গোছানো ‘সংসার’ ভাঙতে চান না লিটন!
Published: 2nd, December 2025 GMT
দলটাকে পরিবার বানিয়ে ফেলেছেন বোঝা যায় তার কণ্ঠে। কখনো সতীর্থকে শাসন করেছেন। আবার কখনো তার অনুপস্থিতিতে পুরো রাজ্যকে প্রতিপক্ষ বানিয়েছেন। নিজের সংসার, নিজের গোছানো সবকিছু তার খুব প্রিয়। যেখানে সামান্যতম আঁচড়ও তার পছন্দ হয় না।
নির্বাচকরা যখন শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে বাদ দেন, অধিনায়ক লিটন জ্বলে উঠেন। সহযোদ্ধাকে না পাওয়ার যন্ত্রণা অনুভব করেন। আগলে রাখতে না পারার কষ্ট প্রকাশ করে দেন। অধিনায়ক হিসেবে যে কাজটা করার প্রয়োজন সেটা না পেরে বরং সরে দাঁড়ানোর প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিয়ে দেন এভাবে, ‘‘বিশ্বকাপ পর্যন্ত অধিনায়ক থাকি কি না দেখেন।’’
আরো পড়ুন:
হিট অব দ্য মোমেন্টে অনেক কিছু হয়েছে, নির্বাচকের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিয়ে লিটন
বিশ্বকাপের আগে শ্রীলঙ্কায় তিন ম্যাচ সিরিজ খেলবে পাকিস্তান
শামীমকে নিয়ে কোচ-অধিনায়ক ও নির্বাচকদের দ্বন্দ্বের প্রভাব আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জুড়েই ছিল। শেষ টি-টোয়েন্টিতে তাকে ফিরিয়ে একাদশেও নেওয়া হয়। তাতে হাসি ফোটে লিটনের মুখে। দল সিরিজ জিতে যাওয়ায় লিটনের বুক চওড়া হয়ে যায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে শেষ ম্যাচে লিটনের এই অর্জন, গর্জন নিশ্চিতভাবেই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিচ্ছে।
পারফরম্যান্স নিয়ে লিটনের উচ্চবাচ্য কখনোই শোনা যায় না। মাঠে তার রাগান্বিত ভাব যেটাই দেখা যায় সেটা ওখান পর্যন্তই সমীবদ্ধ। সর্বোচ্চ ড্রেসিংরুমের গ্রুপ মিটিং। এর বাইরে পারফরম্যান্স নিয়ে খুব একটা কথা বলেন না। তার বিশ্বাস, ‘‘সব খেলোয়াড় সব দিন পারফর্ম করবে না। অফ ডে থাকতে পারে।’’ ঠিক তেমনই বিশ্বাস করেন, ‘‘যেদিন যে ভালো শুরু পাবে তার দায়িত্ব সেটা টেনে বড় করা এবং দলে কাজটা শেষ করা।’’
পরীক্ষিত পারফর্মার শামীমকে পারফরম্যান্সের কারণেই নির্বাচকরা বাদ দিয়েছিলেন। সবশেষ পাঁচ ইনিংসে ১, ১, ০, ৩৩, ০ এই রান করেছেন শামীম। এর আগে কার্যকরী ইনিংস ছিল। কিন্তু দল থেকে বাদ পড়ার পর যথেষ্ট কারণ ছিল। কিন্তু পুরোনো কার্যকারী ইনিংসের কারণেই লিটন শামীমকে আগলে রাখতে চেয়েছিলেন।
প্রশ্ন আসতে পারে কেন?
উত্তরটা খুব সহজ, অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর এই দলটাকে লিটন গড়েছেন নিজের মতো করে। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ১৫-১৬ জনের স্কোয়াডের প্রায় প্রত্যেককে সুযোগ দিয়েছেন। বাজিয়ে দেখেছেন। নিজের অনুপস্থিতিতেও তার ইনপুট ছিল গোটা দলের ওপর। আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি পর্যন্ত তার দায়িত্ব। বড় পরিকল্পনা, বড় কিছুর খোঁজে নিজের মতো দলটাকে গুছিয়েছেন তিনি।
সেই দলে নির্বাচকদের কাটাছেঁড়া অধিনায়ক মানতে পারেননি। তাইতো হিট অব দ্য মোমেন্টে অভিমানে কণ্ঠে সরে যাওয়ার কথাও বেরিয়ে যায়। কিন্তু সিরিজ জয়ের পর সব অভিমান হাওয়ায় উড়ে গেল। নিজ থেকেই বলে দিলেন, যে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য এতো অযুত-নিযুত ঘামবিন্দু ঝরিয়েছেন তিনি তার শেষটাও দেখতে চান। অধিনায়কত্বের বিশাল দায়িত্ব থেকে সরে যেতে চান না,
‘‘আমি জানিনা এই কথাটা কেন আসছে, আমি তো গণমাধ্যমে বলিনি। না না, এরকম কোনো কিছু না। এটা একটা বিশাল দায়িত্ব। এটা যে কোনো মানুষ, যে কোনো সময় ছাড়তে পারে না এবং কোনো ক্রিকেট খেলোয়াড় এই জিনিসটা করবে না। প্রকৃতপক্ষে আমিও করবো না।’’
‘‘এতদিন ধরে একটা দলকে এই জায়গাটায় টেনেছি। এই জায়গায় নিয়ে এসে দলটাকে গোছানো হয়েছে। প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের একটা স্বপ্ন থাকে বিশ্বকাপ। ওই জায়গা থেকে বলব যে, না কখনো এই (অধিনায়কত্ব থেকে সরে যাওয়া) জিনিস হবে না।’’
২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে লিটনের মুখে হাসি ফুটেছে। সঙ্গে তার অধিনায়কত্বে দারুণ রেকর্ডও হয়েছে। ৩০ ম্যাচে ১৫ জয়, ১৪ হারকে সঙ্গী করে বছর শেষ করলো বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে জয়-পরাজয়ের হিসেব বিবেচনায় সফলতম বছর কাটাল বাংলাদেশ। জয়-পরাজয়ের অনুপাত ১.
আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা, আত্মবিশ্বাস নিশ্চিতভাবেই কাজে লাগবে বাংলাদেশের। দলটির বাড়তি জ্বালানি হিসেবে থাকবে, লিটনের সাজানো ‘সংসার।’
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বক প প রফরম র অন প ল টন র দলট ক
এছাড়াও পড়ুন:
ধরন বুঝে কেন টিভি কেনা জরুরি
ঘরে আর যা-ই থাকুক না কেন, একটি টেলিভিশন না থাকলে কি চলে? যতই আমরা আজকাল মোবাইল ফোন কিংবা ল্যাপটপে সিরিজ বা সিনেমা উপভোগ করি না কেন, টিভি দেখার ব্যাপারটিই যেন ভিন্ন। আয়োজন আর আয়েশ করে কিছু দেখতে গেলে টিভির কোনো জুড়ি নেই বললেই চলে।
তবে টিভি কিন্তু এখন আর একমুখী কোনো যন্ত্র নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি হয়ে উঠেছে একেবারে স্মার্ট, মাল্টি-ফাংশনাল ও ইন্টারঅ্যাকটিভ। তাই টিভি কেনার সময় শুধু ব্র্যান্ড বা দাম নয়, খেয়াল রাখতে হবে চাহিদা, ফিচার, প্রযুক্তি ও পারফরম্যান্সের সঠিক ভারসাম্য।
বর্তমানে বাজারে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের টিভি—এলইডি, কিউএলইডি, মিনি-এলইডি ও ওএলইডি। এ ছাড়া আধুনিক স্মার্ট টিভিতে যুক্ত হয়েছে এআই প্রসেসিং, ভয়েস কন্ট্রোল, স্মার্ট হাব ও গেমিং ফিচারের মতো বৈশিষ্ট্য। তাই টিভি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখা জরুরি।
স্ক্রিন প্রযুক্তিস্ক্রিনের ওপর ভিত্তি করে এখন বিভিন্ন ধরনের টিভি পাওয়া যায়—এইচডি/এফএইচডি, ইউএইচডি, কিউএলইডি, ওএলইডি ও নিও কিউএলইডি এইটকে। এফএইচডি ও ইউএইচডি টিভি হলো সবচেয়ে প্রচলিত ও বাজেট-বান্ধব অপশন। এতে লাইট এমিটিং ডায়োড ব্যাকলাইট হিসেবে কাজ করে, ফলে বিদ্যুৎ খরচ কম হয় এবং স্ক্রিনের আয়ুষ্কাল তুলনামূলক বেশি থাকে। খবর, টক শো, সিনেমা বা দৈনন্দিন সিরিজ দেখার জন্য এটি যথেষ্ট ভালো। তবে কালার ও নিখুঁত কনট্রাস্টের দিক থেকে এলইডি কিছুটা পিছিয়ে।
আর কিউএলইডি টিভি কোয়ান্টাম ডট প্রযুক্তিভিত্তিক। এর ফলে এই টিভিগুলোতে ছবির উজ্জ্বলতা ও পারফরম্যান্স অনেক উন্নত। এতে যেকোনো আলোতেই টিভি দেখা যায় স্বাচ্ছন্দ্যে। এ ছাড়া স্পোর্টস, গেমিং ও অ্যানিমেটেড সিনেমা উপভোগের জন্যও কিউএলইডি হতে পারে আদর্শ বিকল্প।
ওএলইডি টিভি এক ধাপ উন্নত। এখানে প্রতিটি পিক্সেল নিজেই আলো দেয়, তাই ব্ল্যাক লেভেল থাকে গভীর এবং কালার ও ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল হয় অসাধারণ। সিনেমাটিক এক্সপেরিয়েন্স, গেমিং বা গ্রাফিক্সভিত্তিক কনটেন্ট দেখার জন্য ওএলইডি টিভি সেরা। তবে এর দাম তুলনামূলক বেশি।
স্ক্রিন সাইজ, সাউন্ড ও রেজল্যুশনটিভির আকার বাছাই করার সময় ঘরের আয়তন ও দেখার দূরত্ব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ছোট রুমের জন্য ৩২ থেকে ৪৩ ইঞ্চির টিভি যথেষ্ট, যেখানে বড় ড্রয়িংরুমের জন্য ৫৫ থেকে ৮৫ ইঞ্চি বেশি উপযুক্ত। এখানে রেজল্যুশনের পাশাপাশি ব্যবহারকারীর পছন্দও বড় ভূমিকা রাখে।
এইচডি টিভিগুলো এখন অনেক পুরোনো ধরা হয়, তবে ফুল এইচডি এখনো ভালো মানের ভিউ দেয়। কিন্তু ফোরকে টিভিই এখন মূলধারায় রয়েছে। এতে ছবির ডিটেইল ও শার্পনেস অনেক বেশি। তবে ভালো ছবি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ভালো সাউন্ডও।
টিভির বিল্ট-ইন স্পিকারে যদি ডলবি অ্যাটমস বা ডিটিএস এক্স সাপোর্ট থাকে, তাহলে সাউন্ড হয় আরও ইমার্সিভ। তবে বড় ঘরে সিনেমা হলের মতো এক্সপেরিয়েন্স পেতে সাউন্ডবার বা হোম থিয়েটার সিস্টেম যুক্ত করা যেতে পারে।
প্রযুক্তির জন্য স্যামসাংয়ের টিভিগুলোতে ভিউইং এক্সপেরিয়েন্স অনেক বেশি আরামদায়ক ও স্বস্তিকর