শ্রীলঙ্কার সরকার দেশটিতে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে ইতিমধ্যেই বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের নতুন সতর্কতা জারি করেছে। রবিবারের (৭ ডিসেম্বর) সর্বশেষ তথ্যানুসারে, দেশটিতে সাম্প্রতিক বন্যা-ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬১৮ জনে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে, এশিয়ার অন্যান্য অংশে সাম্প্রতিক বন্যা-ভূমিধসে নিহতের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা ১,৮০০ ছাড়িয়ে গেছে। খবর আল-জাজিরার। 

আরো পড়ুন:

দেশ পুনর্গঠনে ‘৩০ কোটি’ রুপি দিল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট

শ্রীলঙ্কায় ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল পাঠাবে বাংলাদেশ

রবিবার (৯ ডিসেম্বর) শ্রীলঙ্কার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) সতর্ক করে বলেছে, মৌসুমি ঝড় আরো বৃষ্টিপাত নিয়ে আসছে এবং এর ফলে মধ্য পার্বত্য অঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিম মধ্যভূমিসহ পাহাড়ি ঢালগুলোতে ভূমিধস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। 

গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়াহের কারণে সৃষ্ট ভূমিধস ও জলবায়ু সংকট-জনিত বন্যায় ২০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে (দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ), যা দ্বীপ রাষ্ট্রটির ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

রবিবার, শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রস্থলে ভূমিধসের কারণে বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোতে সাহায্য পাঠানোর জন্য হেলিকপ্টার ও বিমান ব্যবহার করা হচ্ছে। দেশটির বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রবিবার তারা মিয়ানমার থেকে বিমান ভর্তি ত্রাণ সামগ্রী পেয়েছে, যা বিদেশি সাহায্যের সর্বশেষ চালান।

শ্রীলঙ্কান সরকার ৬১৮ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে শুধু চা-বাগান অধ্যুষিত মধ্যাঞ্চলেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৬৪ জন। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ২০৯ জন।

ডিএমসি জানিয়েছে, রবিবার নাগাদ দ্বীপজুড়ে বন্যার পানি কমে যাওয়ার ফলে সরকারি শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ২৫ হাজার থেকে কমে ১ লাখে দাঁড়িয়েছে।

ডিএমসি আরো জানিয়েছে, ৭৫ হাজারের বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রায় ৫ হাজার বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।

দেশটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মতে, পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনে ৭ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) জানায়, তারা পুনর্গঠনে সহায়তার জন্য শ্রীলঙ্কার অতিরিক্ত ২০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুরোধ বিবেচনা করছে।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিশানায়েকে শুক্রবার সংসদে বলেন, “শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে পুনরুদ্ধার করেছে, কিন্তু তা সর্বশেষ ধাক্কা সহ্য করার মতো শক্তিশালী নয়।”

আল-জাজিরা জানিয়েছে, এশিয়ার অন্যান্য স্থানে যেমন- ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের সুমাত্রা দ্বীপে সাম্প্রতিক বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ৯০৮ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং ৪১০ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এই অঞ্চলে আট লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

সুমাত্রার অনেক বাসিন্দা এখনও ২০০৪ সালের সুনামির আতঙ্কে ভুগছেন, যা আচেহকে ধ্বংস করে দিয়েছিল।  সেসময় সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে সমুদ্রগর্ভে সংঘটিত ভূমিকম্প যে সুনামির অবতারণা ঘটায়, তাতে ইন্দোনেশিয়া থেকে সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকা পর্যন্ত দুই লাখ ত্রিশ হাজার মানুষ প্রাণ হারান। এর মধ্যে শুধু ইন্দোনেশিয়ার আচেতেই ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। 

সাম্প্রতিক সময়ে বন্যায় থাইল্যান্ডেও কমপক্ষে ২৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া মালয়েশিয়ায় দুজন এবং ভিয়েতনামে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসে দুজনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জন র ম ত য ভ ম ধস রব ব র

এছাড়াও পড়ুন:

এশিয়ার ৫ দেশে বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৫০

এশিয়ার পাঁচটি দেশে বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষকে সহায়তা করার জন্য উদ্ধারকারী দল এবং স্বেচ্ছাসেবকরা লড়াই করে যাচ্ছেন। শনিবার ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৭৫০ জন ছাড়িয়ে গেছে।

আচেহ প্রদেশের সুমাত্রা দ্বীপ থেকে শনিবারের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ইন্দোনেশিয়ায় কমপক্ষে ৯০৮ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে এবং ৪১০ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এই অঞ্চলে আট লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

শ্রীলঙ্কায় সরকার ৬০৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। বন্যা ও ভূমিধসের কারণে আরো ২১৪ জন নিখোঁজ রয়েছে। সেই হিসেবে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বন্যায় থাইল্যান্ডেও কমপক্ষে ২৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। এছাড়া মালয়েশিয়ায় দুজন এবং ভিয়েতনামে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আচেহ প্রদেশে শনিবার পর্যন্ত ‘খুব ভারী বৃষ্টিপাত’ হতে পারে, উত্তর ও পশ্চিম সুমাত্রাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

আচেহের গভর্নর মুজাকির মানাফ জানিয়েছেন, উদ্ধারকারী দলগুলো এখনো ‘কোমর-গভীর’ কাদায় মৃতদেহ অনুসন্ধান করছে। দুর্ভিক্ষ এখন প্রত্যন্ত ও দুর্গম গ্রামগুলোতে সবচেয়ে গুরুতর হুমকি হয়ে উঠছে এখন।

তিনি বলেন, “অনেক মানুষের মৌলিক জিনিসপত্র প্রয়োজন। আচেহের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক এলাকায় এখনো যাওয়া সম্ভব হয়নি উদ্ধারকারীদের।”

শ্রীলঙ্কায় ২০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্মকর্তারা শুক্রবার ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার ফলে নতুন ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।

শ্রীলঙ্কার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) জানিয়েছে, ৭১ হাজারেরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার বাড়ি গত সপ্তাহের বন্যা ও ভূমিধসে ধ্বংস হয়ে গেছে। 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ৭০ বছর বয়সী নারীকে তাড়া করে মারল ইসরায়েলি ড্রোন
  • এশিয়ার ৫ দেশে বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৫০
  • দক্ষিণ আফ্রিকায় হোস্টেলে বন্দুক হামলা, নিহত ১১
  • আজ শত্রুমুক্ত ফেনীতে প্রথম উড়েছিল লাল সবুজের পতাকা
  • চুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা ১৭ জানুয়ারি, জেনে নিন আবেদনে যোগ্যতা