বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত ‘কম্বাইন্ড ডিগ্রি’ (বিএসসি ইন ভেট সায়েন্স এন্ড এ. এইচ) চালুর কোর্স কারিকুলাম প্রণয়নে অগ্রগতি না থাকায় অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অনুষদের কয়েকশত শিক্ষার্থী। 

গত আগস্ট মাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষা পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৩ সদস্যের কোর্স কারিকুলাম ও মেকাপ কোর্সের রূপরেখা প্রণয়নে কমিটি গঠন করে। গত ১১ সেপ্টেম্বর গঠিত হওয়া ওই কমিটিকে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট/সুপারিশ দেওয়ার জন্য বলা হলেও দীর্ঘ আড়াই মাস পরও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।

আরো পড়ুন:

জাবিতে আইএইজির ১৫তম এশিয়ান আঞ্চলিক সম্মেলন

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় রাবিতে দোয়া

আরো জানা যায়, ১৩ সদস্যের কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.

মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, সদস্য-সচিব কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার। এছাড়াও কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য কর্তৃক মনোনীত ভেটেরিনারি অনুষদের ৫ জন ও পশুপালন অনুষদের ৫ জন অধ্যাপক এবং শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সদস্য হিসেবে আছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, ডিগ্রিটির পক্ষে-বিপক্ষে শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের মতানৈক্য বিদ্যমান। কমিটির সদস্যদের মধ্যেও ঐকমত্য না থাকায় কারিকুলাম প্রণয়নের কাজটি ধীর গতিতে চলছে। আন্দোলন থামাতে প্রশাসন দ্রুত কমিটি গঠন করলেও কার্যত সদিচ্ছার অভাব থাকায় এই ধীর অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

উদ্বেগ প্রকাশ করে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী শিবলী সাদী বলেন, ‘‘দুই মাসেরও বেশি সময় হতে চলছে, এখনো কম্বাইন্ড ডিগ্রির কোর্স কারিকুলাম প্রণয়ন সম্পন্ন হয় নাই, যা উদ্বেগজনক। যেখানে এক মাসের মধ্যে কারিকুলাম প্রণয়ন করার কথা ছিল। কমিটির সম্মানিত স্যারেদের সঙ্গে এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সুনির্দিষ্ট কোনো কিছু কিংবা কবে শেষ হবে; এ জাতীয় কোনো কিছু জানতে পারেননি।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘পাশাপাশি আমাদের চলমান ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অন্যতম দাবি যাতে সেমিস্টারভিত্তিক কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়। আশা করি, স্যারেরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবেন।’’ 

ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী সিফাত সালেহীন বলেন, ‘‘কম্বাইন্ড ডিগ্রির কারিকুলাম প্রণয়ন নিয়ে কালক্ষেপণ করছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। আমাদের অনুষদের কয়েকশত শিক্ষার্থী উৎকন্ঠার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর পড়াশোনার পর আমাদের কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিতে আবারও কী ধরনের মেকাপ কোর্স করতে হবে; তা আমরা নিশ্চিত নই। যা আমাদের হতাশা বৃদ্ধি করছে। তাই আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে কম্বাইন্ড ডিগ্রির কোর্স কারিকুলাম চাই। ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এমন খেলা মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে কারিকুলাম প্রণয়নের কাজ শেষ করে কম্বাইন্ড ডিগ্রি বাস্তবায়ন করতে হবে।’’  

এই বিষয়ে কমিটির আহ্বায়ক মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, ‘‘আমাদের কাজ চলমান রয়েছে। আমরা কমিটির সদস্যদের নিয়ে কয়েকটা মিটিং করেছি। আমরা আমাদের কাজ করছি। আমরা দুই ফ্যাকাল্টির ডিনদের সিলেবাসগুলো দেওয়ার জন্য বলেছি ও কোর্স কারিকুলাম দেওয়ার জন্য বলেছি। আমরা দ্রুত মিটিং দিয়ে একটা রূপরেখা দাঁড় করিয়ে মেকআপ কোর্সের দিকে আগাবো ইনশাল্লাহ।’’  

কতদিনের মধ্যে কম্বাইন্ড ডিগ্রির কোর্স কারিকুলামের রিপোর্ট বা সুপারিশ হতে পারে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এটা এখন বলা যাবে না। দুই ফ্যাকাল্টি থেকে সিলেবাস আসবে সেটা নিয়ে আমরা বসব, তারপর কোন কোর্স কোন বর্ষে পড়ানো হবে ঠিক করে, তারপরে মেকআপ কোর্স করে দেওয়া যাবে। জিনিসটা এত সহজ না, আমরা চেষ্টা করছি ইনশাল্লাহ তাড়াতাড়ি হয়ত পারব।’’  

ঢাকা/লিখন/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ক ল ম প রণয়ন আম দ র কম ট র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

বাকৃবিতে আড়াই মাসেও কম্বাইন্ড ডিগ্রির কোর্স কারিকুলাম প্রণয়ন হয়নি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত ‘কম্বাইন্ড ডিগ্রি’ (বিএসসি ইন ভেট সায়েন্স এন্ড এ. এইচ) চালুর কোর্স কারিকুলাম প্রণয়নে অগ্রগতি না থাকায় অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অনুষদের কয়েকশত শিক্ষার্থী। 

গত আগস্ট মাসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষা পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৩ সদস্যের কোর্স কারিকুলাম ও মেকাপ কোর্সের রূপরেখা প্রণয়নে কমিটি গঠন করে। গত ১১ সেপ্টেম্বর গঠিত হওয়া ওই কমিটিকে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট/সুপারিশ দেওয়ার জন্য বলা হলেও দীর্ঘ আড়াই মাস পরও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।

আরো পড়ুন:

জাবিতে আইএইজির ১৫তম এশিয়ান আঞ্চলিক সম্মেলন

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় রাবিতে দোয়া

আরো জানা যায়, ১৩ সদস্যের কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, সদস্য-সচিব কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার। এছাড়াও কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য কর্তৃক মনোনীত ভেটেরিনারি অনুষদের ৫ জন ও পশুপালন অনুষদের ৫ জন অধ্যাপক এবং শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সদস্য হিসেবে আছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, ডিগ্রিটির পক্ষে-বিপক্ষে শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের মতানৈক্য বিদ্যমান। কমিটির সদস্যদের মধ্যেও ঐকমত্য না থাকায় কারিকুলাম প্রণয়নের কাজটি ধীর গতিতে চলছে। আন্দোলন থামাতে প্রশাসন দ্রুত কমিটি গঠন করলেও কার্যত সদিচ্ছার অভাব থাকায় এই ধীর অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

উদ্বেগ প্রকাশ করে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী শিবলী সাদী বলেন, ‘‘দুই মাসেরও বেশি সময় হতে চলছে, এখনো কম্বাইন্ড ডিগ্রির কোর্স কারিকুলাম প্রণয়ন সম্পন্ন হয় নাই, যা উদ্বেগজনক। যেখানে এক মাসের মধ্যে কারিকুলাম প্রণয়ন করার কথা ছিল। কমিটির সম্মানিত স্যারেদের সঙ্গে এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সুনির্দিষ্ট কোনো কিছু কিংবা কবে শেষ হবে; এ জাতীয় কোনো কিছু জানতে পারেননি।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘পাশাপাশি আমাদের চলমান ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অন্যতম দাবি যাতে সেমিস্টারভিত্তিক কারিকুলাম প্রণয়ন করা হয়। আশা করি, স্যারেরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবেন।’’ 

ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী সিফাত সালেহীন বলেন, ‘‘কম্বাইন্ড ডিগ্রির কারিকুলাম প্রণয়ন নিয়ে কালক্ষেপণ করছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। আমাদের অনুষদের কয়েকশত শিক্ষার্থী উৎকন্ঠার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর পড়াশোনার পর আমাদের কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিতে আবারও কী ধরনের মেকাপ কোর্স করতে হবে; তা আমরা নিশ্চিত নই। যা আমাদের হতাশা বৃদ্ধি করছে। তাই আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে কম্বাইন্ড ডিগ্রির কোর্স কারিকুলাম চাই। ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এমন খেলা মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে কারিকুলাম প্রণয়নের কাজ শেষ করে কম্বাইন্ড ডিগ্রি বাস্তবায়ন করতে হবে।’’  

এই বিষয়ে কমিটির আহ্বায়ক মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, ‘‘আমাদের কাজ চলমান রয়েছে। আমরা কমিটির সদস্যদের নিয়ে কয়েকটা মিটিং করেছি। আমরা আমাদের কাজ করছি। আমরা দুই ফ্যাকাল্টির ডিনদের সিলেবাসগুলো দেওয়ার জন্য বলেছি ও কোর্স কারিকুলাম দেওয়ার জন্য বলেছি। আমরা দ্রুত মিটিং দিয়ে একটা রূপরেখা দাঁড় করিয়ে মেকআপ কোর্সের দিকে আগাবো ইনশাল্লাহ।’’  

কতদিনের মধ্যে কম্বাইন্ড ডিগ্রির কোর্স কারিকুলামের রিপোর্ট বা সুপারিশ হতে পারে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এটা এখন বলা যাবে না। দুই ফ্যাকাল্টি থেকে সিলেবাস আসবে সেটা নিয়ে আমরা বসব, তারপর কোন কোর্স কোন বর্ষে পড়ানো হবে ঠিক করে, তারপরে মেকআপ কোর্স করে দেওয়া যাবে। জিনিসটা এত সহজ না, আমরা চেষ্টা করছি ইনশাল্লাহ তাড়াতাড়ি হয়ত পারব।’’  

ঢাকা/লিখন/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ