এমন লোকদেখানো সংস্কারের অর্থ কী
Published: 7th, December 2025 GMT
নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দল ও পুলিশ সদস্যদের দাবি উপেক্ষা করে নামমাত্র ক্ষমতা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের যে অনুমোদন দিয়েছে, সেটা চূড়ান্ত রকমের হতাশাজনক। স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের বদলে সুপারিশ-পরামর্শ প্রদানের ক্ষমতাসম্পন্ন যে কমিশন করা হচ্ছে, তাতে পুলিশকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে ব্যবহারের সুযোগ পুরোদমেই থেকে যাচ্ছে। অভ্যুত্থানের পর পুলিশকে জনবান্ধব বাহিনীতে রূপান্তরের যে সুযোগ তৈরি হয়েছিল, আমলাতন্ত্রের চাপে সরকার তা থেকে পিছু হটেছে বলেই আমরা মনে করি। সরকারের এই পদক্ষেপ চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের জন-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার কমবেশি সব সরকার করলেও হাসিনা সরকারের আমলে তা চূড়ান্ত রূপ পেয়েছিল। বিরোধীদের দমন, মামলা-হামলা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, ডিজিটাল নজরদারি, ভয়ের সংস্কৃতি তৈরিসহ নাগরিক নিপীড়নের রাজনৈতিক অস্ত্র করা হয়েছিল পুলিশকে। জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের প্রতিবেদনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, তার বেশির ভাগই ঘটেছে পুলিশের গুলিতে।
পুলিশের বিরুদ্ধে যে তীব্র জনরোষ তৈরি হয়েছিল, তাতে আক্রান্ত হয়েছিল দেশের অনেক থানা, ফাঁড়ি। ফলে পুলিশি ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দল এবং খোদ পুলিশ সদস্যদের মধ্য থেকে পুলিশ সংস্কার এবং রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাবমুক্ত স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের জোরালো দাবি উঠেছিল। পুলিশের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে কমিশনের অধীন নিয়ে আসার কথা উঠেছিল।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সভায় পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তাতে স্বাধীন পুলিশ কমিশন হচ্ছে না; বরং কমিশনের কার্যক্রমকে সীমিত ও সুপারিশকেন্দ্রিক করা হয়েছে; অর্থাৎ কমিশন মানবাধিকার, প্রশিক্ষণসহ নানা বিষয়ে সুপারিশ ও পরামর্শ দেবে। সমস্যাজনক বিষয় হচ্ছে কমিশনের এসব সুপারিশ-পরামর্শ মানার ক্ষেত্রে পুলিশের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। যাত্রাপালায় বিবেকের ভূমিকার মতো করে পুলিশ কমিশন গঠন করা হলে সেই নখদন্তহীন কমিশন কীভাবে পুলিশকে জনবান্ধব ও গণমুখী বাহিনীতে রূপান্তরিত করতে পারবে?
সরকার ও আমলাতন্ত্রের কাছে পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের সুযোগ রেখে যত ভালো ও যোগ্য ব্যক্তিদের দিয়ে কমিশন গঠন করা হোক না কেন, বাস্তবে সেটা কোনো ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পারবে না। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি এম আকবর আলী নতুন করে পুলিশের ওপর হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করা হলো বলে যে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, সেটা যথার্থ বলেই আমরা মনে করি। পুলিশকে আগের মতো চালানোর সব আয়োজন রেখে জনবান্ধব পুলিশের প্রত্যাশা করাটা বাতুলতা ছাড়া আর কী হতে পারে?
অভ্যুত্থানের পর পুলিশ সংস্কারের জোরালো দাবি সমাজের সব অংশ থেকে উঠলে আইন উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি কমিটি পুলিশ কমিশনের খসড়া তৈরি করে। সেই খসড়ায় পুলিশকে খুব সামান্য ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই খসড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেলে সেই ক্ষমতাটুকুও বাদ দেওয়া হয়েছে। শুধু পুলিশ কমিশন নয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের সংস্কারের ক্ষেত্রেও আমলাতন্ত্রের এই ভূমিকা দেখা গেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট নিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার জন–আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের বদলে কেন আমলাতন্ত্রের চাপে পথ বিচ্যুত হবে। এমন লোকদেখানো সংস্কার কী অর্থ বহন করতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক হয় ছ ল সরক র ক ষমত আমল ত
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির মনোনীত নেতারা প্রচারে, পিছিয়ে নেই জামায়াত
সুনামগঞ্জের পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে প্রথমে তিনটিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল বিএনপি। সম্প্রতি বাকি দুটি আসনেও প্রার্থী ঘোষণা করায় জমে উঠেছে জেলার নির্বাচনী রাজনীতি। এর মধ্যে তিনটি আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। প্রতিদিনই নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির প্রার্থীদের গণসংযোগের পাশাপাশি দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ করছেন।
এদিকে জেলার পাঁচটি আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। মাঠের প্রচারে বেশি জোর দিচ্ছে দলটি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পাঁচজন প্রার্থী ঘোষণা হলেও নির্বাচনী মাঠে তাঁদের তৎপরতা তুলনামূলক কম। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কোনো প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। ভোটের মাঠে তাদের তৎপরতা না থাকলেও তারা দল গোছানোর চেষ্টা করছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সভাপতি মুফতি শহীদুল ইসলাম পলাশী প্রথম আলোকে বলেন, সুনামগঞ্জে সব আসনেই তাঁদের প্রার্থীরা তৎপর আছেন, প্রচার চালাচ্ছেন। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ-১, সুনামগঞ্জ-৩ ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনে তাঁদের অবস্থা ভালো, অন্য দুটিতে কিছু দুর্বলতা আছে। তাঁরা সব কটিতে ভালো করার চেষ্টা করছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে। জাতীয় পার্টির (জাপা) কার্যক্রম স্থবির। নেতা-কর্মীদেরও তেমন তৎপরতা নেই। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার দলীয় প্রস্তুতি রয়েছে বলে দাবি জেলা জাপার সদস্যসচিব নাজমুল হুদার।
হাওর–অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ চারটিতে এবং একটিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়ী হন। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চারটিতে আওয়ামী লীগ এবং একটিতে জোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়ী হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের প্রার্থী হিসেবে একটিতে জাতীয় পার্টি এবং চারটিতে জয়ী হয় আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব কটিতে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।
তবে গত চারটি নির্বাচনে নানা কারণে আলোচনায় ছিল সুনামগঞ্জ-৪ আসনটি। এটি জেলার সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। এই আসনে ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনটি নির্বাচনে জোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়। সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে এই আসন আর ছাড় দেয়নি আওয়ামী লীগ। জেলা সদরের আলোচিত এই আসনে এবার বিএনপি প্রার্থী করেছে দলের জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য আইনজীবী নুরুল ইসলামকে।
সুনামগঞ্জে সব আসনেই প্রার্থীরা তৎপর আছেন, প্রচার চালাচ্ছেন। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ-১, সুনামগঞ্জ-৩ ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনে তাঁদের অবস্থা ভালো, অন্য দুটিতে কিছু দুর্বলতা আছে। তাঁরা সব কটিতে ভালো করার চেষ্টা করছেন।মুফতি শহীদুল ইসলাম পলাশী, জেলা সভাপতি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর)
সুনামগঞ্জের আলোচিত এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিসুল হক। প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলন করছেন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুজ্জামানের অনুসারীরা। প্রার্থী পরিবর্তন ও কামরুজ্জামানকে প্রার্থী করার দাবিতে প্রতিদিনই সংসদীয় আসনের কোথাও না কোথাও বিক্ষোভ হচ্ছে। অন্যদিকে জোরেশোরে মাঠে প্রচার চালাচ্ছেন আনিসুল হক। এখানে আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুর রহমানও সক্রিয় আছেন।
বিএনপির প্রার্থী আনিসুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি দুর্দিনে নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলাম। কখনো মাঠ ছাড়িনি। আমাকে দল প্রার্থী করায় নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত।’ তবে কামরুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘোষিত প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা হতাশ। আশা করছেন দল মানুষের দাবি শুনতে পাবে।
বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আসনটিতে প্রচার চালাচ্ছেন জেলা জামায়াতের আমির তোফায়েল আহমদ খান। তিনি বলেন, ‘জনগণ সব দলকে দেখেছে। এবার তারা জামায়াতের মাধ্যমে দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে।’
এখানে ইসলামী আন্দোলনের ফখর উদ্দিন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) চিত্তরঞ্জন তালুকদার নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা)
আসনটি প্রথমে ফাঁকা রেখেছিল বিএনপি। এখানে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাহির রায়হান চৌধুরী (পাভেল)। নাছির উদ্দিন চৌধুরী শারীরিক অসুস্থতার কারণে এত দিন মাঠে না থাকলেও সম্প্রতি দিরাই সদরে সমাবেশ করে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। ৪ ডিসেম্বর বিএনপি তাঁকে আসনটিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
চেষ্টা করছি মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার। হাওর এলাকা, অনেক সংকট। প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। মানুষের আগ্রহ আছে। এটি শেষ পর্যন্ত থাকলে আশা করি ভালো কিছু হবে। মোহাম্মদ শিশির মনির, সুনামগঞ্জ–২ আসনের জামায়াতের প্রার্থীএ আসনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি মোহাম্মদ শিশির মনিরকে প্রার্থী করেছে জামায়াত। তিনি মাঠে প্রচার চালাচ্ছেন। শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, ‘চেষ্টা করছি মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার। হাওর এলাকা, অনেক সংকট। প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। মানুষের আগ্রহ আছে। এটি শেষ পর্যন্ত থাকলে আশা করি ভালো কিছু হবে।’
আসনটিতে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শোয়াইব আহমদ। বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী জোট হলে জমিয়তে উলামায়ে আসনটি চাইতে পারে বলে এলাকায় আলোচনা আছে। ইসলামী আন্দোলনের জেলা সেক্রেটারি সোহেল আহমদ, সিপিবির নিরঞ্জন দাস (খোকন) প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ)
বিএনপি এখানে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। আসনটিতে মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন এবং বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি সদস্য নাদীর আহমদ নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন। দুজনই দলীয় প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন।
নাদীর আহমদ বলেন, ‘আমি তো দীর্ঘদিন থেকে মাঠে। সবখানেই যাচ্ছি, মানুষের সাড়া পাচ্ছি।’ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নেমেছি। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও চান আমি নির্বাচন করি।’
জামায়াতের সিলেট মহানগর শাখার মজলিশে শুরা সদস্য মোহাম্মদ ইয়াসীন খানকে এখানে প্রার্থী করেছে দলটি। এ ছাড়া খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীনুর পাশা চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলনের মুফতি আবদুল হাই প্রার্থী হিসেবে মাঠে তৎপর আছেন।
সুনামগঞ্জ-৪ (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর)
দ্বিতীয় ধাপে ৪ ডিসেম্বর এই আসনে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করেছে। মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম। এ ছাড়া মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চারবারের সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবিদুল হক ও আবুল মনসুর মো. শওকত।
নুরুল ইসলাম বলেন, ‘গত ১৬ বছর হামলা-মামলা সহ্য করে নেতা-কর্মীদের আগলে রেখেছি। আমি কেন্দ্রের নির্দেশনায় মাঠে কাজ করছি।’
জামায়াত এখানে জেলার নায়েবে আমির মোহাম্মদ শামস্ উদদীনকে প্রার্থী করেছে। এ ছাড়া গণ অধিকার পরিষদের জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সওগাত উছমানী চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি মুফতি শহীদুল ইসলাম পলাশী প্রার্থী হতে পারেন।
এনসিপির প্রার্থী হিসেবে জেলার আহ্বায়ক দেওয়ান সাজাউর রাজা চৌধুরীর (সুমন) নাম শোনা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা একই সঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতি ও দল গোছানোর কাজ করছি।’
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক ও দোয়ারাবাজার)
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদকে (মিলন) প্রার্থী ঘোষণা করেছে দল। এখানেও প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ছাতক উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরীর সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেছেন।
কলিম উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমি ২০১৮ সালে মনোনয়ন না পেয়ে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে দলের প্রার্থীর পক্ষে মাঠে ছিলাম। এবার দল আমাকে প্রার্থী করেছে। ধানের শীষের পক্ষে এখানে সবাই ঐক্যবদ্ধ।’
জামায়াতের সিলেট মহানগর শাখার মজলিশে শুরা সদস্য আবদুস সালাম আল মাদানী এখানে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ২০০১ সালে ঐক্যজোটের প্রার্থী হিসেবে এখানে নির্বাচন করেছিলেন। তাঁর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান রেজাউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘আমরা পুরো প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে আছি। ইতিমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় সভা-সমাবেশ, উঠান বৈঠকসহ নানা কর্মসূচি করেছি।’
ইসলামী আন্দোলন এখানে আলী আকবর সিদ্দিকীকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে।