নির্ধারিত দামে পাওয়া যায় না রান্নার গ্যাস এলপিজি
Published: 7th, December 2025 GMT
বেসরকারি খাতের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম প্রতি মাসে সমন্বয় করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। তবে ভোক্তা পর্যায়ে সমন্বয় করা দামে এলপিজি পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ আছে। ভোক্তাদের ভাষ্য, ১২ কেজির সিলিন্ডার কিনতে ১০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি দিতে হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়ও বিভিন্ন দামে বিক্রি হয় এলপিজি।
গত মঙ্গলবার ডিসেম্বরের জন্য দাম ঘোষণা করেছে বিইআরসি। এতে ১২ কেজি সিলিন্ডারে এলপিজির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২৫৩ টাকা। গত নভেম্বর মাসে দাম ছিল ১ হাজার ২১৫ টাকা। সংস্থাটি প্রতি মাসেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে।
এলপিজির ১২ কেজি সিলিন্ডার সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় গৃহস্থালির কাজে। ঢাকা থেকে পৌনে তিন শ কিলোমিটার দূরের দ্বীপজেলা ভোলার বোরহানউদ্দিন পৌরসভায় থাকেন কেয়া হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রতি মাসেই ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বাড়তি দিতে হয়। সবশেষ নভেম্বরে ১২ কেজির সিলিন্ডার কিনেছেন ১ হাজার ৩০০ টাকায়। বাসায় পৌঁছাতে বাড়তি খরচ করতে হয় আরও ৫০ টাকা।
বিইআরসি তার আইনি দায়িত্ব পালন করছে না। আইনে যেসব ক্ষমতা দেওয়া আছে, তার প্রয়োগ করে না। ভোক্তাস্বার্থও সংরক্ষিত হচ্ছে না। এম শামসুল আলম, জ্বালানি উপদেষ্টা, ক্যাবঢাকার কাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল আহমেদও বললেন অভিন্ন কথা। তাঁর ভাষ্য, নভেম্বরে ১২ কেজির এলপিজি কিনেছেন ১ হাজার ৪৫০ টাকায়। আর বাসায় পৌঁছানোর জন্য দিতে হয়েছে ৫০ টাকা। এ মাসে দাম বাড়ার পর আরও ৫০ টাকা খরচ বাড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।
অবশ্য ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা কামরুন্নেছা রুহী বলেন, গত মাসে ১২ কেজির এলপিজি তিনি কিনেছেন ১ হাজার ৩০০ টাকায়। অর্থাৎ কামরুন্নেছার চেয়ে ফয়সালকে দেড় শ টাকা বেশি দিতে হয়েছে।
ভোক্তা অধিকারের অভিযান চালানো উচিত
২০২১ সালের এপ্রিল থেকে প্রতি মাসে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে বিইআরসি। টানা দুই বছর দাম নির্ধারণ নিয়ে বিরোধ ছিল পরিবেশক ও এলপিজি কোম্পানির মধ্যে। বিইআরসি পরিবেশক পর্যায়ে দাম নির্ধারণ করে দিলেও সেই দামে কোম্পানির সরবরাহ করত না। এ অভিযোগের ভিত্তিতে দাম নির্ধারণের সূত্রে পরিবর্তন এনে কোম্পানি পর্যায়ে আরও কিছু খরচ যুক্ত করা হয়। এরপর কোম্পানি থেকে বাড়তি দামে সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
সারা দেশে এলপিজি সিলিন্ডার পরিবেশক সমিতির সভাপতি সেলিম খান প্রথম আলোকে বলেন, পরিবেশক পর্যন্ত দাম এখন ঠিকই আছে। তাই বাড়তি দামে বিক্রির সুযোগ নেই। তবে খুচরা বিক্রেতারা বেশি নিচ্ছেন। এটি বন্ধে ভোক্তা অধিকারের অভিযান চালানো উচিত।
নির্ধারিত দামে এলপিজি বিক্রির জন্য বাজার নজরদারির সামর্থ্য নেই বিইআরসির। বিভিন্ন সময় তারা জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়ে নজরদারির অনুরোধ করেছে। ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরও মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করে।
লাইসেন্স না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, জানুয়ারির মধ্যে সব পরিবেশককে বিইআরসির লাইসেন্স নিতে বলা হয়েছে। এরপর খুচরা বিক্রেতাদের লাইসেন্সের আওতায় আনা হবে। এতে জবাবদিহি নিশ্চিত করা যাবে।
‘বিইআরসি দায়িত্ব পালন করছে না’
বিইআরসির নতুন দর অনুযায়ী, বেসরকারি এলপিজির মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক/ভ্যাট) দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ১০৪ টাকা ৪১ পয়সা। গত মাসে তা ছিল ১০১ টাকা ২৪ পয়সা; অর্থাৎ এ মাসে দাম কেজিতে বেড়েছে ৩ টাকা ১৭ পয়সা।
সরকারি কোম্পানির সরবরাহ করা এলপিজির সাড়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৮২৫ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। অধিকাংশ ভোক্তা অবশ্য এর নাগাল পায় না। বাজারে চাহিদার ৯৯ শতাংশের বেশি এলপিজি সরবরাহ করে বেসরকারি খাত।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, বিইআরসি তার আইনি দায়িত্ব পালন করছে না। আইনে যেসব ক্ষমতা দেওয়া আছে, তার প্রয়োগ করে না। ভোক্তা স্বার্থও সংরক্ষিত হচ্ছে না। এ কারণে রাষ্ট্রপতির কাছে বর্তমান কমিশনের অপসারণ দাবি করেছে ক্যাব।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক ব ইআরস র ১২ ক জ র এলপ জ র সরবর হ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যৌনকর্মীদের কাছে কনডম নেই, এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি
যশোরের বাবুবাজার যৌনপল্লিতে প্রায় ১৫ বছর ধরে আছেন যৌনকর্মী আশা (ছদ্মনাম)। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কনডমের ব্যবহার সম্পর্কে তাঁর স্পষ্ট ধারণা আছে। তবে ধারণা থাকলে কী হবে, সেই সুরক্ষাসামগ্রী এখন আর বিনা পয়সায় পাচ্ছেন না তিনি। বছর দুয়েক হলো এ সমস্যা। এখন কনডমের সংকট চরমে, জানান আশা।
যৌনপল্লিতে এখন খদ্দের অনেক কম বলে জানান তিনি। এরপর শুরু হয়েছে কনডমের সংকট। আশার কথা, ‘নিজির টাকায় কনডম কিনতি হয় বাইরের দোকান থেইকে। অনেক দাম দিতি হয়। কাস্টমারের বেশির ভাগই কনডম আনে না। আর আমার ঘরে কনডম না থাকলি কাস্টমার চলি যায়। কী আর করব, খাবার জোটাই মুশকিল। এখন কনডম কিনতি খরচ বেশি।’
খদ্দেরদের কাছে যদি কনডম না থাকে তখন এটা ছাড়াই যৌনকাজ করতে হয় বলে জানান আশা।
আশার মতো দেশের লক্ষাধিক যৌনকর্মী সুরক্ষা বা কনডমের স্বল্পতায় ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। এদিকে দেশে প্রতিবছর যৌনবাহিত রোগ এইডসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এই বাবুবাজার যৌনপল্লিতেই চলতি বছর একাধিক যৌনরোগবাহিত নারী যৌনকর্মীর সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার এক স্বাস্থ্যকর্মী।
গত সোমবার (১ ডিসেম্বর) পালিত হয়েছে বিশ্ব এইডস দিবস। চলতি বছর দিনটির প্রতিপাদ্য ছিল, ‘চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে, নতুনভাবে এইডস প্রতিরোধ গড়ে তোলা।’
নতুনভাবে এইডসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা বললেও, সুরক্ষাসামগ্রীর অভাব এই রোগের ঝুঁকিতে থাকা লক্ষাধিক যৌনকর্মীকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। যৌনকর্মী, বিভিন্ন সংগঠন এবং বিশেষজ্ঞদের কথা, যৌনপল্লি এবং ভাসমান যৌনকর্মীদের সুরক্ষাসামগ্রী দেওয়ার কাজটি মূলত বেসরকারি সংগঠনগুলোই করত। মূলত এইচআইভি থেকে সুরক্ষায় এই কনডম দেওয়া হতো। এখন এ খাতে বিশেষত বৈদেশিক সহযোগিতা একেবারেই কমে গেছে। আর তাতে বাড়ছে এই নারীদের ঝুঁকি।
বাড়ছে এইডস রোগ
চলতি বছর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ১ হাজার ৮৯১ জন এইডস রোগের ভাইরাস এইচআইভিতে সংক্রমিত হয়েছেন। একই সময়ে দেশে এইডসে মারা গেছেন ২১৯ জন। গতকাল বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস ও এসটিডি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানা যায়।
এ সময় আরও বলা হয়, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ বছর ২১৭ জন এইচআইভিতে সংক্রমিত হয়েছেন। আর দেশে এখন এইচআইভিতে সংক্রমিত ব্যক্তির মোট অনুমিত সংখ্যা ১৭ হাজার ৪৮০। বাংলাদেশে ১৯৮৯ সালে প্রথম এইচআইভি (এইডসের ভাইরাস) পজিটিভ ব্যক্তি শনাক্ত হন। এরপর প্রতিবছর এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তি পাওয়া গেছে। দু-এক বছর এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা কমে গেলেও বেড়ে যাওয়ার প্রবণতাই ছিল বেশি। গত বছর (২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত) ১ হাজার ৪৩৮ জন নতুন করে সংক্রমিত হন। এ সময় এইডসে মারা যান ১৯৫ জন।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত এক বছরে আক্রান্তদের মধ্যে ৫২ শতাংশের বেশি বিবাহিত। আক্রান্তদের মধ্যে ৮১ শতাংশ পুরুষ।
দেশের সবচেয়ে বড় যৌনপল্লি রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায়। সেখানকার যৌনকর্মী মালিহা (ছদ্মনাম) দুই বছর ধরে এ পাড়ায় আছেন। এখানে আসার পর বিনা মূল্যে কনডম পেলেও এখন একেবারেই সেই সরবরাহ নেই বলে জানান তিনি।যৌন রোগ বাড়ছে
যশোরের বাবুবাজার যৌনপল্লিতে পিএসটিসি নামের একটি সংগঠন যৌনকর্মীদের স্বাস্থ্য সহায়তা দেয়। তবে তাঁদের কনডম দেওয়ার কর্মসূচি এখন আর নেই। এ সংগঠনের কর্মী সালমা খাতুন জানিয়েছেন, যৌনকর্মীদের মধ্যে কনডম বিতরণের কর্মসূচি এখন প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নানা ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এতে মেয়েরা নানা রোগ এবং গর্ভধারণের শিকার হচ্ছে।
চলতি বছর এ যৌনপল্লিতে ছয়জন নারী সিফিলিসে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান সালমা। গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের সংখ্যা ছয়। তিনি বলেন, ‘আগের বছর এ রকম কেস পাইনি। তবে এ বছর রোগ বাড়তিছে মেয়েদের মধ্যে।’
আগে পাড়াগুলোতে এনজিওদের কাজ ছিল। এখন তো কোনো কাজই নেই। মেয়েগুলো অসহায়। কনডম না থাকার কারণে বড় ঝুঁকি আছে।মোর্চা সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্কের সভাপতি নূর নাহারদেশের সবচেয়ে বড় যৌনপল্লি রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায়। সেখানকার যৌনকর্মী মালিহা (ছদ্মনাম) দুই বছর ধরে এ পাড়ায় আছেন। এখানে আসার পর বিনা মূল্যে কনডম পেলেও এখন একেবারেই সেই সরবরাহ নেই বলে জানান তিনি।
দেশের যৌনকর্মীদের সংগঠনগুলোর মোর্চা সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্কের হিসাব অনুযায়ী, দেশের ১১টি যৌনপল্লিতে ৪ হাজার ৫৩১ জন যৌনকর্মী আছেন। নেটওয়ার্কের সভাপতি নূর নাহার (রানু)। প্রথম আলোকে বলছিলেন, ‘আগে পাড়াগুলোতে এনজিওদের কাজ ছিল। এখন তো কোনো কাজই নেই। মেয়েগুলো অসহায়। কনডম না থাকার কারণে বড় ঝুঁকি আছে।’
ভাসমান যৌনকর্মীদের নিয়ে বড় ঝুঁকি
সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি যৌনকর্মী আছে ভাসমান। কনডমের সরবরাহ কমে যাওয়ায় যৌনপল্লিগুলোর চেয়ে এই ভাসমান যৌনকর্মীরা অনেক বেশি ঝুঁকিতে আছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কনডম সরবরাহের হার এখন অনেক কমে গেছে। এখন হাতে গোনা কিছু প্রতিষ্ঠান সরবরাহ দেয়। আগে যেখানে মেয়েরা ১০টি কনডম পেত, সেখানে এখন বড়জোর ৩টি পায়।কল্যাণময়ী নারী সংঘের সভাপতি রীনা বেগমরাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় যৌনকাজ করেন মর্জিনা (ছদ্মনাম)। তিনি বলছিলেন, ‘এখন চেয়েচিন্তে কনডম নেওয়া লাগে। রাস্তার লোক তো কনডম রাহে না। আমাদেরই রাকতে অয়। কিন্তু আমরা কিনে কিনে কত দিন চালাব?’
ঢাকার ভাসমান যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করে কল্যাণময়ী নারী সংঘ। এ সংগঠনের সভাপতি রীনা বেগম বলছিলেন, ‘কনডম সরবরাহের হার এখন অনেক কমে গেছে। এখন হাতে গোনা কিছু প্রতিষ্ঠান সরবরাহ দেয়। আগে যেখানে মেয়েরা ১০টি কনডম পেত, সেখানে এখন বড়জোর ৩টি পায়।’
এইচআইভি থেকে সুরক্ষায় কমছে সহায়তা
জাতীয় পর্যায়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সামগ্রিকভাবে এখনো নিম্ন বিস্তৃতির দেশ হলেও গত কয়েক বছরে নতুন সংক্রমণ বাড়ছে। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী—যার একটি অংশ যৌনকর্মী ও তাঁদের খদ্দের—তাঁদের মধ্যে সুরক্ষাহীন যৌন সম্পর্কই সংক্রমণ বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এইচআইভি বাড়লেও এ খাতে দেশে দাতাদের সহায়তা কমছে ব্যাপক হারে। এ চিত্র শুধু বাংলাদেশের না।
বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে ইউএনএইডসের ‘ওভারকামিং ডিসরাপশন: ট্রান্সফরমিং দ্য এইডস রেসপন্স’ নামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক স্তরে এইচআইভি খাতে সহায়তা কমে যাওয়ায় মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। জাতীয় এইডস ব্যয় মূল্যায়ন সম্পন্ন করা আটটি দেশের (বাংলাদেশ, বেলিজ, বেনিন, কোত দিভোয়ার, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, পাপুয়া নিউগিনি) তথ্য বলছে—বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন এ খাতে ৯৯ শতাংশ অর্থসহায়তা পায় দাতাদের কাছে থেকে। দেশের নিজস্ব উৎস থেকে পাওয়া সহায়তা মোট ব্যয়ের শূন্য দশমিক ১ শতাংশেরও কম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক জুবাইদা নাসরিন বলেন, ‘যৌনপল্লিগুলোতে কনডম সরবরাহ কমে গেছে, তা জানি। এর মূল কারণ ইউএসএইডসহ দাতারা এ খাতে যে অর্থ দিতেন তা কমে গেছে। আমরা কিছু দাতা সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি এ খাতে এগিয়ে আসতে।’
সরকারের পক্ষ থেকে কনডম বা লুব্রিকেন্টের যে সরবরাহ তাতে ঘাটতি নেই। যৌনপল্লি বা ভাসমানদের মধ্যে কনডমের সংকটের কথাটা শুনলাম।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এইচআইভি/এসটিডি) মো. খায়রুজ্জমানস্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়, দেশের ৩১টি ড্রপ-ইন সেন্টার থেকে নিয়মিত কনডমসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হয়। তারা যৌনপল্লিতে সরবরাহের কাজ করে না। এটা কখনোই করা হতো না বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এইচআইভি/এসটিডি) মো. খায়রুজ্জমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কনডম বা লুব্রিকেন্টের যে সরবরাহ তাতে ঘাটতি নেই। যৌনপল্লি বা ভাসমানদের মধ্যে কনডমের সংকটের কথাটা শুনলাম।
এইচআইভি ও এইডস প্রতিরোধে বৈশ্বিক সহায়তা কমে যাওয়ার কারণেই যৌনকর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি অনেক বেশি উপক্ষিত এখন। এ ক্ষেত্রে সরকারের মনোযোগী হওয়াটা দরকার বলে মনে করেন গবেষক ডি এম অহিদুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এইচআইভি–সংক্রান্ত কাজে গুরুত্ব ও অর্থায়ন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তরুণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন সংক্রমণ বাড়ায় বাংলাদেশকে তার প্রতিরোধ ও চিকিৎসা কৌশল পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।