হাজি সেলিম রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন, জানালেন তদন্ত কর্মকর্তা
Published: 2nd, December 2025 GMT
রাজধানীর শাহবাগ থানার চানখাঁরপুল এলাকায় ঝুট ব্যবসায়ী মনির হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য হাজি সেলিমকে চার দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি রিমান্ডে ইশারায় মামলার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক মাইনুল ইসলাম খান পুলক।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম এ আদেশ দেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক জিন্নাত আলী জানান, গত ২০ অক্টোবর হাজি সেলিমের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। কয়েক দিন আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে রাখার আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, মামলার ১২ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি হাজি সেলিমকে ব্যাপক ও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ‘বাক্প্রতিবন্ধী’ হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদকালে তিনি ইশারায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন, যা মামলার তদন্তে সহায়ক হবে। আসামির দেওয়া তথ্য মামলার তদন্তের স্বার্থে যাচাই–বাছাই অব্যাহত আছে। মুক্তি পেলে আসামির পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামিকে আবার রিমান্ডে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, অসুস্থতাজনিত কারণে হাজি সেলিমের কথা বলার ক্ষেত্রে সমস্যা আছে।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানার চানখাঁরপুল এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন ক্ষুদ্র ঝুট ব্যবসায়ী মো.
পুরান ঢাকার লালবাগ ও চকবাজার এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাজি সেলিম দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি ১৯৯৬ সালে ঢাকা-৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে প্রয়াত বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর কাছে হেরে যান।
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন হাজি সেলিম। ওই নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাজি সেলিম প্রার্থী হননি। তাঁর বদলে ছেলে সোলায়মান মোহাম্মদ সেলিমকে ঢাকা-৭ আসন থেকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। তিনি নির্বাচিতও হয়েছিলেন।
হাজি সেলিম ও তাঁর স্ত্রী গুলশান আরার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মামলা করে দুদক। বিচারিক আদালত ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল ওই মামলায় রায় দেন। রায়ে তাঁর ১৩ বছরের কারাদণ্ড হয়। ২০২২ সালে ওই মামলায় হাজি সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। কিছুদিন কারাভোগের পর ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে উচ্চ আদালত তাঁকে জামিন দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ হব গ থ ন আসন থ ক আওয় ম বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যাংকের ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ, কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
নোয়াখালীতে আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের দুটি শাখা থেকে ৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম আলমগীর হোসেন। তিনি ব্যাংকটির শাখা ব্যবস্থাপক ছিলেন। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের একটি বাসা থেকে তাঁকে র্যাব গ্রেপ্তার করে।
র্যাব জানায়, আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ভুয়া এনআইডি কার্ড ও মুঠোফোন নম্বর ব্যবহার করে ব্যাংকের দুটি শাখা থেকে ঋণ হিসেবে ৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। ব্যাংকটির অভ্যন্তরীণ তদন্তে তার সত্যতা মেলে। অভিযোগের তদন্তে গত ২০ অক্টোবর ব্যাংকটির রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও যাচাই করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরপর এ ঘটনায় নোয়াখালী স্পেশাল সিনিয়র জজ আদালতে দুটি মামলাও করে দুদক। এ ঘটনায় আলমগীর হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়।
দুদক নোয়াখালী জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংকের দুটি শাখা থেকে ৯ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে দুটি মামলা রয়েছে আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে। তাঁকে র্যাবের সহায়তায় গ্রেপ্তারের পর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর নোয়াখালীর উপপরিচালক ও জেলা কমান্ড্যান্ট মো. সুজন মিয়া বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন সদস্যদের নামে ঋণ দেখিয়ে আলমগীর হোসেন অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। বিষয়টি দুদক ও ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে উঠে এসেছে।’