আমরা বলেছি, তিনি রাশিয়া বা অন্য কোনো দেশে চলে যেতে পারেন: মাদুরোকে নিয়ে মার্কিন সিনেটর
Published: 2nd, December 2025 GMT
ভেনেজুয়েলা ঘিরে সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে পরীক্ষা করেছে। গতকাল সোমবার রাজধানী কারাকাসে হাজারো সমর্থকের উদ্দেশে এ কথা বলেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো। তিনি বলেন, দাসত্বের মাধ্যমে শান্তি পেতে চায় না ভেনেজুয়েলা।
সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার ওপর চড়াও হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যারিবীয় সাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর ব্যাপক সমাবেশ ঘটিয়েছেন তিনি। গত সেপ্টেম্বরের পর ভেনেজুয়েলা থেকে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে অনেক নৌযানে হামলা চালিয়েছে তারা। ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা এড়ানোর জন্য সতর্কবার্তাও দিয়েছেন ট্রাম্প।
অশান্ত এই পরিস্থিতির মধ্যে ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণ চালাতে পারে, এমন শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ট্রাম্প মাদুরো সরকারের পতন চায় বলেও শোনা যাচ্ছে। সেদিকে ইঙ্গিত করে সমর্থকদের মাদুরো বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। তবে সেই শান্তির সঙ্গে সার্বভৌমত্ব, সমতা ও স্বাধীনতা থাকতে হবে। আমরা দাসত্বের মাধ্যমে শান্তি চাই না, ঔপনিবেশিকতার মাধ্যমে শান্তি চাই না।’
যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতার মুখে নিজেদের সেনাবাহিনীকেও প্রস্তুত করছে ভেনেজুয়েলা। মাদুরো বলেন, ‘আমাদের ওপর ২২ সপ্তাহ ধরে আগ্রাসন চালানো হয়েছে, একে মনস্তাত্ত্বিক সন্ত্রাসবাদ বলা চলে। এই ২২ সপ্তাহ ধরে তারা আমাদের পরীক্ষা করেছে। জন্মভূমির প্রতি ভেনেজুয়েলার জনগণ তাঁদের ভালোবাসা দেখিয়েছেন।’
সোমবার কারাকাসে মাদুরোর সমর্থনে হাজারো মানুষ একত্র হয়েছিলেন। তাঁরা ভেনেজুয়েলার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘হুমকির’ প্রতিবাদ জানান। সমাবেশে অংশ নেওয়া ৬৮ বছর বয়সী নারসিকো তোরিয়েলবা বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।’ ৫৪ বছর বয়সী কিরিলো কাজোরলা বলেন, ‘আমরা কখনোই আমাদের দেশকে বিক্রি করব না।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র মাদুরোকে নিজ দেশ ত্যাগ করার সুযোগ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন সিনেটের রিপাবলিকান সদস্য মার্কওয়েন মুলিন। গত শনিবার সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘আমরা মাদুরোকে চলে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছি। বলেছি, তিনি রাশিয়া বা অন্য কোনো দেশে চলে যেতে পারেন।’ যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলায় সেনা পাঠাবে না বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি।
আরও পড়ুনভেনেজুয়েলা নিয়ে হঠাৎ কেন জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন ট্রাম্প৫ ঘণ্টা আগেতবে ভিন্ন কথা বলছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট। ভেনেজুয়েলা নিয়ে ট্রাম্প তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানান তিনি। আর ভেনেজুয়েলার মাটিতে মার্কিন সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনা উড়িয়ে না দিয়ে লেভিট বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের হাতে অনেকগুলো বিকল্প রয়েছে এবং আমি তাঁকেই সেসব নিয়ে কথা বলতে দেব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
জনতার প্রত্যাশার ক্যানভাসে জনসাধারণের মতামত নিচ্ছেন মাসুদুজ্জামান
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বিভিন্ন এলাকায় জনজীবনের বাস্তব চিত্র, প্রয়োজন ও প্রত্যাশা নথিভুক্ত করতে “জনতার প্রত্যাশার ক্যানভাস” নামে একটি জনমত সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন বিএনপি মনোনিত প্রার্থী, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও ক্রীড়া সংগঠক মাসুদুজ্জামান।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এই উদ্যোগের মাধ্যমে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ তাদের দৈনন্দিন সমস্যা, প্রয়োজন, প্রত্যাশা এবং স্থানীয় উন্নয়ন সম্পর্কে মতামত লিখে সরাসরি জানাতে পারবেন।
কর্মসূচিটি ধারাবাহিকভাবে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হবে, যাতে সকল শ্রেণি-পেশার নাগরিক তাদের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করতে পারেন।
মাসুদুজ্জামান বলেন, “নাগরিকের মতামত না জেনে কোনো উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হলে তা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হয় না - এর উদাহরণ আমাদের চারপাশেই রয়েছে। তাই এলাকার মানুষের প্রকৃত চাওয়া, সমস্যা ও প্রত্যাশা জানা-ই কার্যকর পরিকল্পনার প্রথম পদক্ষেপ। জনতার প্রত্যাশার ক্যানভাসের মাধ্যমে সেই সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
এর উদ্দেশ্য সমন্বিত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মানুষ–কেন্দ্রিক পরিকল্পনার জন্য নাগরিক মতামতকে প্রধান ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা।”
প্রায়ই দেখা যায়, উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে জনগণের প্রত্যাশা ও মৌলিক প্রয়োজন যথাযথভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয় না। বিশেষ করে সমাজের প্রান্তিক মানুষের মতামত সংগ্রহ প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়ে যায়। ফলে কিছু উন্নয়ন উদ্যোগ জনবান্ধব হওয়ার পরিবর্তে মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
অবকাঠামো, সড়কব্যবস্থা, নগরসেবা, স্থানীয় সুযোগ-সুবিধা-এসব ক্ষেত্রেই নাগরিকের প্রত্যাশা ও বাস্তব সমস্যার প্রতিফলন অনেক ক্ষেত্রে যথেষ্টভাবে উঠে আসে না। এর ফলে অসামঞ্জস্যপূর্ণ নকশা, দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি এবং উন্নয়ন কাঠামোয় সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
বর্তমান বাস্তবতায় এই অভিজ্ঞতা নারায়ণগঞ্জের মানুষসহ বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা গেছে, যেখানে প্রান্তিক মানুষের বাস্তব সমস্যার সঙ্গে মিল না থাকায় অনেক প্রকল্প টেকসই হয়নি বা সাধারণ মানুষের উপকারে সম্পূর্ণভাবে আসতে পারেনি।
জনসাধারণের মতামতের গুরুত্ব আজ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। নাগরিকদের প্রত্যাশা, অভিজ্ঞতা এবং বাস্তব সমস্যাকে মূল্যায়ন করে টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জনবান্ধব পরিকল্পনা গ্রহণ করাই এখন সময়ের দাবি।
“জনতার প্রত্যাশার ক্যানভাস” উদ্যোগের মাধ্যমে মানুষ সরাসরি লিখিতভাবে জানাতে পারছেন তারা কী পরিবর্তন চান, কোন সমস্যাগুলো সমাধান জরুরি এবং স্থানীয় উন্নয়নে কী ধরনের উদ্যোগ প্রয়োজন। প্রাপ্ত লিখিত মতামতগুলো যথাযথভাবে অগ্রাধিকার অনুযায়ী বিশ্লেষণ করা হবে, যা ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে দিকনির্দেশক কাঠামো হিসেবে কাজ করবে।
জনতার প্রত্যাশার ক্যানভাস” নারায়ণগঞ্জে নাগরিকদের অংশগ্রহণমূলক মতামত সংগ্রহের একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। সমাজের সকল স্তরের মানুষ তাদের চাহিদা, সমস্যা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মত প্রকাশ করবেন। পরবর্তীতে এসব মতামতকে প্রাথমিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে নানা উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে-এটাই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।