বায়তুল মোকাররমের সৌন্দর্যবর্ধনে ব্যয় হবে ১৯৯ কোটি টাকা
Published: 7th, December 2025 GMT
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সৌন্দর্যবর্ধন ও আধুনিকায়নের জন্য ১৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন একটি প্রকল্প শুরু হচ্ছে। মসজিদের উন্নয়নের ইতিহাসে যা সবচেয়ে বড় উদ্যোগ।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) বায়তুল মোকাররমের উন্নয়ন ও সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এ কথা জানান। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে এই বিষয়ে ব্রিফিং করেন তিনি।
তিনি বলেন, “জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের মূল কাঠামো অক্ষুণ্ণ রেখে অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যবর্ধন, আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা, বহিরঙ্গন আচ্ছাদন, অফিস ভবন ও মিনার নির্মাণসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা দ্রুত সময়ে প্রকল্পটি কার্যকর করতে চাই।”
উপদেষ্টা আরো বলেন, “সরকার ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় মসজিদটিতে ইবাদতের জন্য সর্বোচ্চ সুযোগ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য সবার সহযোগিতা এবং সচেতন অংশগ্রহণ অপরিহার্য। মসজিদের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং নিজ দায়িত্বে নোংরা না ফেলা, ডাস্টবিন ব্যবহার করা, টয়লেট ব্যবহারে যত্নশীল থাকা এসব বিষয়ে সবার দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশিত।”
এই প্রকল্পের মাধ্যমে বায়তুল মোকাররম কেবল একটি আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসেবে নয়, বরং আধুনিক ও সুন্দরায়িত স্থাপত্যের নিদর্শন হিসেবে আরও পরিচিতি পাবে জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর মসজিদটি দেশের দর্শনার্থী ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।”
ঢাকা/এএএম/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প স ন দর মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
দখলদারত্বের মাধ্যমে ভোট আদায়ের চেষ্টা করলে উভয়েই পরাজিত হবে: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামী নির্বাচনে যদি কেউ গায়ের জোরে দখলদারত্ব দেখিয়ে ভোট নেওয়ার চেষ্টা করে অথবা ধর্মের নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে ভোট আদায় করতে চায়, তাহলে উভয়েই পরাজিত হবে।
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী সংস্কৃতিতে অতীতে দেখা গেছে, ভোটকেন্দ্র দখল, জবরদস্তি, আধিপত্যমূলক ও ফ্যাসিবাদী আচরণ। উদ্বেগের বিষয় হলো, এ আচরণগুলো আবার শুরু হয়ে গেছে।’
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এনসিপি, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ নামে একটি রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই জোটের প্রার্থীরা একই প্রতীকে নির্বাচন করবেন বলেও প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন তিনি। এ সময় এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, ঘোষিত ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ শুধু নির্বাচনী জোট নয়, বরং এটি একটি রাজনৈতিক জোট। এই জোট জাতীয় মর্যাদা ও অর্থনৈতিক মুক্তির প্রশ্নকে সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
দেশে নতুন করে ‘ফ্যাসিবাদী আচরণ’ শুরু হয়েছে অভিযোগ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদকে (আসাদুজ্জামান ফুয়াদ) বরিশালে নির্বাচনী প্রচারণার সময় হেনস্তা করা হয়েছে, তাঁর কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্মীপুরে আ স ম আবদুর রবের নির্বাচনী এলাকায় তাঁর স্ত্রী তানিয়া রবের প্রচারণায়ও বাধা দেওয়া হয়েছে, এমনকি অফিস ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের যে প্রত্যাশা, যেখানে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেবে এবং মত প্রকাশ করবে, সেই পরিবেশেরই যে ব্যত্যয় ঘটছে, তার প্রমাণ দেখা যাচ্ছে।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ভিন্নমতকে দমনের যে অহংকার, গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই অহংকারের পতন ঘটেছিল। আগামী নির্বাচনে যদি কেউ গায়ের জোরে দখলদারত্ব দেখিয়ে ভোট নেওয়ার চেষ্টা করে, অথবা ধর্মের নামে মানুষকে প্রতারণা করে ভোট আদায় করতে চায়—তাহলে উভয়েই পরাজিত হবে।
২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, তা বাস্তবায়নে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চললেও ‘ঐক্যমত কমিশনের প্রক্রিয়া’ বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এনসিপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা পরিবর্তনের পক্ষে এবং গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সফল করতে চাই, তারা আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এই ঐক্যপ্রক্রিয়া এখন শুরু হলো, এটি চলমান থাকবে। পুরোনো ধাঁচের রাজনীতিতে ফিরে যাওয়ার যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, সেই হতাশা কাটাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
মানুষ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রত্যাশায়এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রকে নতুন পথে নেওয়ার যে স্বপ্ন দেখা হয়েছিল, নানা কারণে তা ব্যাহত হয়েছে। বিশেষ করে তরুণদের বহু প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা নতুন রাজনীতি করতে এসেছি, আমরাও মানুষের আচরণে কষ্ট পেয়েছি, কখনো দিশা হারিয়েছি। আমাদের ভুলত্রুটিও ছিল। কিন্তু একটা বিষয় আমরা স্পষ্ট দেখেছি—পুরোনো রাজনীতির প্রতি মানুষের গভীর হতাশা। মানুষ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রত্যাশায় আছে।’
মজিবুর রহমান বলেন, পুরোনো রাজনীতির সহিংসতা, পরস্পরের প্রতি বিষোদ্গার, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, মিছিলে ভাঙচুর, সন্ত্রাস—এসব রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে নতুন রাজনৈতিক জোট কাজ করবে। এই জোটে আরও রাজনৈতিক দল যুক্ত হতে পারে। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম বলেন, বাংলাদেশের দীর্ঘ ৫০-৫৫ বছরের ইতিহাসে সবচাইতে বড় মূল্য পরিশোধ করা সত্ত্বেও জনগণের আকাঙ্ক্ষিত অর্জন পূরণ হয়নি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যাঁরা যুক্ত আছেন, তাঁদের ব্যর্থ থাকার কোনো অধিকার নেই, বরং তাঁদের সফল হতেই হবে। এই ব্যর্থতা থেকে মুক্তি এবং সফল হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থেকেই নতুন রাজনৈতিক জোট গঠন করা হয়েছে।
আগামীকাল আরকেটি রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশজাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় পার্টির (জাপা) একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বে আগামীকাল সোমবার নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে। জোটের মুখপাত্র করা হচ্ছে জাপা মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে। এই জোটের সম্ভাব্য নাম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক জোট’।