একীভূত ৫ ব্যাংকের গ্রাহকেরা কীভাবে টাকা ফেরত পাবেন
Published: 7th, December 2025 GMT
একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের আমানতকারীরা তাঁদের টাকা ফেরত পাবেন। চলতি সপ্তাহ থেকে তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়া শুরু হতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
একজন আমানতকারী তাঁদের ব্যাংক হিসাবে জমা ২ লাখ টাকা পর্যন্ত পাবেন। বাংলাদেশের ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় আমানত বিমা তহবিল থেকে এই টাকা দেওয়া হবে।
সমস্যাগ্রস্ত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক একীভূত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ‘সম্মিলিত ইসলামি ব্যাংক পিএলসি’র চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। ব্যাংকটি সমস্যাগ্রস্ত ওই পাঁচ ইসলামি ব্যাংককে অধিগ্রহণ করবে।
কীভাবে টাকা পাবেন
কী প্রক্রিয়ায় এই টাকা ফেরত দেওয়া হবে ও কারা কারা এই টাকা ফেরত পাবেন, তা নিয়ে একটি স্কিম প্রণয়নের কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। টাকা ফেরতের আগে এই স্কিম প্রকাশ করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, যেসব গ্রাহকের হিসাবে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত আছে, তাঁরা চাইলে পুরো টাকা উঠিয়ে নিতে পারবেন। যাঁদের হিসাবে দুই লাখ টাকার বেশি টাকা আছে, তাঁরা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পাবেন। বাকি টাকার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই গ্রাহকের আমানতের বাকি টাকার ওপর মুনাফার হার নতুন করে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
এর মানে হলো, ৫ ব্যাংকে থাকা ৭৫ লাখ আমানতকারীর সবাই সব টাকা ফেরত পাবেন না। আপাতত দুই লাখ টাকা পর্যন্ত পেলেও পরে চাইলে পুরো টাকা তুলতে পারবেন গ্রাহকেরা। মূলত ছোট গ্রাহকদের আতঙ্ক ও অতীব জরুরি প্রয়োজন মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
টাকা পেতে নিয়ম কী
নিজেদের টাকা গ্রাহকদের জন্য কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো:
১.
২. যাঁদের হিসাব বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে খোলা হয়েছে, শুধু তাঁরাই টাকা পাবেন।
৩. একজন নাগরিকের পাঁচ ব্যাংকের পাঁচটি হিসাব থাকলে প্রতিটির বিপরীতে টাকা পাবেন।
৪. সংশ্লিষ্ট আমানতের বিপরীতে ঋণ থাকলে টাকা পাবেন না। ঋণ সমন্বয় করার পর টাকা ফেরতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
৫. বাকি টাকার ওপর সুদের হার নতুন করে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
খরচ ১২ হাজার কোটি টাকা
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রাথমিক হিসাব করে দেখেছে, গ্রাহকদের টাকা দিতে সব মিলিয়ে ১২ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে।
সম্মিলিত ইসলামি ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ঠিক করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২০ হাজার কোটি এবং আমানত বিমা তহবিল থেকে দেওয়া হবে ১৫ হাজার কোটি টাকা। অনুমোদিত মূলধন ঠিক করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি।
ইতিমধ্যে সরকারের মূলধনের ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। বাকি টাকা মূলধন হিসেবে ব্যাংককে দেওয়া হবে।
একীভূত ব্যাংকটির ভিত্তি শক্তিশালী কর নানা উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর মধ্যে থাকবে ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ শীর্ষ পর্যায়ে দক্ষ, অভিজ্ঞ ও সৎ কর্মকর্তা নিয়োগ, ব্যাংকটির পরিচালনার নীতিমালা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে গ্রাহক আস্থা তৈরি করা হবে।
রাজধানীর মতিঝিলের সেনাকল্যাণ ভবনে নতুন ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ব্যাংকটিতে চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ দিয়েছে সরকার। পর্ষদের সবাই সরকারের সাবেক ও বর্তমান আমলা। সামনে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়ে পর্ষদকে আরও যোগ্য করে গড়ে তোলা হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র হক র র ব পর ত এক ভ ত ইসল ম ম লধন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন করে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে সংঘর্ষ
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের তালেবান বাহিনীর মধ্যে আবারো সীমান্তে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। উভয় পক্ষই একে অপরকে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করছে। শনিবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
আফগানিস্তানের স্পিন বোলদাক শহর থেকে শুক্রবার রাতে বাসিন্দারা পালিয়ে যান। এই এলাকাটি দুই দেশের সীমান্তের ২ হাজার৬০০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত।
কান্দাহার শহরের একজন চিকিৎসা কর্মী বিবিসি পশতুকে জানিয়েছেন, স্থানীয় হাসপাতালে চারটি মৃতদেহ আনা হয়েছে। আরো চারজন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানে তিনজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের মধ্যে বিক্ষিপ্ত লড়াই চলছে। অন্যদিকে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারও পাকিস্তানকে দেশের অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছে।
উভয় পক্ষই জানিয়েছে, তারা শুক্রবার রাতভর গুলি বিনিময় করেছে। চার ঘন্টা ধরে চলা এই যুদ্ধের জন্য তারা একে অপরকে দায়ী করেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের মুখপাত্র মোশাররফ জাইদি তালেবানদের ‘বিনা উস্কানিতে গুলি চালানোর’ জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
জাইদি বিবৃতিতে বলেছেন, “আমাদের সশস্ত্র বাহিনী তাৎক্ষণিক, উপযুক্ত এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। পাকিস্তান তার আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ সতর্ক ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এদিকে, একজন তালেবান মুখপাত্র বলেছেন, পাকিস্তান ‘আবারো আক্রমণ শুরু করেছে।’ এ কারণে তারা ‘প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হয়েছে।’
সীমান্তের আফগান দিকের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে গুলি বিনিময় শুরু হয়।
এলাকা থেকে প্রাপ্ত ফুটেজে দেখা গেছে, বিপুল সংখ্যক আফগান পায়ে হেঁটে এবং যানবাহনে পালিয়ে যাচ্ছে।
কান্দাহারের তথ্য বিভাগের প্রধান আলী মোহাম্মদ হকমাল জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বাহিনী ‘হালকা ও ভারী কামান’ দিয়ে আক্রমণ করেছে এবং বেসামরিক বাড়িঘর মর্টার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ