বিশ্বকাপ ২০২৬: গ্রুপ পর্বে যে ৭টি ম্যাচ হতে পারে দারুণ রোমাঞ্চকর
Published: 7th, December 2025 GMT
২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র হয়ে গেছে। কোন দল কোন গ্রুপে পড়েছে, প্রতিপক্ষ কারা, সেসবও জানা হয়ে গেছে। এবার অপেক্ষা মাঠের লড়াইয়ের।
এবারের বিশ্বকাপে দল বেড়েছে ১৬টি। ৩২ থেকে সংখ্যাটা ৪৮ হয়ে যাওয়ায় অনেকের মনে হতেই পারে, গ্রুপ পর্বের ঝাঁজ বুঝি কমে যাচ্ছে এবার। তা হয়তো একটু কমবে। তবে এর মাঝেও ড্রয়ে এমন কিছু ম্যাচ নিশ্চিত হয়েছে, যেগুলো দেখার জন্য ফুটবলপ্রেমীরা হয়তো অধীর আগ্রহেই অপেক্ষা করবেন।
ও রকম ৭টি ম্যাচের দিন তারিখ আগেই টুকে রাখতে পারেন ক্যালেন্ডারে।
কোনো সন্দেহ নেই, সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশিত দ্বৈরথটি হতে চলেছে ‘আই’ গ্রুপে—ফ্রান্স বনাম নরওয়ে। এই বিশ্বের সেরা দুই ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আর্লিং হলান্ড মুখোমুখি হবেন এই ম্যাচে। গোল উৎসব তো হতেই পারে। ২৮ বছর পর নরওয়ে এসেছে বিশ্বকাপে, হলান্ড খেলবেন প্রথমবার। ওদিকে এমবাপ্পে এরই মধ্যে ২০১৮ বিশ্বকাপজয়ী, ২০২২ সালের রানার্স আপ দলের সেরা খেলোয়াড় ও গোল্ডেন বুটজয়ী। হলান্ডও নিশ্চয়ই চাইবেন এবার নিজের ছাপ রেখে যেতে।
স্পেন-উরুগুয়ে: ভিন্ন দুই ফুটবল-দর্শনের লড়াই‘এইচ’ গ্রুপে এক ধুন্ধুমার লড়াইয়ের হাতছানি। মুখোমুখি দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেন ও উরুগুয়ে। দুই ভিন্ন ঘরানার ফুটবলের সংঘাত! লুইস দে লা ফুয়েন্তের দলের দৃষ্টিনন্দন, পাসিং ফুটবলের বিপরীতে উরুগুয়ের সেই চিরচেনা ‘চ্যারুয়া গ্রিট’ বা লড়াকু মনোভাব। এমন এক ম্যাচ, যা ভরপুর বিনোদনের আভাস দিচ্ছে।
রোনালদোর পর্তুগাল বনাম হামেসের কলম্বিয়াবিশ্বকাপে কলম্বিয়া কখনো নিরাশ করে না। ওদের যাত্রা যেখানেই থামুক, তার আগপর্যন্ত বিনোদনের পসরা সাজিয়ে রাখে। এবার তারা গ্রুপ ‘কে’-তে, যেখানে অন্যতম প্রতিপক্ষ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল! রোনালদোর মতো না হলেও কলম্বিয়া দলেও আছেন এক বড় তারকা হামেস রদ্রিগেজ। বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকেই আসলে যাঁর উত্থান হয়েছিল। দুজনেরই সম্ভবত এটা শেষ বিশ্বকাপ। দুই জাদুকরের দ্বৈরথ কেমন হয়, সেটা দেখার অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।
ইংল্যান্ডের কঠিন পরীক্ষা: প্রতিপক্ষ ভয়ংকর ক্রোয়েশিয়াছয় দশক ধরে বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডের জন্য এক আক্ষেপের নাম। এবার টমাস টুখেল পেয়েছেন ইংল্যান্ডের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই প্রজন্মকে। বাছাইপর্বে দুর্দান্ত খেলেছে ইংল্যান্ড। তাদের মনে করা হচ্ছে শিরোপার বড় দাবিদার। কিন্তু গ্রুপে তাদের সামনে বাধা হতে পারে ক্রোয়েশিয়া। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে ক্রোয়াটরা তৃতীয় হয়েছিল, এর আগের বিশ্বকাপে রানার্স আপ। ইংল্যান্ডের পথটা কঠিন করে তুলতে পারে এই একটা ম্যাচই।
শুরুতেই মরক্কো-চ্যালেঞ্জে ব্রাজিলমরক্কোকে বলা যায় বিশ্ব ফুটবলের উদীয়মান শক্তি। ২০২২ বিশ্বকাপে তারা সবাইকে চমকে দিয়ে চতুর্থ হয়েছে। বড় দলগুলোর সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে শিখে গেছে। ব্রাজিল অবশ্য শুধু বড় দল নয়, বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দলও। তবে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা সর্বশেষ ট্রফি জিতেছিল ২৪ বছর আগে। সেই অপেক্ষা ঘোচানোর আশায় কার্লো আনচেলত্তিকে কোচ বানিয়েছে সেলেসাওরা। বাছাইপর্বে খুব একটা ভালো খেলেনি ব্রাজিল। ফলে মরক্কোর বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি আনচেলত্তির জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে।
ফ্রান্স-সেনেগাল: ২০০২-এর প্রতিশোধ হবে এবারবিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম বড় অঘটনের সঙ্গে এই দুই দলের নাম জড়িত। ২০০২ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই তখনকার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে ১-০ গোলে হারিয়ে পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল সেনেগাল। ২৪ বছর পর সেই হারের বদলা নেওয়ার সুযোগ এসেছে ফ্রান্সের সামনে। দিদিয়ের দেশমের দল নিশ্চয়ই সুযোগটা দারুণভাবেই কাজে লাগাতে চাইবে। কিন্তু সেনেগাল কি সহজে ছেড়ে দেবে?
নড়বড়ে জার্মানির সামনে ইকুয়েডর চারবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, অথচ সর্বশেষ দুটি বিশ্বকাপেই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে দলটা। এবার গ্রুপ পর্বে ইকুয়েডরের বিপক্ষে তাদের ম্যাচটা হাই ভোল্টেজ লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। ইকুয়েডরের রক্ষণভাগ শুধু দক্ষিণ আমেরিকার নয়, বিশ্বের অন্যতম সেরা। দুই দলের সর্বশেষ দেখা হয়েছিল ২০০৬ বিশ্বকাপে, যেখানে জার্মানরা জিতেছিল ৩-০ গোলে। তবে সময় এখন পাল্টেছে, নইলে কি আর জার্মানি গ্রুপ পর্ব থেকেই পরপর দুবার বাদ পড়ে!
আরও পড়ুন২০২৬ বিশ্বকাপে কি মৃত্যুকূপ বলে কিছু আছে১৫ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বক প র গ র প পর ব ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলা একাডেমিতে ১০ ডিসেম্বর থেকে ‘বিজয় বইমেলা’
মহান বিজয়ের মাসে নতুন প্রজন্মে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে এবং জ্ঞানভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘বিজয় বইমেলা-২০২৫’। বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির (বাপুস) উদ্যোগে বাংলা একাডেমি মাঠে আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে এই মেলা চলবে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলন করে বাপুস থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, এটি কেবল বই কেনা-বেচার কোনো সাধারণ বাণিজ্যিক আয়োজন নয়; বরং এটি জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও মননশীলতা তৈরির পদক্ষেপ। এবারের মেলায় দেশের প্রায় ২০০ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। এ ছাড়াও থাকবে শিশুদের জন্য বিশেষ আয়োজন, মুক্তিযুদ্ধের তথ্যচিত্র প্রদর্শন, ঐতিহ্যবাহী সংগীত এবং লেখক-পাঠকের সরাসরি মত বিনিময়।
সংবাদ সম্মেলনে বাপুস দেশের প্রকাশনা শিল্প ও পাঠক সৃষ্টি নিয়ে তাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে। এ সময় তারা ২০২৬ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এবং বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বইমেলা আয়োজনের ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে ২০২৬ সালের মে মাসে ‘ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস বুক ফেয়ার’ এবং ‘সাউথ-ইস্ট এশিয়া ইন্টারন্যাশনাল বুক ফেয়ার’ আয়োজনের কথা জানায়।
মেলার সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা এবং ছুটির দিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিজয় বইমেলা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী রাজ্জাক রুবেল। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান সমন্বয়কারী আবুল বাশার ফিরোজ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সহ-সমন্বয়ক কাউছার আহম্মেদ, সদস্য সাবা খালেদ প্রমুখ।
ঢাকা/তারা//