জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর ইঞ্জিনিয়ারিং জিওলজি এন্ড দ্যা এনভায়রনমেন্টের (আইএইজি) ১৫তম এশিয়ান আঞ্চলিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের সম্মেলন আইএইজি বাংলাদেশ ন্যাশনল গ্রুপ ও নেপাল সোসাইটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং জিওলজির (এনএসইজি) যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে।   

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে সকাল ১০টায় শুরু হয়ে বিকাল পৌনে ৫টায় দুটি সেশনের মাধ্যমে শেষ হয়।

আরো পড়ুন:

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় রাবিতে দোয়া

চবি ক্যাম্পাসে ভুয়া শিক্ষার্থী আটক

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. মাহফুজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রব, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম, আইএইজি বাংলাদেশ ন্যাশনাল গ্রুপের সভাপতি ড. এ. টি. এম. শাখাওয়াত হোসাইন, সহ-সভাপতি মো. এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফিরুজ আলম, কোষাধ্যক্ষ ড. হোসাইন মোহাম্মদ সায়েম প্রমুখ। এছাড়া দেশের শীর্ষস্থানীয় ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ, গবেষক, অধ্যাপক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। 

সম্মেলনে কাঠামোগত ভূতত্ত্ব, ভূমিকম্প ভূতত্ত্ব, সক্রিয় টেকটোনিক্স ওপর স্লাইড প্রেজেন্টেশন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থী মুকিত আজমাইন শাহরিয়ারসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা তাদের গবেষণা তথ্য ও উপাত্ত উপস্থাপন করেন। 

সম্মেলনে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘‘আমি গর্বিত যে জাবি ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগ প্রথমবারের মতো নেপাল এবং বাংলাদেশের ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সম্মেলন আয়োজন করেছে। এখানে ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান, জলবায়ু, ঝুঁকি এবং পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ এবং গবেষকদের একত্রিত করেছে। ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান শক্তি ও এশীয় সম্মেলনের দৃষ্টিভঙ্গি অবশ্যই একটি স্থিতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এই সম্মেলন বাংলাদেশ ও বাইরের সকল তরুণ ভূ-বিজ্ঞানি এবং পেশাদারদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে।’’ 

ঢাকা/আহসান/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদ

এছাড়াও পড়ুন:

জাহাঙ্গীরনগরে ‘বাউলের দ্রোহ’ গানের আসর বন্ধের অভিযোগ প্রশাসনের বিরুদ্ধে

সারা দেশে বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাউলের দ্রোহ’ শিরোনামে গতকাল রোববার বিচারগানের আসরের আয়োজন করেন একদল শিক্ষার্থী। তবে অনুষ্ঠানটি জোর করে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। গতকাল রাত পৌনে দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।


প্রশাসনের দাবি, বিভিন্ন বিভাগে পরীক্ষা চলছে। গানের উচ্চ শব্দে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছিল—এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আয়োজকদের অনুরোধ করলে তাঁরা গান বন্ধ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী, আয়োজক ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ‘বাউলের দ্রোহ’ শিরোনামে গানের অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাত ৯টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি শিক্ষার্থীভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপে গানের উচ্চ শব্দে পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে বলে কয়েকজন শিক্ষার্থী পোস্ট করেন। রাত ১০টার দিকে প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে যায়।

প্রক্টর এসে গান বন্ধ করতে বললে আমরা বলি, অনুষ্ঠানের শেষ দিকে যেহেতু পালাগান, এটা শেষ হলেই বন্ধ করে দেব। কিন্তু প্রক্টর ডিরেক্ট এসে বলছেন, “প্রোগ্রাম বন্ধ, গান থামাও।”নবীন কিশোর গোস্বামী, আয়োজকদের একজন

এ সময় প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম আয়োজকদের শব্দ কমানোর এবং রাত ১১টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার অনুরোধ জানান। এরপর আয়োজকেরা শব্দ কমিয়ে অনুষ্ঠান চালাতে থাকেন।

রাত ১টার দিকে পরিবহন চত্বরে উচ্চ শব্দ বন্ধ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের আরেকটি দল উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গান চালাবেন বলে ঘোষণা দেন। পরে সোয়া একটার দিকে তাঁরা হ্যান্ডমাইক ও ছোট সাউন্ডবক্স নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে গান বাজাতে থাকেন।

রাত ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। গানের উচ্চ শব্দে তাঁরা পড়তে পারছেন না, তাঁদের সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আয়োজকেরা সেসব মান্য করেননি এবং প্রশাসনেরও টনক নড়েনি। প্রশাসন যখন কোনো উদ্যোগ নেয়নি, আমরা ভিসির বাসভবনের সামনে গিয়ে প্রতিবাদস্বরূপ গান বাজিয়েছি।সিফাতউল্লাহ সিফাত, ভিপি, তাজউদ্দীন আহমদ হল সংসদ

একপর্যায়ে প্রক্টর পরিবহন চত্বরে ‘বাউলের দ্রোহের’ মঞ্চে গিয়ে আয়োজকদের গান বন্ধ করতে বলেন। তখন আয়োজকদের সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, এ সময় প্রক্টর দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সজিব আহমেদকে গালিগালাজও করেন।

আয়োজকদের অন্যতম নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী নবীন কিশোর গোস্বামী প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনুষ্ঠানের সাউন্ড ছিল খুবই কম। শুধু মনিটরে সাউন্ড ছিল। তারপরও প্রক্টর এসে গান বন্ধ করতে বললে আমরা বলি, অনুষ্ঠানের শেষ দিকে যেহেতু পালাগান, এটা শেষ হলেই বন্ধ করে দেব। কিন্তু প্রক্টর ডিরেক্ট এসে বলছেন, “প্রোগ্রাম বন্ধ, গান থামাও।” অনেক মানুষ সাক্ষী আছেন।’

পরিবহন চত্বরে উচ্চ শব্দের গানের প্রতিবাদস্বরূপ একদল শিক্ষার্থী মাননীয় ভিসি স্যারের বাসার সামনে অবস্থান নিয়েছেন এবং তাঁরাও কিছুটা উচ্চ স্বরে কিছু অ্যাকটিভিটিস করেছেন। সেগুলোও আমরা তাঁদের কাছে আশা করি না।এ কে এম রাশিদুল আলম, প্রক্টর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

অন্যদিকে গভীর রাতে পরিবহন চত্বরে উচ্চ শব্দে গান বাজানোর প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গান বাজান কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাঁদের একজন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) সিফাতউল্লাহ সিফাত বলেন, ‘রাত ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। গানের উচ্চ শব্দে তাঁরা পড়তে পারছেন না, তাঁদের সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আয়োজকেরা সেসব মান্য করেননি এবং প্রশাসনেরও টনক নড়েনি। প্রশাসন যখন কোনো উদ্যোগ নেয়নি, আমরা ভিসির বাসভবনের সামনে গিয়ে প্রতিবাদস্বরূপ গান বাজিয়েছি।’

আরও পড়ুনমানিকগঞ্জে বাউল সম্মেলনের ঘোষণা দিয়ে ফরহাদ মজহার বললেন, পেটালে পিটুনি খাব২৪ নভেম্বর ২০২৫

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকেই অনেক শিক্ষার্থী উচ্চ শব্দ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছে। কারণ, তাদের পরীক্ষা চলছে, এখন পরীক্ষার মৌসুম। অনেক শিক্ষার্থী গানের উচ্চ শব্দে মাইগ্রেনের সমস্যার কথাও জানিয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজকদের শব্দ কমাতে বলেছিলাম। পরে রাত পৌনে দুইটার দিকে অনুষ্ঠান শেষ করার জন্য অনুরোধ করলে তারা ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় চায় এবং সে সময়ের পর আমার অনুরোধে অনুষ্ঠান শেষ করেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে এবং বাজে শব্দ ব্যবহার করেছে।’

উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আরেকদল শিক্ষার্থীর গান বাজানো প্রসঙ্গে প্রক্টর বলেন, ‘পরিবহন চত্বরে উচ্চ শব্দের গানের প্রতিবাদস্বরূপ একদল শিক্ষার্থী মাননীয় ভিসি স্যারের বাসার সামনে অবস্থান নিয়েছেন এবং তাঁরাও কিছুটা উচ্চ স্বরে কিছু অ্যাকটিভিটিস করেছেন। সেগুলোও আমরা তাঁদের কাছে আশা করি না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোলায় সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ১৩ জেলে ভারতের কারাগারে বন্দী
  • দুই টাইব্রেকারের রোমাঞ্চ, সোনারগাঁও-জাহাঙ্গীরনগর-ব্র্যাকের জয়োৎসব
  • জাহাঙ্গীরনগরে হলের নির্মাণ খরচের নথিপত্র চেয়ে প্রকল্প কার্যালয়ে তালা
  • জাহাঙ্গীরনগরে ‘বাউলের দ্রোহ’ গানের আসর বন্ধের অভিযোগ প্রশাসনের বিরুদ্ধে