চবি ক্যাম্পাসে ভুয়া শিক্ষার্থী আটক
Published: 2nd, December 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাস থেকে সীমান্ত ভৌমিক (২২) নামে এক ভুয়া শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পাওয়ায় পরিবারকে বোঝাতে এমন ভুয়া শিক্ষার্থী সেজেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে ধরে এনে প্রক্টর অফিসে হস্তান্তর করেন। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তরের হেফাজতে রয়েছেন।
আরো পড়ুন:
বেরোবিতে শিক্ষার্থীকে ছাত্রদল নেত্রীর মামলার হুমকি
চট্টগ্রামে ৯টি সরকারি স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত
সীমান্ত ভৌমিকের বাড়ি খুলনা সদরে। বাবা বিপ্লব ভৌমিক ও মা ভারতী ভৌমিক। ২০২৪ সাল থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয়ে ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরা করছিলেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাসের আরকে টাওয়ারের পাশে ভাড়া বাসায় থাকতেন সীমান্ত। কয়েক দিন ধরে সন্দেহজনক আচরণে তাকে নজরদারিতে রাখেন তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে সন্দেহ আরো প্রবল হলে জিজ্ঞাসাবাদে সীমান্ত স্বীকার করেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন। আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) তারা তাকে প্রক্টরিয়াল অফিসে নিয়ে যান।
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো.
আটক সীমান্ত ভৌমিক বলেন, “আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাও দিয়েছি, তবে চান্স পাইনি। আমার বাবা-মাসহ পরিবারের সবাই জানে যে আমি চবিতে পড়াশোনা করি।”
তার ভাষ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন তিনি বিভিন্ন দোকানদার ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোট ১৮ হাজার ৬০০ টাকা ধার নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, “শিক্ষার্থীরা এখন অনেক সচেতন। তাদের উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থী সেজে ঘুরে বেড়ানো সীমান্তকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জেনেছি, তিনি বহুজনের সঙ্গে লেনদেনে জড়িত। তাকে নিরাপত্তা দপ্তরে হস্তান্তর করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নিরাপত্তা দপ্তরের সুপারভাইজার সাহেদুল আলম বলেন, “সীমান্ত এখন নিরাপত্তা দপ্তরের হেফাজতে আছে। তার বাবা-মাকে ডাকা হয়েছে। তারা কাল সকালে পৌঁছাবেন। তাদের উপস্থিতিতে আটক সীমান্তের লেনদেনগুলো পরিশোধ করা হবে। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মিজানুর/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
একজন মহুয়া রউফ
‘জীবন আমার কাছে অপার সম্ভাবনাময়। এই সম্ভাবনা ছুঁয়ে দেখতে হলে স্বপ্ন ও নিরলস প্রচেষ্টা একসঙ্গে চালাতে হবে। কখনও আপনার হয়তো পরিশ্রম বেশি হচ্ছে কিন্তু আপনি সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন না; তখন আপনার অস্থির হলে চলবে না।’ কথাগুলো বলছিলেন ভূ-পর্যটক ও লেখক মহুয়া রউফ। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখা নিয়ে পড়তে আগ্রহী হলেও লিখতে চান শুধু ভ্রমণ নিয়ে। এই অভিযাত্রী ধীরে ধীরে নিজের ভ্রমণ দক্ষতা বাড়িয়েছেন। কতটি দেশ ভ্রমণ করা হলো, এটি তার কাছে বড় বিষয় নয়; মহুয়ার কাছে বড় বিষয় হলো ভিন জাতি-গোষ্ঠীর জীবন যাপন দেখা। কোনো দেশে ঘুরতে গেলে তিনি পৌঁছে যেতে চান একেবারে সীমান্তে। কারণ সীমান্তে কাছাকাছি বসবাসকারী মানুষের জীবন অনেকাংশ ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র। সীমান্তে সাধারণত আদিবাসীরা বসত করেন। তাদের সংস্কৃতি কাছ থেকে দেখার এবং অনুভব করার সুযোগ খুঁজে বেড়ান মহুয়া। এই চাওয়া থেকেই তিনি পৌঁছেছিলেন পৃথিবীর সর্বদক্ষিণ সীমান্তে অ্যান্টার্কটিকায়। ফিরে এসে লিখেছেন ‘দক্ষিণ দুয়ার খোলা’ বই। মহুয়া ঘুরে বেরিয়েছেন লাতিন আমেরিকায়। লিখেছেন ‘লাতিনের নাটাই’। তার লেখায় স্থাপত্যের চেয়ে মানুষ আর জনপদের বিষ্ময়কর দিকই বেশি প্রাধান্য পায়। তার ভ্রমণ বিষয়ক সাহিত্যের জন্য তিনি সম্প্রতি অর্জন করেছেন ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৪৩২’।
মহুয়া রউফ বলেন, ‘এই পুরস্কার আমার লেখক সত্তাকে আরও বেশি দায়িত্বশীল করে তুলবে। এটি একটি স্বীকৃতি’।
আরো পড়ুন:
আমৃত্যু সক্রিয় থাকব, অবসর নেব না: হাসনাত আবদুল হাই
ঘুমানোর অর্থ মৃত্যু আর জেগে ওঠা হলো জীবনের স্বপ্ন দেখা: হোর্হে লুই বোর্হেস
মহুয়ার পাঠ্যাভ্যাস গড়ে উঠেছে শৈশব-কৈশোরেই। মহুয়া রউফ বলেন, ‘আমার দাদা খুবই পড়ুয়া মানুষ ছিলেন এবং বাড়ির প্রথম সন্তান হিসেবে দাদার অধিক সান্নিধ্য পাওয়া, পড়ার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠার পেছনে অন্যতম কারণ। ’
স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দেওয়ার পরে ২০০৩ সালে বিয়ে করেন মহুয়া রউফ। বিবাহসূত্রে চট্টগ্রাম থেকে চলে আসেন রাজধানীতে। এরপর চাকরি শুরু করেন একটি কলেজে। তারপর দুটি উন্নয়ন সংস্থায় গবেষক হিসেবে চাকরি করেন। এরপর ২০১১ সালে টিআইবির (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ) একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্পে যুক্ত হন গবেষক হিসেবে। সেই চাকরিসূত্রে তার প্রথম বিদেশ ভ্রমণ হয় বার্লিনে। এরপর চাকরিসূত্রেই তিনি বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করে ফেলেন। এছাড়া উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি করার সুবাদে সারা দেশে ছিল তাঁর নিয়মিত ভ্রমণ।
২০১৫ সালে ‘প্রোগ্রাম ইভালুয়েশন’ বিষয়ে একটি ইন্টার্নশীপ সম্পন্ন করেন কানাডার কার্লটন ইউনিভার্সিটি থেকে। সেখানে পড়ালেখার পাশাপাশি মিলে কানাডার নানা শহর-প্রদেশ ভ্রমণের সুযোগ। ভ্রমণের সুযোগ আরও অবারিত হয় ২০১৬ সালে। ওই বছর টিআইবি থেকে ছুটি নিয়ে বেলজিয়ামের অ্যানটর্পেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ বিষয়ে তিনি তার দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর করতে যান মহুয়া বেলজিয়াম সরকারের বৃত্তি নিয়ে। ইউরোপে পড়ালেখার সময় এ মহাদেশের অধিকাংশ দেশ ঘুরেছেন। এতে ভ্রমণের দক্ষতা, রুচি ও সক্ষমতা বাড়তে থাকে। সে সময় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞাপন দেখলেন যে, মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়ার রাজধানী মানাগুয়ার ‘ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল আমেরিকা (উকা)’ তে বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষার্থীকে দুই মাসের জন্য ইন্টার্নশিপ করতে পাঠানো হবে।
মহুয়া রউফ বলেন, ‘তো ওখানে যেতে হলে পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষা দিলাম, পাস করলাম। আমি এবং আমার সহপাঠী ক্যাসান্দ্রা ওখানে গেলাম। দেখেন, সেখানেও কিন্তু আমার কোনো পয়সা খরচ হয়নি। কারণ আমার বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে পাঠিয়েছে। তারা আমার থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আমার থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিলো এক বয়ষ্ক নারীর সঙ্গে। যে বয়ষ্ক নারী স্প্যানিশে কথা বলে, ইংরেজি বোঝে না। আমি তার সাথে শুরুতে ইংরেজিতে কথা বলেছিলাম। দুই-তিন দিন পরে আমি খেয়াল করলাম, আমি বাংলায় কথা বলছি না কেন? তিনি যেহেতু ইংরেজি বোঝেন না, বাংলাও বুঝবেন না। এরপর তিনি কথা বলতেন স্প্যানিশে আমি বাংলায়।’
প্রথম লেখা প্রকাশের গল্পও জানালেন মহুয়া রউফ। আমরা যখন এই গল্প করছিলাম হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিলো। মালদ্বীপ থেকে আনা একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে টেবিলের মাঝখানে রাখলেন মহুয়া। সেই নিয়ন আলোয় চোখে মুখে উচ্ছ্বাস জাগিয়ে রেখে মহুয়া রউফ বললেন, ‘ স্প্যানিক ভাষায় কথাবলা ঐ নারীকে একদিন আমি খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ালাম। নানা দেশে আরও ভিনদেশী বন্ধুদের খিচুড়ি রান্না করে খাইয়েছি বাংলাদেশি পদ হিসেবে। তো সে সময় মজার একটি ঘটনা ঘটেছিলো—জানতে পারলাম বাংলাদেশে স্কুলের বাচ্চাদেরকে টিফিনে সরকার খাওয়াবে। সেজন্য সরকারি কর্মকর্তারা দেশের বাইরে খিচুড়ি রান্নার প্রশিক্ষণ নিতে যাবেন’ সেই বিষয়টাকে স্যাটায়ার করে ফেসবুকে পোস্ট দিলাম, ‘আমি আর কতো মহাদেশের কতো মানুষদের খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ালো সরকার আমাকে খিচুড়ি রান্নার প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেবেন’ সঙ্গে জুড়ে দিলাম নিকারাগুয়ার গল্প ও আরও তিন মহাদেশের নানা জনকে যে খিচুড়ি খাইয়েছি সে গল্প । কিন্তু এই পোস্টটা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লো এবং আমার কাছে একটি মেসেজ আসলো পশ্চিমবঙ্গ থেকে। লেখক ও সম্পাদক অমরেন্দ্র চক্রবর্তী আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড। তিনি ফেসবুকের মেসেঞ্জারে আমার সাথে কথা বললেন। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি এখনই এটা ডিলিট করে দেন, তাহলে এটা আমরা আমাদের শারদীয় সংখ্যায় ছাপাবো’। পরে আমি পোস্টটি অনলি মি করে রেখে লেখাটা আরেকটু সম্পাদনা করে অমরেন্দ্র চক্রবর্তীকে পাঠালাম। পশ্চিম বাংলার অত্যন্তও জনপ্রিয় ‘ভ্রমণ’ ম্যাগাজিনে আমার জীবনের প্রথম লেখা প্রকাশ হলো ‘বঙ্গীয় খিচুড়ি’ নামে।’
এরপর থেকেই লেখালিখিটা আরও সিরিয়াসলি নেন মহুয়া। এই পর্যটক ঘুরে বেরিয়েছেন নিকারাগুয়ায় মাসায়া, গ্রানাডাসহ বিভিন্ন জায়াগায়। এরপর ভ্রমণের প্রতি আরও আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ২০১৮ সালে পরিকল্পনা করে প্রথম ঘুরে দেখেছেন ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড। একে একে ভ্রমণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, পেরু, বলিভিয়া, আর্জেন্টিনা, মাক্সিকো, ব্রাজিল, চিলি, পানামা, কোষ্টারিকা, কিউবা ও আমাজন।
মহুয়া রউফ মনে করেন, ভ্রমণ মানুষের দেখার দৃষ্টি পাল্টে দেয়। তিনি বলেন, ‘চিলিতে আমি যখন নেরুদার বাড়িতে গিয়েছি, বিশ্বাস করুন আমার মনে হয়েছিলো আমি এতোদিন যেভাবে এই মানুষটাকে জেনেছি, ক্যারি করেছি সেটা তুচ্ছ। খুব গৌণ। নেরুদা অ্যাম্বাসেডর হয়ে নানা দেশের দায়িত্বে ছিলেন। এবং তিনি আমাদের কাছের দেশ শ্রীলঙ্কা এবং বার্মাতে ছিলেন। তিনি নানা জায়গা থেকে কুকারিজ সংগ্রহ করতেন। সেগুলো তার ডাইনিং টেবিলে সাজানো আছে। ছবি তোলা যায় না বলে তুলিনি। কিন্তু দেখে এসেছি। আরেকটা বিষয় দেখে এসেছি, তার ঘরের জানালা দেখতে জাহাজের জানালার মতো। আজ থেকে বহু বছর আগে তিনি যখন এক দেশ থেকে আরেক দেশে যেতেন সেই সময় যাতায়াতের মাধ্যম ছিলো জাহাজ। তো কবি মানুষ! জাহাজের পাশে হয়তো জানালার পাশে বসতেন কিন্তু জানালাতো খোলা যায় না। তার ভেতরে জাহাজের জানালার সৌন্দর্য এমনভাবে গেঁথে গেছে, তিনি কী করেছেন? নিজের বেড রুমের জানালা জাহাজের জানালার আদলে তৈরি করেছেন।’
এরপর মহুয়া যোগ করেন, ‘প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় আমাদের শিক্ষক দীপালি সাহা ক্লাসরুমে প্রবেশ করতে করতে আবৃত্তি করতেন ‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী’। আমরা তখন এই মর্ম বুঝতাম না। এখন বুঝি। তো সব কিছুই তো সঙ্গে সঙ্গে বোঝা যায় না ভ্রমণও তাই। যখন দেখি, তারপর যখন লিখি তখন দেখার অর্থ পাল্টে যেতে থাকে। সেই দেখার অনুভূতি আরও প্রাণবন্ত হয়ে থেকে যায় স্মৃতির পাতায়।’
মহুয়া রউফের দুই ছেলে। তিনি বলেন, ‘আমার দুই ছেলেও এখন বেশ বড় হয়ে গেছে, যার কারণে এই সময়টাতে একটু নিজের মতো করে জীবন যাপন করা। বাচ্চারা ছোট থাকলে যে ব্যস্ততা সেই ব্যস্ততা পেরিয়ে এসেছি। এখন ভ্রমণ করতে চাই। চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছি। এই সময়টা আরও বেশি নিজের জন্য ব্যয় করতে চাই।’
মহুয়া রউফ ক্যারিয়ারের শুরুতেই যে কাজ খুঁজে নেওয়ার ক্ষেত্রে গবেষণা সেক্টরকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন। কারণ এই সেক্টরে কাজ করলে ভ্রমণের সুযোগ বেশি। মহুয়া বলেন, ‘একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কিন্তু নিজের টাকায় ভ্রমণ করিনি। স্কলারশিপের টাকায় ইউরোপ ঘুরেছি। কানাডার অধিকাংশ জায়গা ভ্রমণ করে ফেললাম, নিকারাগুয়ায় গেলাম বৃত্তির টাকায়। শেষ চারবার লাতিন আমেরিকায় গেলাম, এন্টার্কটিকায় গেলাম নিজের জমানো টাকায়। পেশাগত জীবনে গবেষণায় কাজ করাতে স্কলারশিপ পেতে আমার সুবিধা হয়। এই সুযোগগুলো একটু একটু করে তৈরি করেছি।’
নারীদের জন্য মহুয়া রউফের পরামর্শ হলো, ‘আমার কাছে মনে হয় নারীদের যেহেতু প্রত্যেকটা পথ বেশি জটিল, দাঁড়ানোর জন্য তাকে ফাইটটা বেশি করতে হয়। কোনো কোনো সময় জীবনে একটি মাত্র অপশন খুঁজে নেওয়ার সুযোগ থাকে, তখন হয়তো নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়া যায় না। আমার মনে হয় ওই সময় নারী নিজের জন্য কিছু সঞ্চয় করতে পারেন। তারপর সন্তানেরা একটু বড় হয়ে উঠলে নতুনভাবে নিজের স্বপ্নের প্রতি যত্নবান হয়ে উঠতে পারেন।’
ঢাকা/লিপি