জাপান অভিযোগ করেছে, ওকিনাওয়া দ্বীপের কাছে আন্তর্জাতিক জলসীমায় দুটি পৃথক ঘটনার সময় চীনা যুদ্ধবিমানগুলো তাদের বিমানকে এফসি রাডারের (ফায়ার কন্ট্রোল রাডার) নিশানা বানিয়েছে। খবর আল-জাজিরার।

‘এফসি রাডারের নিশানা করেছে’ বলতে বোঝায় যে, একটি রাডার সিস্টেম কোনো বিমানকে অত্যন্ত নির্ভুলভাবে শনাক্ত ও অনুসরণ করছে এবং সেটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য প্রয়োজনীয় ডেটা সরবরাহ করছে।

আরো পড়ুন:

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত জাপানি সেনাদের দেহাবশেষ পাঠানো হলো দেশে

তাইওয়ান ইস্যুতে বিদেশি হস্তক্ষেপ ‘চূর্ণ’ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি চীনের

রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি বলেন, “টোকিও দুটি ঘটনার ‘তীব্র প্রতিবাদ’ জানিয়েছে এবং ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোরভাবে সতর্ক করছে।” 

তিনি বলেন, ‘এফসি রাডারের নিশানা করা একটি বিপজ্জনক কাজ, যা নিরাপদ বিমান উড্ডয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সীমা অতিক্রম করেছে।

চীনের তরফ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

এফসি রাডারের নিশানা করার একটি সামরিক বিমানের সবচেয়ে হুমকিমূলক পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি, কারণ এটি সম্ভাব্য হামলার ইঙ্গিত দেয়, লক্ষ্যবস্তু বিমানকে সরে যাওয়ার পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে।

জাপান এবং চীন উভয়ের দাবি করা বিতর্কিত ভূখণ্ডের কাছাকাছি অবস্থিত দ্বীপপুঞ্জে এই সংঘর্ষগুলো কয়েক বছরের মধ্যে দেশ দুটির বিমান বাহিনীর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সংঘর্ষ।

গত মাসে চীন ও জাপানের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির একটি মন্তব্যকে ঘিরে। নভেম্বরের শুরুতে পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “চীন যদি তাইওয়ানে আক্রমণ চালায়, তাহলে তা জাপানের নিরাপত্তার জন্য একটি হুমকি এবং জাপান সামরিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।” 

বেইজিং তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে এবং দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য শক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনাও বাদ দেয়নি।

গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে বেইজিং নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি এবং দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য শক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনাও বাদ দেয়নি। দ্বীপ রাষ্ট্রটি জাপানের পশ্চিমতম ইয়োনাগুনি দ্বীপ থেকে মাত্র ১১০ কিলোমিটার (৬৮.

৪ মাইল) দূরে অবস্থিত।

যু্ক্তরাষ্ট্রের বাইরে মার্কিন বাহিনীর সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি রয়েছে জাপানে। ওকিনাওয়া দ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের ৩২টি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে।

চীনের রাডার তাক করা নিয়ে জাপানের দাবির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এক্স-পোস্টে বলেন, “এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।”

সূত্র এবং গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চীন বৃহস্পতিবার পূর্ব এশিয়ার জলসীমায় বিপুল সংখ্যক নৌ ও উপকূলরক্ষী জাহাজ মোতায়েন করেছে। রয়টার্স জানিয়েছে যে, এক পর্যায়ে নৌকাগুলোর সংখ্যা ১০০টিরও বেশি ছিল।

তাইওয়ানের সরকার চীনের এই কর্মকাণ্ডকে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছে। জাপান বলেছে যে, তারা চীনা কার্যকলাপ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

রবিবার তাইওয়ানের কোস্টগার্ড জানায়, তারা তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যরেখার পশ্চিম দিকে তিনটি চীনা সামুদ্রিক নিরাপত্তা জাহাজের মহড়া পর্যবেক্ষণ করছে, তবে তাইওয়ানের আশেপাশের জলসীমার পরিস্থিতি বর্তমানে ‘স্বাভাবিক’ বলে জানিয়েছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, অনুসন্ধান ও উদ্ধার মহড়া তাইওয়ান প্রণালীর কেন্দ্রীয় জলসীমায় চলছে। দুর্ঘটনা ঘটে এমন এলাকাগুলোতে চীনা নৌবাহিনী টহল দিচ্ছে।

তাইওয়ানের কোস্টগার্ড বলছে,  চীন তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা কথা’ বলছে, যার লক্ষ্য তাইওয়ানকে হয়রানি করা ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালানো।

চীন তাইওয়ান প্রণালীর উপর নিজেদের সার্বভৌমত্ব দাবি করে এবং এটিকে নিজেদের অভ্যন্তরীণ জলসীমা মনে করে, কিন্তু  যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান ও অন্যান্য দেশ এটিকে আন্তর্জাতিক জলপথ হিসেবে গণ্য করে।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক তর ষ ট র র জন য ত ইওয জলস ম

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন যত বিলম্ব হবে, শঙ্কা তত বাড়বে: মান্না

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন আগে বলেছিল, চলতি মাসের ৭-৮ তারিখের দিকে তফসিল ঘোষণা করা হবে। তারপর শোনা গেল, ১১ তারিখ তফসিল ঘোষণা হবে। নির্বাচন কমিশন এখন গণমাধ্যমে বলছে, নির্বাচনের তারিখ নিয়ে কোনো কথা বলবেন না। আমরা বলেছি, রোজার আগে নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচন যত বিলম্ব হবে, শঙ্কা তত বাড়বে।’’

রবিবার (৭ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রামে নাগরিক ঐক্যের জেলা কার্যালয় উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘‘দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জোটে বেগম জিয়ার অসাধারণ অবদান ছিল। তিনি অনেক কষ্ট করেছেন, অনেক নির্যাতন সহ্য করেছেন। আমরা চাই তিনি নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় থাকুন। তার স্বাস্থ্য বিষয়ে সবার মাঝে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমরা আশা করি, তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং নির্বাচন সঠিক সময়ে হবে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘গত ১৫ বছরের লড়াইয়ে আমাদের সঙ্গে বিএনপিসহ অন্যান্য দল ছিল। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে, আলাপ-আলোচনা চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কারো সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতা গড়ে ওঠেনি। আমরা এককভাবে কিছু করতে চাই না।’’

ঢাকা/সৈকত/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ