আফ্রিকার দেশ সুদানে একটি কিন্ডারগার্টেনসহ একাধিক স্থানে আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) হামলায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে অন্তত ১১৪ হয়েছে। এর মধ্যে ৪৬টি শিশু। স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

এ হামলার ঘটনা ঘটে সাউথ করদোফান রাজ্যের কালোগিতে, গত বৃহস্পতিবার। কালোগির নির্বাহী পরিচালক গতকাল শনিবার আল–জাজিরাকে অন্তত ৭১ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছিলেন।

এর আগে গত শুক্রবার দিনের শেষে সুদানের চিকিৎসকদের জোট সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক এক বিবৃতিতে জানায়, ঘটনাস্থলে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দ্বিতীয়বারের মতো হামলা হয়েছে।

আরও পড়ুনসুদানে আরএসএফের হামলায় নিহত ৩০০১৫ জুলাই ২০২৫

সুদানের সরকার–সমর্থিত সুদানিজ আর্মড ফোর্সেসের (এসএএফ) দুটি সূত্র আল–জাজিরাকে জানায়, বৃহস্পতিবার ওই কিন্ডারগার্টেনে আরএসএফ প্রথমবার হামলা চালায়। পর উদ্ধারকাজে সেখানে জড়ো হওয়া বেসামরিক মানুষদের ওপর আরেক দফায় হামলা চালানো হয়।

এ ছাড়া শহরের হাসপাতাল ও একটি সরকারি ভবনে বোমা হামলা চালানো হয়েছে বলে জানায় একটি সূত্র।

সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক বলেছে, বেসামরিক মানুষ ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোয় একের পর এক হামলার ধারাবাহিকতায় চালানো এবারের হামলা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।

সুদানে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন উয়েত শুক্রবার বলেন, নিজের বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিশুদের হত্যা করা শিশু অধিকারের চরম লঙ্ঘন। বিবদমান সব পক্ষের প্রতি অবিলম্বে এমন সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, শিশুদের কখনোই সংঘাতের মূল্য চোকানো উচিত নয়।

সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক বলেছে, বেসামরিক মানুষ ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোয় একের পর এক হামলার ধারাবাহিকতায় চালানো এবারের হামলা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।

আরও পড়ুনদারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা০৩ নভেম্বর ২০২৫

রাজধানী খার্তুম থেকে আল–জাজিরার হিবা মরগান জানান, প্রাথমিক প্রতিবেদনে যে তথ্য দেওয়া হয়েছিল, হতাহত মানুষের সংখ্যা তার চেয়ে বেশি। নিহত মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। কেননা, হামলায় আহত ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেতে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

নিজের বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিশুদের হত্যা করা শিশু অধিকারের চরম লঙ্ঘন। শিশুদের কখনোই সংঘাতের মূল্য চোকানো উচিত নয়।শেলডন উয়েত, সুদানে ইউনিসেফের প্রতিনিধি

২০২৩ সাল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফের লড়াই চলছে। দেশের কেন্দ্র ও পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে সেনাবাহিনী। আর আরএসএফ পশ্চিমাঞ্চলের, বিশেষ করে উত্তর করদোফান ও দারফুর অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব জোরদার করতে চাইছে। এসব সংঘাতে দরিদ্র দেশটির লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

আরও পড়ুনসুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন০২ নভেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আরএসএফ র

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কিন্ডারগার্টেনে ড্রোন হামলা, ৩৩ শিশুসহ নিহত ৫০

সুদানের দক্ষিণ করদোফান অঞ্চলে একটি কিন্ডারগার্টেনে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। এতে ৩৩ শিশুসহ কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছেন। 

রবিবার (৭ ডিসেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

চলমান গৃহযুদ্ধে সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইরত আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) বৃহস্পতিবারের এই হামলার জন্য অভিযুক্ত করেছে সুদানের চিকিৎসকদের সংগঠন ‘সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক’ ও সেনাবাহিনী। তবে এ বিষয়ে আরএসএফ কোনো মন্তব্য করেনি।

উল্টো আরএসএফ অভিযোগ করেছে, শুক্রবার সেনাবাহিনী দারফুর অঞ্চলের চাঁদ সীমান্তবর্তী আদ্রে ক্রসিং এলাকার একটি জ্বালানি ডিপো ও বাজারে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের ক্ষমতা দ্বন্দ্ব থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে সুদান বিধ্বস্ত।

সেনাবাহিনী সমর্থিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, ড্রোন থেকে ছোড়া দুটি ক্ষেপণাস্ত্র কিন্ডারগার্টেনে আঘাত হানে। আহতদের সাহায্য করতে আসা সাধারণ মানুষ ও চিকিৎসকদের ওপরও হামলা হয়।

কালোগির হামলার পর ইউনিসেফের মুখপাত্র শেলডন ইয়েট বলেন, “স্কুলে শিশুদের হত্যা শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের এক ভয়াবহ ঘটনা। কোনো সংঘাতের মূল্য কখনোই শিশুদের দিয়ে চুকানো উচিত নয়।” 

তিনি সব পক্ষকে অবিলম্বে এসব হামলা বন্ধ করতে এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে নিরাপদ, বাধাহীন প্রবেশের অনুমতি দিতে আহ্বান জানান।

আরএসএফ দাবি করেছে, আদ্রে সীমান্ত ক্রসিংটি মানবিক সহায়তা ও পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত হওয়ায় সেনাবাহিনী সেখানে হামলা চালিয়েছে।

দেশটির রাজধানী খার্তুম ও দারফুরের মাঝামাঝি থাকা উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম করদোফান মিলে গঠিত অঞ্চলটি গৃহযুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্টলাইন। প্রায় ৮০ লাখ জনসংখ্যার এই করদোফান এলাকায় সেনাবাহিনী দারফুরের দিকে অগ্রসর হওয়ায় লড়াই আরো তীব্র হয়েছে।

ঢাকা/ইভা   

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানে কিন্ডারগার্টেনে ড্রোন হামলা, ৩৩ শিশুসহ নিহত ৫০