয়ে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করলে ভবিষ্যতে স্ট্রাইপ আসার পথ সুগম হবে এবং ওয়াইজের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোও পুরোপুরিভাবে তাদের কার্যক্রম হয়তো শুরু করবে। বৈদেশিক মুদ্রা নীতিমালা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু নীতিগত বিষয়ের সুরাহা হলে এবং পেপ্যাল ইতিবাচক সাড়া দিলে তা বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য একটি বড় মাইলফলক হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক সুরঞ্জিত বরখাস্ত
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মৌলভীবাজার জেলা সঞ্চয় অফিসের সহকারী পরিচালক সুরঞ্জিত দাশকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে এ তথ্য জানা যায়।
আরো পড়ুন:
নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ঋণের ৬ষ্ঠ কিস্তি দেবে আইএমএফ
চলতি অর্থবছরে পণ্য ও সেবা রপ্তানির লক্ষ্য ৬৩.৫ বিলিয়ন ডলার
আদেশ সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলা সঞ্চয় অফিস/ব্যুরোর সহকারী পরিচালক সুরঞ্জিত দাশকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পলায়ন ও অসদাচরণের অভিযোগে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(গ) ও ৩(খ) বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিধিমালা ২০১৮-এর ১২(১) অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা প্রয়োজন ও সমীচীন। সে পরিপ্রেক্ষিতেই ওই বিধি অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে আদেশ উল্লেখ আছে।
ঢাকা/এএএম/এসবি