ভোট পেছাতে কয়েকটি দল ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘তারা কারা—আপনারা জানেন। কিন্তু আপনারা কি সে সুযোগ দেবেন? বাংলাদেশের মানুষ কি সে সুযোগ দেবে? গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়াবে, জনগণই তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়ায় রশিদ আহমদ চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত পথসভায় সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথাগুলো বলেন। পাঁচ দিনের সফরে আজ তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকা কক্সবাজার-১ আসনে (চকরিয়া-পেকুয়া) আসেন।

ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কুতুবউদ্দিনের সভাপতিত্বে পথসভায় বক্তব্য দেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা, চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক এম মোবারক আলী, চকরিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার, বিএনপি নেতা এম আবদুর রহিম, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, জেলা মহিলা দলের সভাপতি নাছিমা আকতার প্রমুখ।

২০০৮ সালের নির্বাচন ও ওয়ান–ইলেভেন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ওয়ান–ইলেভেনের সরকার কারচুপি করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনে। সেই নির্বাচনে গণতন্ত্রের বারোটা বাজিয়ে দেওয়া হয়েছিল। গণতন্ত্র ফিরে পেতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জনগণকে অপেক্ষা করতে হয়েছে—রক্ত দিতে হয়েছে, শহীদ হতে হয়েছে, গণ–অভ্যুত্থান করতে হয়েছে। এখন আমরা ভোটাধিকার ফেরত পেয়েছি, কিন্তু প্রয়োগ করতে পারিনি।’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আপসহীন নেত্রী হিসেবে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এ দেশের গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতার প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া। এ দেশের জনগণের ঐক্যের প্রতীক তিনি। আজ তিনি অসুস্থ। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। তাঁর শরীরে স্লো পয়জনিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁকে বিদেশে চিকিৎসায় যেতে দেওয়া হয়নি, দেশে চিকিৎসাও ঠিকমতো নিতে পারেননি। কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে একাকিত্বে দিন কাটাতে হয়েছে। এত অত্যাচার সত্ত্বেও তিনি দুঃশাসনের সঙ্গে আপস করেননি, শেখ হাসিনার সঙ্গেও আপস করেননি। গণতন্ত্রের জন্য আজীবন লড়াই–সংগ্রাম করে গেছেন।’

জামায়াতকে ইঙ্গিত করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন অমুক মার্কায় ভোট দিলে বেহেশতে যাবে—এটা কেমন কথা? ইসলাম কি ভোটে দাঁড়িয়েছে? দুনিয়ার স্বার্থে ধর্মকে বিক্রি করা নাজায়েজ। আমাদের মা–বোনদের বিভ্রান্ত করতে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। এটা সহ্য করা হবে না।’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘এখন যারা জান্নাতের টিকিট বিক্রি করছে, তারা নিজেরাই কোথায় যাবে আল্লাহ জানেন। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে—এমন বক্তব্য স্বাধীনতার নামে ছড়ানো যাবে না।’

সকাল ১০টায় ঢাকা থেকে কক্সবাজারে পৌঁছে সালাহউদ্দিন আহমদ খুটাখালীতে পীর হাফেজ আবদুল হাইয়ের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে গণসংযোগ শুরু করেন। এরপর খুটাখালী ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয় উদ্বোধন, খুটাখালী ও ডুলাহাজারার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ করেন। বিকেল পাঁচটার দিকে ডুলাহাজারার পীর হাফেজ আবদুর রশিদের কবর জিয়ারত করেন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহমদ ব এনপ র স গণতন ত র ন ব এনপ চকর য়

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজয় দিবস সামনে রেখে বর্ণাঢ্য র‍্যালি

মহান বিজয় দিবস সামনে রেখে আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য বিজয় র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৯টায় অপরাজেয় বাংলা থেকে র‍্যালিটি শুরু হয়ে টিএসসি ঘুরে স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান র‍্যালির নেতৃত্ব দেন।

এর আগে সকাল পৌনে নয়টায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমবেত হন। সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশা, সহ–উপাচার্য (শিক্ষা) মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ, ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদসহ সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্য, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, প্রভোস্ট, বহু শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী র‍্যালিতে অংশ নেন।

স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের তত্ত্বাবধানে মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় দিবসভিত্তিক দেশাত্মবোধক গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়। র‍্যালি শেষে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ‘ডিসেম্বর মাস আমাদের জাতির পরিচয়ের জন্য একটি অনন্য মাইলফলক। ১৯৭১ সালের এ মাসেই আমাদের জাতি চূড়ান্তভাবে রুখে দাঁড়ানোর সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে অর্জন করেছিল চূড়ান্ত বিজয়।’

উপাচার্য ১৪ ডিসেম্বর শহীদ হওয়া বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ বলেন, ‘এ জাতি প্রয়োজনের মুহূর্তে সব সময়ই ঐক্যবদ্ধ হতে জানে। জাতি–ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে আমরা দেশমাতৃকার সংকটে একসঙ্গে দাঁড়াই। ইতিহাস বারবার এই সত্যের সাক্ষ্য বহন করেছে। বিজয়ের এই মাস আমাদের সেই ঐক্যবদ্ধতার চেতনাকে আরও শক্তিশালী করুক, এই কামনা করি।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের সুনাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমৃদ্ধ করেছে। দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের এই প্রতিষ্ঠান বারবার প্রমাণ করেছে, স্বাধিকার, ন্যায় ও মানবিক মূল্যবোধের পক্ষে আমরা অটল। আজ আমরা জাতির এই অর্জনকে স্মরণ করছি। প্রার্থনা করি, এই চেতনা ভবিষ্যতেও আমাদের আরও সুসংগঠিত ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তুলুক।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় মানুষের মমতায় বেঁচে থাকে উল্লেখ করে উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ‘দেশবাসীর ভালোবাসা ও সহযোগিতায় আমরা শক্তি পাই। আজকের এই বিজয় র‌্যালির মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী যে কর্মসূচি শুরু হচ্ছে, এটি শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়; এটি জাতির সম্মিলিত আয়োজন। দেশের মানুষ বিভিন্ন সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছায়াতলে সমবেত হয়ে আমাদের হাতকে শক্তিশালী করেছে, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা চাই, এই বিজয়ের মাস জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠুক। আমাদের সমাজে ভাঙনের কোনো সুর যেন না শোনা যায়, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ঐক্য, দেশপ্রেম ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা আমাদের পথচলার প্রধান শক্তি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশে কারখানা চালু করল স্মার্টফোন নির্মাতা অনার
  • খালেদা জিয়া ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলা শিখিয়েছেন: রাশেদ খান
  • প্রার্থী ঘোষণার পর প্রথম নির্বাচনী এলাকায় সালাহউদ্দিন আহমদ, চালাবেন প্রচারণা
  • স্বাধীনতার ঘোষণায় বাংলাদেশের উন্মেষ
  • তারেক রহমান শিগগির দেশে ফিরবেন: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মাদক সম্রাট ‘এল চাপো’র ছেলের মাদক মামলায় দোষ স্বীকার
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজয় দিবস সামনে রেখে বর্ণাঢ্য র‍্যালি
  • সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র মামলা
  • ‘অসুস্থ মায়ের পাশে থাকতে না পারা কত যন্ত্রণার, সেটা সন্তানই বুঝতে পারে’