পরীক্ষার জন্য কারাগারে বই পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা
Published: 2nd, December 2025 GMT
পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কারাগারে ছয়টি বই পেয়েছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সাবিনা আক্তার তুহিন। আসামিপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম আজ মঙ্গলবার এ আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদেশে আদালত উল্লেখ করেন, শিক্ষা গ্রহণের অধিকার একটি মৌলিক মানবাধিকার। আসামি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন আইন বিষয়ে সম্মান তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি আসন্ন পরীক্ষায় অংশ নিতে ইচ্ছুক। তাই দরখাস্তের সঙ্গে সংযুক্ত আইনবিষয়ক ছয়টি বই কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পাঠানোর আবশ্যকতা আছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। এ অবস্থায় কারা কর্তৃপক্ষকে কারা বিধি অনুযায়ী দরখাস্তের সঙ্গে সংযুক্ত আইনবিষয়ক ছয়টি বই আসামি সাবিনা আক্তারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হলো।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন বলেন, ‘সামনে ওনার পরীক্ষা। কারাগারে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ওনার পক্ষ থেকে কারাগারে ছয়টি বই পাঠানোর আবেদন করেছি। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন। আমরা ওনার জামিনের জন্য চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে গিয়েছি। সেখানে নামঞ্জুর হওয়ায় মহানগর আদালতেও জামিন চেয়েছি। সেখানেও জামিন নামঞ্জুর হয়েছে। আগামীতে আমরা হাইকোর্টে জামিনের জন্য যাব।’
মোরশেদ হোসেন জানান, সাবিনা আক্তার পাঁচ মাস ধরে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা রয়েছে।
গত ২২ জুন গভীর রাতে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বাবার বাড়ি থেকে সাবিনাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরের দিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় ১৪-১৫ জন দুষ্কৃতকারী শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সামনে মিছিল করে। পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করে পুলিশ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নারী ফুটবল দলের প্রতি বৈষম্য বন্ধে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ নয়, জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
নারী ফুটবল দলের প্রতি বৈষম্য বন্ধে ব্যর্থতা বা নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পুরুষ ফুটবল দলের মতো নারী ফুটবল দলের ক্ষেত্রে একই ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে ব্যর্থতা বা নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী ও বিচারপতি রাজিউদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন।
‘এত সাফল্যের পরও নারী ফুটবল দল কেন বঞ্চিত, সমতা কবে আসবে’ শিরোনামে গত ২৬ জুলাই প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে নারী ফুটবল দলের প্রতি বৈষম্য বন্ধে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে পুরুষ দলের মতো তাদের ক্ষেত্রেও একই ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে গত অক্টোবরে রিটটি করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমাইয়া বিনতে তানভীর ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী আরিজা মেহেলী খান ওই রিট করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে আবেদনকারী আইনজীবী সুমাইয়া বিনতে তানভীর নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।
পরে আইনজীবী সুমাইয়া বিনতে তানভীর প্রথম আলোকে বলেন, পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ ফুটবল দলের মধ্যে বৈষম্য দেখা যায়। পুরুষ ফুটবলাররা বছরে ৪০ বা ৫০ লাখ টাকা আয় করেন। অন্যদিকে প্রথম শ্রেণির নারী ফুটবলাররা বছরে মাত্র ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ টাকা বেতন পান। তাঁদের জন্য আবাসন–সুবিধা নেই। তাঁদের জন্য নিয়মিত লিগ আয়োজন করা হয় না। এ ছাড়া কোনো খেলায় জিতলে পুরুষ ফুটবলারদের পাঁচ লাখ টাকা করে প্রণোদনা দেওয়া হয়। এই প্রণোদনা নারী ফুটবলারদের ক্ষেত্রে খুবই কম, তা–ও অনিয়মিত।
আরও পড়ুনএত সাফল্যের পরেও নারী ফুটবল দল কেন বঞ্চিত, সমতা কবে আসবে২৬ জুলাই ২০২৫এসব বিষয় সংবিধানের ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী উল্লেখ করে আইনজীবী সুমাইয়া বিনতে তানভীর বলেন, সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না এবং ২৯ অনুচ্ছেদে সব নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতার কথা উল্লেখ রয়েছে। মূলত এসব যুক্তিতে রিটটি করা হলে আদালত ওই রুল দেন। যুব ও ক্রীড়াসচিব, অর্থসচিব, ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিলের সচিব ও জাতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতিসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।