সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর অংশবিশেষ বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে ইন্টারভেনার (পক্ষ) হিসেবে যুক্ত হয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী। এ–সংক্রান্ত আপিলে ইন্টারভেনার হিসেবে যুক্ত হতে তাঁদের করা পৃথক আবেদন মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ মঙ্গলবার এ–সংক্রান্ত আবেদন মঞ্জুর করেছেন। এ ছাড়া ইন্টারভেনার (পক্ষ) হিসেবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো.

রুহুল কুদ্দুস এবং সেন্টার ফর ল গভর্ন্যান্স অ্যান্ড পলিসি নামের একটি সংগঠনের আবেদনও মঞ্জুর করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয় পরিবর্তন করে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর অংশবিশেষ বাতিল করে হাইকোর্ট যে রায় দেন, তার বিরুদ্ধে তিনটি আপিল এদিন আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় এক, দুই ও তিন নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

এর আগে হাইকোর্ট পৃথক দুটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর পঞ্চদশ সংশোধনীর অংশবিশেষ অসাংবিধানিক উল্লেখ করে তা বাতিল করে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদকসহ চার ব্যক্তি একটি আপিল করেন, যা কার্যতালিকার এক নম্বর ক্রমিকে ছিল। নওগাঁর বাসিন্দা মো. মোফাজ্জল হোসেন এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে করা পৃথক আপিল যথাক্রমে কার্যতালিকার দুই ও তিন নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

সকালে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন ইন্টারভেনার হওয়ার আবেদন দাখিল করেন। নিজে ইন্টারভেনার হতে আবেদন দাখিল করছেন উল্লেখ করে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিএনপির পক্ষেও তিনি বলবেন। বিএনপির মহাসচিবের পক্ষে ইন্টারভেনার হতে আবেদন দাখিল করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। এ ছাড়া সেন্টার ফর ল গভর্ন্যান্স অ্যান্ড পলিসি নামের একটি সংগঠনের ইন্টারভেনার হওয়ার আবেদন দাখিল করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক। আবেদন দাখিলের পর আদালত বলেন, আবেদন মঞ্জুর করা হলো।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, আপিলগুলো মঙ্গলবার শুনানির জন্য কার্যতালিকার শীর্ষে ছিল। তবে সামনে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ রয়েছে, যা ১৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে। এর মধ্যে আপিলগুলোর শুনানি শেষ হবে কি না—এমন প্রসঙ্গ আলোচনায় আসে। আপিলকারী পক্ষের আইনজীবীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শুনানি শেষ করা ও লিখিত আকারে তাঁদের বক্তব্য দাখিল করবেন বলে আদালতকে জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ বুধবার আপিল শুনানির জন্য দিন রেখেছেন।

এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন এনে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী এনেছিল। ২০১১ সালের ৩০ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ ওই সংশোধনীতে সংবিধানে ৫৪টি ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছিল।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ য ষ ঠ আইনজ ব আপ ল ব ভ গ ক র যত ল ক ল কর ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নারী ফুটবল দলের প্রতি বৈষম্য বন্ধে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ নয়, জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট

নারী ফুটবল দলের প্রতি বৈষম্য বন্ধে ব্যর্থতা বা নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পুরুষ ফুটবল দলের মতো নারী ফুটবল দলের ক্ষেত্রে একই ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে ব্যর্থতা বা নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী ও বিচারপতি রাজিউদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন।

‘এত সাফল্যের পরও নারী ফুটবল দল কেন বঞ্চিত, সমতা কবে আসবে’ শিরোনামে গত ২৬ জুলাই প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে নারী ফুটবল দলের প্রতি বৈষম্য বন্ধে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে পুরুষ দলের মতো তাদের ক্ষেত্রেও একই ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে গত অক্টোবরে রিটটি করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমাইয়া বিনতে তানভীর ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী আরিজা মেহেলী খান ওই রিট করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে আবেদনকারী আইনজীবী সুমাইয়া বিনতে তানভীর নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।

পরে আইনজীবী সুমাইয়া বিনতে তানভীর প্রথম আলোকে বলেন, পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ ফুটবল দলের মধ্যে বৈষম্য দেখা যায়। পুরুষ ফুটবলাররা বছরে ৪০ বা ৫০ লাখ টাকা আয় করেন। অন্যদিকে প্রথম শ্রেণির নারী ফুটবলাররা বছরে মাত্র ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ টাকা বেতন পান। তাঁদের জন্য আবাসন–সুবিধা নেই। তাঁদের জন্য নিয়মিত লিগ আয়োজন করা হয় না। এ ছাড়া কোনো খেলায় জিতলে পুরুষ ফুটবলারদের পাঁচ লাখ টাকা করে প্রণোদনা দেওয়া হয়। এই প্রণোদনা নারী ফুটবলারদের ক্ষেত্রে খুবই কম, তা–ও অনিয়মিত।

আরও পড়ুনএত সাফল্যের পরেও নারী ফুটবল দল কেন বঞ্চিত, সমতা কবে আসবে২৬ জুলাই ২০২৫

এসব বিষয় সংবিধানের ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী উল্লেখ করে আইনজীবী সুমাইয়া বিনতে তানভীর বলেন, সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না এবং ২৯ অনুচ্ছেদে সব নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতার কথা উল্লেখ রয়েছে। মূলত এসব যুক্তিতে রিটটি করা হলে আদালত ওই রুল দেন। যুব ও ক্রীড়াসচিব, অর্থসচিব, ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিলের সচিব ও জাতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতিসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশে টিউলিপের কারাদণ্ডের রায়ে যুক্তরাজ্যে কী প্রভাব পড়তে পারে
  • কুমিল্লায় ছাত্রলীগ ‘সন্দেহে’ গ্রেপ্তার অষ্টম শ্রেণির সেই শিক্ষার্থীর জামিন
  • জুলাইয়ে কুষ্টিয়ায় হামলার প্রত্যক্ষ নির্দেশদাতা ইনু
  • জোটে গেলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান প্রশ্নে রুল
  • ঈশ্বরদীতে সংঘর্ষের ঘটনায় জামিন পেলেন জামায়াত প্রার্থী তালেব
  • কালের কণ্ঠের ‘ডিক্লারেশন’ কেন বাতিল হবে না, সাবেক ১১ কর্মীর বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ
  • টিউলিপ–রেহানা–হাসিনার মামলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী রায় হয়নি: দুদকের আইনজীবী
  • ক্ষমা চেয়ে প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি নেতানিয়াহুর
  • নারী ফুটবল দলের প্রতি বৈষম্য বন্ধে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ নয়, জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট